—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
স্বামীকে খুনের অভিযোগে প্রেমিকের সঙ্গে গ্রেফতার হলেন স্ত্রী। অভিযোগ, ননদের স্বামীকে নিয়ে সংসার করবেন বলে ছক কষে স্বামীকে হত্যা করেছেন যুবতী। পরিবারের যাতে সন্দেহ না-হয়, সে জন্য স্বামীর নামে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম মোহাম্মদ চমন খান। ৪২ বছরের ওই যুবক আদতে আলিগড়ের বাসিন্দা। কর্মসূত্রে থাকতেন গুজরাতে। স্বামী বাইরে থাকার ‘সুযোগে’ পরকীয়ায় জড়ান ৪০ বছরের খাইরুন্নিসা। তিনি প্রেম করেন ননদের স্বামী মোহাম্মদ আলির সঙ্গে।
গত ইদের ছুটিতে বাড়ি ফেরেন চমন। সেই সময় এক দিন স্ত্রী এবং ভগিনীপতিকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলেন যুবক। অশান্তি শুরু হয় পরিবারে। খাইরুন্নিসা এবং আলি, দু’জনেই পরিবারের কাছে মাফ চেয়ে নিয়েছিলেন। তবে চমন ভগিনীপতিকে বলে দেন, তিনি যেন আর কখনও তাঁদের বাড়িতে না যান। তদন্তকারীদের অনুমান, ওই অপমানের বদলা নিতে এবং যাতে দু’জনে মিলে নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন, সে জন্য চমনকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেন খাইরুন্নিসা এবং আলি।
গত ৯ মে কোয়ার্সি থানায় স্বামীর নামে ‘নিখোঁজ’ ডায়েরি করেছিলেন খাইরুন্নিসা। পুলিশকে তিনি জানান, গত ৬ মে দুপুর ৩টে নাগাদ একটি ফোন পেয়ে স্বামী বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। তার পর থেকে আর তাঁর খোঁজ মিলছে না। চমনের খোঁজ শুরু করে পুলিশ। তদন্তে নেমে পরিবারের সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা। তখনই নিখোঁজ যুবকের স্ত্রীর সঙ্গে ভগিনীপতির পরকীয়ার কথা জানা যায়। আলিকে থানায় ডেকে পাঠানো হয়। টানা জিজ্ঞাসাবাদে ভেঙে পড়েন ওই যুবক। স্বীকার করে নেন বৌদির সঙ্গে যুক্তি করে শ্যালককে খুন করেছেন তিনি।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে আলি এ-ও স্বীকার করেছেন, সে দিন তিনিই ফোন করে চমনকে ডেকেছিলেন। তার পর বাইকে করে তাঁকে নিয়ে যান গৌতম বুদ্ধ নগর জেলার দাদরিতে। সেখানে নির্জন একটা জায়গা দেখে বাইক দাঁড় করান এবং আচমকা হামলা করেন।
ইট দিয়ে মেরে খুন করা হয় চমনকে। তার পর তাঁর দেহ টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল পাশের জঙ্গলে। দাদরি থানার পুলিশের সহযোগিতায় জঙ্গল থেকে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে কোয়ার্সি থানার পুলিশ।
গত শনিবার অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে খুনের মামলায় দু’জনকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৩ (১) (খুন), ২০১ (প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা), ৩১৬ (প্রতারণা) এবং ১২০বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। মৃতের দাদা নাসির বলেন, ‘‘গত ৬ মে একটি ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল ভাই। পরে জানলাম, ফোনটা করেছিল আমার ভগিনীপতি। ও আড্ডা দেওয়ার নাম করে ভাইকে নিয়ে গিয়ে নেশা করায়। ওকে বেহুঁশ করার পরে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে দেয়। ভাইয়ের স্ত্রী-ও খুনে জড়িত। পুলিশের কাছে ও সেটা স্বীকার করেছে।’’ পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার ধৃতদের আদালতে হাজির করানো হচ্ছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও কিছু তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা। পরে সেই তথ্যগুলো প্রকাশ্যে আনা হবে।