১৮ বার গর্ভপাতের পরে এল মাতৃত্ব, ‘মির‌্যাক্‌ল’ বলছেন ডাক্তাররাই!

হাজার রকম মানত করেছেন, সন্তান কামনায় মাথা ঠুকেছেন মন্দিরে মন্দিরে। যে যত রকম দাওয়াই-টোটকা বলেছে, সবই প্রয়োগ করেছেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৭ ১০:০০
Share:

হাজার রকম মানত করেছেন, সন্তান কামনায় মাথা ঠুকেছেন মন্দিরে মন্দিরে। যে যত রকম দাওয়াই-টোটকা বলেছে, সবই প্রয়োগ করেছেন। তার সঙ্গেই নিয়মিত হত্যে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দরজায়। আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানও সন্তানের মুখ দেখাতে পারেনি উত্তরপ্রদেশের গাঁয়ের বধূ, ৩৮ বছরের রজনীকে।

Advertisement

গত কুড়ি বছরে ১৮ বার গর্ভবতী হয়েছিলেন রজনী। প্রত্যেক বারেই গর্ভপাত। শারীরিক ও মানসিক ভাবে বারবার গুঁড়িয়ে যেতেন। তবু কোথাও টিমটিম করে জ্বলত একটা জেদ আর একফালি স্বপ্ন। সেই স্বপ্নে ভর করেই উনিশ বছরের চেষ্টায় সম্প্রতি মা হয়েছেন আগরার বরহান এলাকার হাথী গড়ী গ্রামের রজনী। একটা ছোট্ট অস্ত্রোপচার বদলে দিয়েছে সব কিছু। চিকিৎসকেরা পর্যন্ত বলছেন, যা ঘটেছে, তা কার্যত অসাধ্যসাধন।

কী ভাবে ঘুরল এই কৃষক দম্পতির ভাগ্যের চাকা?

Advertisement

বহু চিকিৎসকের কাছে ঘুরতে ঘুরতে শেষ পর্যন্ত অমিত টন্ডন নামে এক ল্যাপেরোস্কোপিক সার্জনের খোঁজ পেয়েছিলেন রজনী ও তাঁর স্বামী প্রেমকুমার। টন্ডন এবং আইভিএফ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বৈশালীর তত্ত্বাবধানে এক বেসরকারি হাসপাতালে প্রথমে একটি বিশেষ অস্ত্রোপচার হয় রজনীর। ডাক্তারেরা জানাচ্ছেন, প্রতি বারই গর্ভধারণের পাঁচ-ছ’মাসের মাথায় সন্তান হারাচ্ছিলেন রজনী। তিনি যে সমস্যায় ভুগছিলেন, তাকে বলে ‘ইনকম্পিটেন্ট সার্ভিক্স’। অর্থাৎ জরায়ুর মুখ খুব দুর্বল হওয়ায় ভ্রূণ ধরে রাখতে পারতেন না রজনী। জরায়ুমুখে সেলাই দিয়েও লাভ হতো না।

এ বার পরীক্ষার পরে চিকিৎসকেরা দেখেন, গর্ভাবস্থার প্রথম পর্যায়ে সেলাইটা যদি অন্য ভাবে করা যায়, কাজ হলেও হতে পারে। রজনী যখন সাড়ে তিন মাসের গর্ভবতী, তখন তাঁর জরায়ুতে অন্যান্য বারের চেয়ে অনেকটা উপরে ল্যাপেরোস্কোপিক সেলাই করে দেওয়া হয়। আর বিপত্তি হয়নি। চিকিৎসকরা জানান, মা ও শিশু দু’জনেই সুস্থ। তবে ঠিক কবে সন্তানের জন্ম হয়েছে, সে পুত্র না কন্যা— তা জানা যায়নি।

ডাক্তারেরা শুধু বলছেন, এমন ঘটনা কার্যত ‘মির‌্যাক্‌ল’। রজনীর গল্প ‘গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে’ পাঠানোর কথাও ভাবছেন তাঁরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement