প্রতীকী ছবি।
তিন বছরের নীলাক্ষিকে দত্তক নিয়েছিলেন এক সুইডিশ দম্পতি। তাঁদের কাছেই বেড়ে ওঠা। নাগরিকত্বও সেখানকার। তবে, নিজের বায়োলজিক্যাল মায়ের কথা কখনও ভুলতে পারেননি তিনি। তাই মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে সুইডেন থেকে ছুটে এলেন ভারতে। মায়ের কাছে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার এলেন বটে, তবে এটাই সেই অর্থে দু’জনের প্রথম দেখা।
মুম্বই থেকে প্রায় ৬৭০ কিলোমিটার দূরের যবতমালে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন নীলাক্ষির মা। শনিবার সেখানে অসুস্থ মাকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন ওই তরুণী। আর মা-মেয়েকে একসঙ্গে দেখে আবেগে ভেসে গেলেন আর এক জন। তিনি অঞ্জলি পওয়ার। শিশু পাচারের বিরুদ্ধে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় কাজ করেন। তাঁর মাধ্যমেই বহু বছর আগে বায়োলজিক্যাল মায়ের খোঁজ পেয়েছিলেন নীলাক্ষি।
আরও পড়ুন
একসঙ্গে মরতে স্ত্রীকে কামড়ে ধরলেন সাপে কাটা স্বামী, তার পর...
১৯৭৩-এ পুণের কেড়গাঁওয়ের ‘পণ্ডিতা রমাবাঈ মুক্তি মিশনস শেল্টার অ্যান্ড অ্যাডাপশন হোম’-এ জন্ম হয় নীলাক্ষির। কিন্তু, মেয়ের জন্মের পর পরই আত্মহত্যা করেন তাঁর বায়োলজিক্যাল বাবা। স্বামীর মৃত্যুর পর নীলাক্ষির মা ওই হোমে মেয়েকে রেখে আসেন। পরে বিয়ে করে নতুন জীবনও শুরু করেন। দ্বিতীয় পক্ষে তাঁর এক সন্তান রয়েছে। অন্য দিকে, ওই হোম থেকে তিন বছরের নীলাক্ষীকে দত্তক নেন এক সুইডিশ দম্পতি। এখন সেই মেয়েরই বয়স ৪৪।
তবে, নতুন বাবা-মা নীলাক্ষির আসল পরিচয় তাঁর কাছে গোপন করেননি। সব জানার পর বায়োলজিক্যাল মায়ের খোঁজ শুরু করেন তিনি। একটা সময়ে অঞ্জলি যে সংস্থায় কাজ করেন তার সঙ্গে যোগাযোগ হয়। ওই সংস্থার সূত্রেই তাঁর এ দেশে প্রথম আসা। ১৯৯০ থেকে এ পর্যন্ত মোট ৬ বার ভারতে এলেও মায়ের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছে এক বার। তা-ও ভীষণ আনুষ্ঠানিক ভাবে। বর্তমানে নীলাক্ষির মা হাসপাতালে ভর্তি। থ্যালাসেমিয়ার ওই রোগী গুরুতর অসুস্থ। মাকে দেখতে তাই ফের ভারতে ছুটে এসেছেন মেয়ে নীলাক্ষি। তিনি নিজেও থ্যালাসেমিয়ার রোগী। মায়ের চিকিৎসার সমস্ত খরচ তিনিই জোগাবেন।