দিনেদুপুরে ধর্ষণ রাস্তায়, প্রতিবাদ না করে ভিডিও

রবিবার বিশাখাপত্তনমের ঘটনা। পুলিশ রবিবার রাতেই অভিযুক্ত ট্রাক চালক ২৩ বছরের গাঞ্জি শিবকে গ্রেফতার করেছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বিশাখাপত্তনম শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৫৭
Share:

ধৃত গাঞ্জি শিব

রাতের অন্ধকার নয়। নির্জন রাস্তা নয়। দিনদুপুরে শহরের ফুটপাথে এক তরুণীকে ধর্ষণ করছে এক যুবক। লোকে যাচ্ছে, ঘুরে তাকাচ্ছে, তার পর স্রেফ মুখ ঘুরিয়ে চলে যাচ্ছে। কারও কারও আবার দূরে দাঁড়িয়ে ভিডিও করতেও বাধেনি।

Advertisement

কিন্তু এগিয়ে এসে আটকাননি কেউ, প্রতিবাদও করেননি। কয়েক জন অবশ্য পুলিশে ফোন করেছিলেন। উল্টো দিকের ফুটপাথ থেকে গোটা ধর্ষণ পর্বের ভিডিও তুলেছিলেন যে অটোচালক, তাঁর দাবি, ‘পুলিশকে সাহায্য করতেই’ তিনি তা করেন। ভিডিওটি তিনি পুলিশের হাতে তুলে দেন। সে ভিডিও দেখে শিউরে উঠেছে পুলিশও। বিস্মিত পুলিশের প্রশ্ন, ‘‘মানুষ এমন নির্মম ভাবে উদাসীন হতে পারে! এ ভাবে বসে বসে ধর্ষণ হতে দেখা যায়! মুখ ফিরিয়ে চলে যাওয়া যায়!’’

আরও পড়ুন: সিবিআইয়ের দু’নম্বরে আস্থানা, শুরু বিতর্ক

Advertisement

রবিবার বিশাখাপত্তনমের ঘটনা। পুলিশ রবিবার রাতেই অভিযুক্ত ট্রাক চালক ২৩ বছরের গাঞ্জি শিবকে গ্রেফতার করেছে।

দুপুর দু’টো তখন। রেলওয়ে নিউ কলোনি এবং রেলওয়ে স্টেশনের মাঝে ব্যস্ত রাস্তায় লোকজনের আনাগোনা অহরহ। রাস্তার উপরেই বসেছিলেন ওই তরুণী। পুলিশ জানিয়েছে, স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া হয়েছিল ২৮ বছর বয়সি ওই তরুণীর। খুব ভোরে বিশাখাপত্তনম শহর থেকে অদূরে পেনডুর্থির কাছে ভেপাগুন্টায় স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন তিনি। কিন্তু কোথায় যাবেন বুঝতে না পেরে বিশাখাপত্তনমের বাসে চেপে বসেন। রেলওয়ে স্টেশনের কাছে ফুটপাথে গাছের তলায় বসেছিলেন তিনি। তদন্তকারী অফিসার জি ভি রামানা বলেন, ‘‘শিব তাঁকে উত্যক্ত করতে থাকে। মদ-গাঁজা দুই-ই খেয়েছিল সে। অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় সে ঝাঁপিয়ে পড়ে ওই তরুণীর উপর। ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, বহু লোক হেঁটে যাচ্ছে। কিন্তু মহিলাকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে যায়নি।’’ ফোনে খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে চলে আসে পুলিশ। কিন্তু তত ক্ষণে পালিয়ে গিয়েছে শিব। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে গ্রেফতার করা হয় তাকে।

দিল্লির রাস্তায় রাতের অন্ধকারে গণধর্ষণ করা হয়েছিল নির্ভয়াকে। লোহার শিক দিয়ে ছিন্নভিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল তাঁর যৌনাঙ্গ। সেই নৃশংসতার কথা শুনে শিউরে উঠেছিল গোটা দেশ। বিক্ষোভ, প্রতিবাদ, মোমবাতি মিছিল... আরও কত কী! অথচ দিনেদুপুরে শহরের জনবহুল রাস্তায় এক তরুণীকে ‘নির্ভয়ে’ ধর্ষণ করে গেল এক যুবক। প্রতিবাদ করল না কেউ, পাঁচটা লোক জড়ো হল না, আটকাল না কেউ। ‘‘ছ’টা ফোন এসেছিল। কিন্তু তা বাদ দিয়ে কেউ কিছু করল না!’’ —বিস্ময় কাটছে না পুলিশের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন