—নিজস্ব চিত্র।
শুধু নিত্যনতুন চা নয়, এ বার চা থেকে তৈরি ওয়াইনও বাজারে আনতে চলেছে অসমের যোরহাটে থাকা টোকলাই চা গবেষণাকেন্দ্র।
১৯১১ সালে তৈরি টোকলাই শুধুমাত্র বিশ্বের প্রাচীনতম চা গবেষণাকেন্দ্রই নয়, সবচেয়ে বড়ও। বিভিন্ন চায়ের ক্লোন, নতুন প্রজাতির চা পাতা তৈরি, চা চাষের উন্নত প্রযুক্তি তৈরির জন্য খ্যাত টোকলাই চা গবেষণাকেন্দ্র এর আগে টি ট্যাবলেট, টি চকোলেট এবং টি বিস্কুট তৈরি করেছে।
টোকলাইয়ের বার্ষিক সভায় এ বারের চমক ছিল চা থেকে তৈরি তিন ধরনের মদ। চা-বিজ্ঞানী প্রশান্ত দত্তর উদ্ভাবন এই চা ওয়াইন কাঁচা পাতা নয়, কারখানায় তৈরি সিটিসি (ক্রাশ-টিয়ার-কার্ল), অর্থডক্স চা ও গ্রিন টি থেকে প্রস্তুত করা হয়েছে। টি ওয়াইন তৈরির খরচও কম। লিটার প্রতি মাত্র ৩৬২ টাকা। তাই আঙুর থেকে তৈরি মদ অপেক্ষা কম দামেই সুগন্ধী টি ওয়াইন বিক্রি করা যাবে। ভবিষ্যতে সাদা চা থেকেও ওয়াইন তৈরির আশা রয়েছে বলে প্রশান্তবাবু জানান। অবশ্য সাদা চা পাতার দাম অত্যন্ত বেশি।
আরও পড়ুন
চলছে বউ কেনাবেচা, পুলিশের জালে ৮ আরব শেখ
ধূমপানে বারণ করায় যুবককে পিষে মারল আইনজীবী
আট ডলারের গয়না বেচে মিলল ১৬ লক্ষ টাকা!
২০০৭ সালে প্রথম বার টোকলাইতে টি ওয়াইন তৈরির প্রকল্প হাতে নেওয়া হলেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৫ সাল থেকে এই কাজে হাত দেন প্রশান্তবাবু। তিনি জানান, তৈরি হওয়া ওয়াইনের নমুনা এডিবিলিটি, টক্সিসিটি-সহ বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তার চূড়ান্ত রিপোর্ট হাতে এলেই পেটেন্টের আবেদন করবে টোকলাই।
মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের বিজ্ঞানী প্রশান্ত দত্তর দাবি, এই ওয়াইনে অ্যালকোহলের পরিমাণ থাকবে মাত্র ১৫-১৭ শতাংশ। তাই তা লিভারের বেশি ক্ষতি তো করবেই না, উল্টে হৃদ্যন্ত্রের অসুখ, রক্তচাপ, রক্তে শর্করা, প্রস্টেট ক্যান্সার, কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণ করবে এই ওয়াইন। হতাশা, দৃষ্টিশক্তি সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগ, দাঁতের ক্ষয় নিরাময় ও দেহে রক্তকণার সংবহনেও তা সাহায্য করবে।
টোকলাই কর্তাদের আশা, দেশে-বিদেশে ওয়াইনের বিরাট বাজার। সেখানে অসমের সুগন্ধী ও উপকারী ওয়াইন ঠিক মতো বিপণন করা হলে বিস্তর লাভের সম্ভাবনা রয়েছে। যা অসমের চা শিল্পের চেহারা বদলে দিতে পারে।