National News

মৃত্যুদণ্ডে ১০০০, যাবজ্জীবনে ৫০০ পয়েন্ট, ধর্ষণ মামলার নিষ্পত্তিতে রেকর্ড মধ্যপ্রদেশের

এখানেই শেষ নয়। ধর্ষণ ও কোনও কোনও ক্ষেত্রে ধর্ষণের পর খুনের মামলায় সাজা ঘোষণাতেও গোটা দেশে রেকর্ড গড়েছে মধ্যপ্রদেশের আদালতগুলি। গত ৮ মাসে ওই ধরনের মামলায় ১৩টি মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ওই রাজ্যের আদালতগুলি। আর একটি ক্ষেত্রে সেই মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছে মধ্যপ্রদেশের হাইকোর্ট।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ভোপাল শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৮ ১৯:২৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

এমনও হয় তা হলে ভারতে!

Advertisement

একটি ধর্ষণের মামলার চার্জশিট দাখিল হওয়ার সাত ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্ত একটি ১৪ বছরের কিশোরকে দু’বছরের সাজা দিল মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীর একটি জুভেনাইল কোর্ট। এত কম সময়ে ধর্ষণের মামলায় সাজা ঘোষণার রেকর্ড আর নেই এ দেশে। মন্দসৌরে চার্জশিট দাখিলের পর দু’মাসেরও কম সময়ে সাত বছরের এক বালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের চেষ্টার দায়ে মঙ্গলবার দু’জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে রাজ্যের আরও একটি আদালত।

এখানেই শেষ নয়। ধর্ষণ ও কোনও কোনও ক্ষেত্রে ধর্ষণের পর খুনের মামলায় সাজা ঘোষণাতেও গোটা দেশে রেকর্ড গড়েছে মধ্যপ্রদেশের আদালতগুলি। গত ৮ মাসে ওই ধরনের মামলায় ১৩টি মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ওই রাজ্যের আদালতগুলি। আর একটি ক্ষেত্রে সেই মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছে মধ্যপ্রদেশের হাইকোর্ট। ধর্ষণের মামলার দ্রুত ফয়সলার ক্ষেত্রে গোটা দেশে কার্যত, ব্যতিক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে মধ্যপ্রদেশ।

Advertisement

কী ভাবে এত দ্রুত ধর্ষণের মামলায় সাজা ঘোষণা সম্ভব হচ্ছে মধ্যপ্রদেশে?

রাজ্যের ডাইরেক্টরেট অফ পাবলিক প্রসিকিউশনের এক পদস্থ কর্তা জানাচ্ছেন, ধর্ষণের মামলা আর তাদের দ্রুত নিষ্পত্তির সংখ্যা বাড়ানোর জন্য একটি অভিনব পুরস্কার প্রথা চালু করেছে মধ্যপ্রদেশ সরকার। কড়া শাস্তি ঘোষণার জন্য নিম্ন আদালতগুলির সরকারি আইনজীবীদের পুরস্কৃত করা হচ্ছে অভিনব উপায়ে। মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পক্ষে জোরালো সওয়াল করে জয়ী হলে তাঁদের মামলা-পিছু দেওয়া হচ্ছে এক হাজার পয়েন্ট। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ক্ষেত্রে দেওয়া হচ্ছে ৫০০ পয়েন্ট। আর ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির পক্ষে জোরালো সওয়াল করে জয়ী হওয়ার জন্য ১০০ থেকে ২০০ পয়েন্ট করে দেওয়া হচ্ছে। আর মাসে কেউ ৫০০ পয়েন্টের কম পেলেই তাঁকে সতর্ক করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন- ছাত্রীকে ধর্ষণ, অভিযুক্ত শিক্ষককে নগ্ন করে হাঁটানো হল রাস্তায়​

আরও পড়ুন- ধর্ষককে শনাক্ত করতে এসে চড় কষাল কিশোরী​

ফলে, সরকারি আইনজীবীদের প্রভাবিত করে মামলা লঘু করার উপায় থাকছে না অভিযুক্ত বা তাদের পরিবার, পরিজনদের, এমনটাই জানাচ্ছেন মধ্যপ্রদেশের ডাইরেক্টরেট অফ পাবলিক প্রসিকিউশনের পদস্থ কর্তাটি। তা ছাড়াও, রাজ্যের এক হাজার সরকারি আইনজীবীর ওপরে রোজ নজর রাখার জন্য চালু হয়েছে একটি অ্যাপ। যার নাম- ‘ইপ্রসিকিউশন’। শুধু তাই নয়, কত তাড়াতাড়ি চার্জশিট দাখিল হচ্ছে, সেখানে কোনও গাফিলতি থাকছে কি না, চার্জশিটে অপরাধকে লঘু করে দেখানোর চেষ্টা হয়েছে কি না, তার ওপরেও নিয়মিত কড়া নজর রাখা হচ্ছে।

ধর্ষণের ঘটনার রেকর্ড মধ্যপ্রদেশে

নথিভুক্ত ধর্ষণের ঘটনায় দেশে রেকর্ড গড়েছে মধ্যপ্রদেশ। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি)-র তথ্য বলছে, ২০১৬ সালে দেশে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল ৩৮ হাজার ৯৪৭টি। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটেছিল মধ্যপ্রদেশে, ৪ হাজার ৮৮২টি। শিশু ধর্ষণের ক্ষেত্রেও রেকর্ড গড়েছে মধ্যপ্রদেশ। ২০১৬-য় শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২ হাজার ৪৭৯টি। তার আগের বছরও ধর্ষণের ঘটনার শীর্ষে ছিল মধ্যপ্রদেশ। সে বছর মধ্যপ্রদেশে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল ৪ হাজার ৩৯১টি। গত নভেম্বরে এ দেশে প্রথম মধ্যপ্রদেশ মন্ত্রিসভাই ১২ বছরের কম বয়সীদের ধর্ষণে মৃত্যুদণ্ডের সুপারিশ করেছিল।

তবে নিম্ন আদালতে ধর্ষণের মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি বা মৃত্যুদণ্ডাদেশেই সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করছেন না রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল এস সি ত্রিপাঠি। তাঁর কথায়, ‘‘কারণ, তার পরেও উচ্চতর আদালতে আপিল ও ক্ষমা প্রার্থনা নিয়ে বিচার প্রক্রিয়াকে দীর্ঘ করার সুযোগ থেকেই যাচ্ছে।’’

কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন