বাচ্চা কোলে পুণের সেই ভিক্ষাজীবী মহিলা। ছবি: ফেসবুক।
রাস্তাঘাটে বেরিয়ে ভিক্ষাজীবী মানুষদের সঙ্গে আমাদের দেখা হয় মাঝে মধ্যেই। বাচ্চা কোলে ভিক্ষা চাইছেন এক জন মহিলা, এ-ও আমাদের নজরে আসে প্রায়শই। ঠিক এমনটাই হয়েছিল পুণের এক ব্যক্তির সঙ্গে। কোলে বাচ্চা নিয়ে ভিক্ষা চাইছেন এক মহিলা, আর সে বাচ্চার মুখে দুধের বোতল। একটি বিস্কুটের প্যাকেটও রয়েছে মহিলার হাতে।
পুণের ওই ব্যক্তিটি যেই না জিজ্ঞেস করলেন, ‘বাচ্চার নাম কী?’ সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চা কোলে নিয়েই ছুটলেন ওই মহিলা। মহিলা এবং তার কোলে ওই বাচ্চার ছবিও ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন পুণের ওই ব্যক্তি।
প্রশান্ত কানোজিয়া নামে পুণেরই আর এক ব্যক্তির নজরে আসে ওই পোস্টটি। আর দেখা মাত্রই সন্দেহ জাগে পুণের সমাজকর্মী প্রশান্তের মনে। পোস্টটি নিজের প্রোফাইল থেকে আরও এক বার ফরওয়ার্ড করেন প্রশান্ত।
শুধু পোস্ট ফরওয়ার্ড করেই ক্ষান্ত থাকেননি প্রশান্ত। ঘটনাটি আদতে ঠিক কী, তার কুলকিনারা করতে দলবল নিয়ে পৌঁছে যান পুণের খড়কি বাজার এলাকায়। প্রশান্তের কথায়, ‘‘ছবিটা সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করা হয়েছিল। আমাকে বলা হয়েছিল যে, খড়কি বাজার এলাকাতেই ভিক্ষা করেন ওই মহিলা। সেখানে আমার দল নিয়ে বিষয়টার তদন্ত করতে যাই। আর খুঁজেও পেয়ে যাই মহিলাকে। আর খুঁজে পাওয়া মাত্র পুলিশের হাতে তুলে দিই তাকে। যখন তাঁকে তার কোলের বাচ্চার কথা জিজ্ঞেস করি, তিনি বলেন এই বাচ্চা তাঁর ভাইয়ের ছেলে।’’ ভিক্ষা প্রতিরোধ আইন এনে পুণে পুলিশ গ্রেফতার করে ভিক্ষাজীবী ওই মহিলাকে।
প্রশান্ত কানোজিয়া নামের পুণের সেই সমাজকর্মী।
তবে পরবর্তী সময়ে পুণে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে আরও চমকপ্রদ তথ্য। পুলিশসূত্রে খবর, ওই বাচ্চাটি ভিক্ষাজীবী মহিলারই নিকটবর্তী আত্মীয়ের ছেলে। ভিক্ষায় মিলতে সুবিধে হবে বলে প্রায়শই ছেলেকে ওই মহিলার সঙ্গে ছেড়ে দিতেন বাচ্চাটির মা-বাবা। এবং তাতে তাদের কোনও অসুবিধা নেই বলেও জানানো হয়েছে পুণে পুলিশের তরফে। মহিলার ছবি সমেত সোশ্যাল মিডিয়াতে পুরো ঘটনাটা ফের শেয়ার করেন প্রশান্ত।
প্রশান্ত বলছেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষমতা কত, ওই ঘটনার পরই আমি বুঝে গিয়েছি। আমরা একটা নতুন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলেছি, যেখানে কেউ এই ধরনের বাচ্চাদের দেখতে পেলেই ছবি শেয়ার করবে। সেখান থেকে অন্যান্য আরও সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মগুলিতে ছবি শেয়ার করা হবে। আর সন্দেহজনক কিছু খুঁজে পেলেই আমরা সরাসরি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করব।’’
আরও পড়ুন: নাগরিকদের লাঠিপেটা করে তাড়াচ্ছেন ‘মোদী’! মুখোশ পরে ‘নাটকীয়’ প্রতিবাদ তৃণমূলের
আরও পড়ুন: কত সহজে বিছানায় নিয়ে যাওয়া যায় ছাত্রীদের, তা নিয়ে সমীক্ষায় হইচই
শিশুদের নিয়ে ব্যবসা বন্ধ করতে একটি নতুন দল খুলেছেন প্রশান্ত। সেখানে ইতিমধ্যেই ৭০ জন সদস্য। শিশুদের নিয়ে ব্যবসা করা হচ্ছে, এরকম সন্দেহ হলেও তাঁরা সেই খবর শেয়ার করছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তবে যতটা সম্ভব যাচাই করে নেওয়া হচ্ছে খবরের সত্যতা।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরাবাংলা খবরপেতে পড়ুন আমাদেরদেশবিভাগ।)