LPG

ভোটের মুখেই কি দর কমবে তেল, গ্যাসের

২৭ মার্চ থেকে পাঁচ রাজ্যে ভোট শুরু। বিজেপি নেতৃত্বের আশঙ্কা, তার ঠিক আগে পেট্রল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের দাম বৃদ্ধির দরুন প্রবল ক্ষোভ তৈরি হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২১ ০৭:৪১
Share:

—ফাইল চিত্র

এর আগে কর্নাটক-সহ একাধিক রাজ্যে ভোটের মুখে ‘কাকতালীয় ভাবে’ কিছুটা দাম কমেছিল পেট্রল, ডিজেলের। এ বার পশ্চিমবঙ্গ সমেত পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের মুখেও তেল এবং রান্নার গ্যাসের দাম কমার সম্ভাবনা। সরকারি সূত্রের খবর, মার্চের মাঝামাঝি তেল ও রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের দর কমানো হতে পারে।

Advertisement

২৭ মার্চ থেকে পাঁচ রাজ্যে ভোট শুরু। বিজেপি নেতৃত্বের আশঙ্কা, তার ঠিক আগে পেট্রল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের দাম বৃদ্ধির দরুন প্রবল ক্ষোভ তৈরি হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। তা নিয়ে ভোটমুখী রাজ্যের নেতারা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ভোটের মুখে দাম কমলে, সেই ক্ষোভে অনেকটাই জল ঢালা যাবে বলে বিজেপি নেতৃত্বের আশা।

শুধু এ বছর পেট্রল ও ডিজেলের দাম লিটারে প্রায় ৪ টাকা করে বেড়েছে। ডিসেম্বর থেকে রান্নার গ্যাসের দাম বেড়েছে ২২৫ টাকা। এর মধ্যে শুধু ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত চার দফায় সিলিন্ডারের দর ১২৫ টাকা বেড়েছে। অথচ ভর্তুকি কার্যত বাড়েনি। বিজেপি নেতাদের ধারণা, এই পরিস্থিতিতে তেল ও গ্যাসের দর কিছুটা কমলেও আমজনতা ভোট দিতে যাওয়ার আগে সেই সুরাহার কথাই মনে রাখবেন।

Advertisement

ভোটের আগে মোদী সরকারের এই সম্ভাব্য ‘কৌশল’ আঁচ করে মঙ্গলবার কংগ্রেসের আগাম দাবি, পেট্রল-ডিজেলে করের বোঝা কমিয়ে অন্তত মনমোহন-সরকারের জায়গায় নামিয়ে আনা হোক। একই ভাবে, বাড়িতে ব্যবহারের রান্নার গ্যাসও ভর্তুকির হাত ধরে ফিরে যাক ইউপিএ জমানার মতো ৪০০ টাকার ঘরে। আজ দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরের সামনে জ্বালানির দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভও দেখিয়েছে কংগ্রেস। কেরলে পরিবহণ ধর্মঘট পালিত হয়েছে। সম্প্রতি এর প্রতিবাদে ই-স্কুটারে সওয়ার হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

তেল মন্ত্রক সূত্রের অবশ্য দাবি, রাজনৈতিক কারণে নয়, বাজারে অশোধিত তেলের দাম কমার ফলেই মার্চে জ্বালানির দর কমানোর রাস্তা প্রশস্ত হতে পারে। বৃহস্পতিবার তেল উৎপাদনকারী দেশগুলির সংগঠন ওপেক ও তাদের সহযোগী দেশগুলির বৈঠক হওয়ার কথা। সেখানে তেল উৎপাদনে বিধিনিষেধ শিথিলের সিদ্ধান্ত হতে পারে। সেই আশায় এ দিন থেকেই ব্রেন্ট অশোধিত তেলের দাম কিছুটা কমেছে। ফলে আশা, মার্চের মাঝামাঝি সময়ে পেট্রল-ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের দাম কমাতে পারে তেল সংস্থাগুলি। রান্নার গ্যাসের দাম নির্ভর করে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে গ্যাস আমদানি করা হলে তার দর কত পড়ত, সেই হিসেবের উপরে। সেখানেও আগামী মাসে সামান্য স্বস্তির সম্ভাবনা।

পেট্রল, ডিজেলে কী ভাবে করের বোঝা কমানো যায়, তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে অর্থ মন্ত্রকে। বিভিন্ন মহল থেকে বার বার প্রশ্ন উঠছে, ওই বোঝা কমাতে কেন জিএসটির আওতায় আনা হবে না জ্বালানিকে?

তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান আগেই বলেছিলেন, শীতের মরসুম কেটে গেলে তেলের দাম কমে। তাঁর মন্ত্রক মনে করছে, ওপেক তেল উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলে অশোধিত তেলের দাম কমতে শুরু করবে। কিন্তু পেট্রল, ডিজেলে করের বোঝা কী ভাবে কমবে, তার এখনও দিশা মেলেনি। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আগেই একে ‘ধর্ম-সঙ্কট’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের ব্যাখ্যা, অতীতে তেলের দাম কমলেও সরকার উৎপাদন শুল্ক বাড়িয়েছে। ফলে বাজারে দাম কমেনি। এখন অশোধিত তেলের দাম কমলে, স্বাভাবিক নিয়মে পেট্রল, ডিজেলের দাম কিছুটা কমতে পারে। কিন্তু করের বোঝা কমাতে গেলে সরকারের আয় কমে যাবে। অতিমারির বছরে সে পথে হাঁটা মুশকিল। মন্ত্রকের একটি সূত্র বলছে, সে ক্ষেত্রে তেল সংস্থাগুলিকে কিছুটা বোঝা বইতে বলা ছাড়া উপায় নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন