এ ভাবেই রাস্তায় ঘোরে ‘হানাদার’রা। করিমগঞ্জে। ছবি: শীর্ষেন্দু সী।
ষাঁড়ের গুঁতোয় গুরুতর জখম এক মহিলার মৃত্যুর জেরে তুমুল উত্তেজনা ছড়াল করিমগঞ্জে। আজ শহরের কয়েকটি বাজার এলাকায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো যাঁড়, গরুকে লাঠিপেটা করে তাড়ানোর চেষ্টা করেন এলাকাবাসী। তাতে বিশেষ লাভ হয়নি। অভিযোগ উঠেছে, প্রশাসনের এ দিকে কোনও নজর নেই। তাতেই সমস্যা পড়ছেন পথচারীরা। ঘটনার জেরে আজ তড়িঘড়ি পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন পুরকর্তারা।
গত কাল বিকেলে ষাঁড়ের হামলায় শহরে কয়েক জন জখম হয়েছিলেন। গুরুতর আহত হন শম্পা নমঃশূদ্র নামে এক তরুণী। প্রথমে তাঁকে করিমগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে স্থানান্তরিত করা হয় শিলচর মেডিক্যাল কলেজে। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। শম্পাদেবীর বাড়ি করিমগঞ্জ শহরের শিলচর রোড এলাকায়। পারিবারিক সূত্রে খবর, আগামী মাসে সুপ্রাকান্দিতে তাঁর বিয়ের কথা ছিল।
ষাঁড়ের হামলায় মৃত্যুর খবর পেয়েই জরুরি বৈঠকে বসেন করিমগঞ্জের পুরপ্রধান শিখা সূত্রধর, উপ-পুরপ্রধান পার্থসারথি দাস। পুরসভা সূত্রে খবর, শহরের ব্রজেন্দ্র রোডে খালি জায়গায় খোঁয়াড় তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেখানে বেওয়ারিশ গরু রাখার পরিকল্পনা করা হলেও, ষাঁড়গুলিকে নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি।
পুরসভার এক কর্তার কথায়, ‘‘ষাঁড়গুলি রাস্তায় ঘুরে ঘুরে খাবার জোগাড় করে। খোঁয়াড়ে রাখা হলে সেগুলির খাবারের খরচ কে দেবে? গরুগুলিকে কেউ না কেউ এসে নিয়ে যাবেন। ওই সময় মালিকদের কাছ থেকে বৈধ ভাবে গরুর খোরাকের টাকা সংগ্রহ করার যাবে।’’
এ দিকে, ষাঁড়ের হামলায় তরুণীর মৃত্যুর খবরে চাঞ্চল্য ছড়ায় শহরজুড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাস্তায় হাঁটতে তাঁদের রীতিমতো ভয় লাগছে। কখন না ষাঁড় বা গরুর গুঁতো খেতে হয়। কখনও শিং-এর ধাক্কায় মাটিতে আছাড়ও মারে বেপরোয়া চারপেয়েগুলি। এ দিনও সন্তান-সহ এক মহিলাকে তাড়া করেছিল একটি ষাঁড়। এলাকার এক যুবক তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হন। কয়েক জন বাসিন্দা লাঠি নিয়ে কয়েকটি ষাঁড়, গরুকে তাড়িয়ে দিলেও কিছু ক্ষণ পরই স্টেশন রোড, পেট্রোল পাম্প, সরিষা, ব্রিজ রোড এলাকার পুরনো ছবিই ফিরে আসে।
করিমগঞ্জের রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো ষাঁড়, গরুগুলিকে অবশ্য ‘পাগল’ বলতে নারাজ পশু চিকিত্সক আজিজুর রহমান। তিনি জানান, শহরের রাস্তায় বেশিরভাগ ষাঁড় কোনও কারণে উৎকণ্ঠায় রয়েছে। ওষুধ, ইঞ্জেকশন দিয়ে সেগুলিকে শান্ত করা যায়। ওই পশু চিকিৎসক বলেন, ‘‘এটা শুধু করিমগঞ্জের সমস্যা নয়। বরাকের অন্য জায়গাতেও এ
ভাবে ষাঁড়ের উপদ্রব রয়েছে। জনসচেতনতা বাড়লে পরিস্থিতি অনেকাংশে ঠিক হবে।’’