বয়সে প্রবীণ, মেজাজে নবীন দল গড়াই স্বপ্ন

এই রকম উত্তেজক বাতাবরণে রাহুল বলছেন, দীর্ঘমেয়াদে তিনি  কংগ্রেসকে ‘গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি’ থেকে ‘গ্র্যান্ড অ্যান্ড ইয়ঙ্গ পার্টি’ করতে চান। দলের বড় দিগ্‌গজদের ছায়ায় থেকেই যুবকদের দরাজ আমন্ত্রণ জানান তিনি। সব গ্রাম-শহরে সংগঠনের কর্মীদের রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:০০
Share:

অনুষ্ঠানে মনমোহন সিংহ। ছবি: পিটিআই।

কঠিন সময়ে সনিয়া গাঁধী সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে তিন রাজ্য থেকে দুই ডজনের বেশি রাজ্যে ক্ষমতায় এনেছিলেন কংগ্রেসকে। কেন্দ্রে টানা দশ বছর সরকারে ছিল দল। ২০১৪ সালের পর আরও বড় চ্যালেঞ্জ এলেও ‘ঘুরে দাঁড়ানো’ সম্ভব বলেই মনে করছেন সেই সনিয়া। দায়িত্ব হাত বদলের সময় নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলে রাহুল গাঁধীকে এই মন্ত্রই কানে পুরে দিলেন তিনি।

Advertisement

মায়ের ‘আশীর্বাদ’ নিয়ে আজই সভাপতির কাজে নেমে পড়লেন রাহুল। দশ জনপথেই দফায় দফায় দেখা করলেন সব রাজ্য থেকে আসা নেতাদের সঙ্গে। পরে ১২ তুঘলক লেনে নিজের বাড়িতে আহমেদ পটেল, অশোক গহলৌতদের সঙ্গে বৈঠক করলেন গুজরাত নিয়ে। দলের এক নেতা বললেন, ‘‘সংগঠন ঢেলে সাজা থেকে মোদী-বিরোধী রাজনীতির নকশা আজ রাহুল নিজেই শুনিয়েছেন। তার অনেকটাই নির্ভর করছে গুজরাতের ফলের উপর।’’

আরও পড়ুন: দু’দশকের স্মৃতি বেয়ে বিদায় সনিয়া গাঁধীর

Advertisement

গুজরাতে রাহুলের সহযোগী হার্দিক পটেল আজ বলেছেন, ইভিএমে কারচুপি না হলে বিজেপি জিতবে না। একাধিক কংগ্রেস নেতাও আজ বলছেন, কংগ্রেস হারতেই পারে না। আশা আরও বাড়িয়েছেন খোদ বিজেপিরই এক সাংসদ সঞ্জয় কাকাড়ে। তিনি প্রকাশ্যেই বলে ফেলেছেন, বিজেপি গুজরাতে হারতে পারে। যদিও বিজেপির বাকি নেতারা তাতে রে-রে করে উঠেছেন। শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরেরও বক্তব্য, জনমতসমীক্ষার সঙ্গে বাস্তব পরিস্থি্তি মিলছে না। সোমবার ফল বেরোলেই তা বোঝা যাবে বলে দাবি তাঁর।

এই রকম উত্তেজক বাতাবরণে রাহুল বলছেন, দীর্ঘমেয়াদে তিনি কংগ্রেসকে ‘গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি’ থেকে ‘গ্র্যান্ড অ্যান্ড ইয়ঙ্গ পার্টি’ করতে চান। দলের বড় দিগ্‌গজদের ছায়ায় থেকেই যুবকদের দরাজ আমন্ত্রণ জানান তিনি। সব গ্রাম-শহরে সংগঠনের কর্মীদের রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তাঁর দাবি, মোদী কংগ্রেস-মুক্ত ভারত গড়তে চাইলেও কংগ্রেসকে মুছে ফেলতে পারবেন না। পশ্চাৎমুখী শক্তি ক্ষমতার জোরে ভোটে জেতে, সত্যের জোরে নয়। এ কাজে সনিয়া গাঁধীর পদাঙ্কই অনুসরণ করবেন তিনি।

সনিয়া রাহুলের উদ্দেশে বলেন, ‘‘অনেক ভোটে হেরেছি। তবু কর্মীদের অফুরন্ত সাহস জীবিত আছে। আমরা ভয় পাওয়ার লোক নই, ঝোঁকার লোক নই। ক্ষমতা, স্বার্থ ছেড়ে যে কোনও বলিদানের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’’ এই মঞ্চেই মনমোহন সিংহ বিজেপির প্রচার উড়িয়ে শুনিয়েছেন, তাঁর জমানায় গড়পড়তা ৭.৮ শতাংশ বৃদ্ধি, ১৪ কোটিকে দারিদ্রসীমার উপরে আনার কথা। মনমোহনকে ‘সততা’র সার্টিফিকেটও দিয়েছেন সনিয়া। কংগ্রেস ছাড়াও অন্য দলের কাছেও সনিয়ার যে গ্রহণযোগ্যতা ছিল, সেটিও তৈরি করা রাহুলের আর একটি লক্ষ্য। আজ সীতারাম ইয়েচুরি, স্ট্যালিন থেকে অখিলেশ, তেজস্বী, কেজরীবাল, মায় শত্রুঘ্ন সিন‌্হার অভিনন্দন এসেছে রাহুলের কাছে। তাঁদেরকে জনে জনে ধন্যবাদও জানিয়েছেন নতুন সভাপতি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন