Gujarat High Court

ছেলে-বৌমার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিয়ো বানিয়ে ব্যবসা! জামিন চেয়ে হাই কোর্টে ভর্ৎসিত শাশুড়ি

গুজরাতের রাজকোট সাইবার থানায় এক মহিলা অভিযোগে জানাম, দিনের পর দিন তাঁকে ধর্ষণ করেছেন স্বামী। তাতে ইন্ধন জুগিয়েছেন শ্বশুর এবং শাশুড়ি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৬:৪৫
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

ছেলে এবং বৌমার অন্তরঙ্গ মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করতেন শ্বশুর এবং শাশুড়ি। সেই সমস্ত ভিডিয়ো পর্ন সাইটে আপলোড করে রোজগার করতেন। স্বামী, শ্বশুর এবং শাশুড়ির বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ করেন এক মহিলার। সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। গ্রেফতারও হন অভিযুক্তরা। সেই মামলায় জামিন চাইতে গিয়ে গুজরাতে হাই কোর্টের নিন্দার মুখে পড়লেন অভিযুক্ত শাশুড়ি। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘‘ধর্ষণ তো ধর্ষণই। সেটা স্বামী করলেও। আর এক জন মহিলা (যিনি অভিযুক্তের অভিভাবকও) হয়ে আর এক জন মহিলার সম্মানহানিতে সাহায্য করাও কম দোষের নয়।’’

Advertisement

মামলার সূত্রপাত বেশ কিছু দিন আগে। গুজরাতের রাজকোট সাইবার থানায় এক মহিলা তাঁর স্বামী এবং শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর দাবি, দিনের পর দিন তাঁকে ধর্ষণ করেছেন স্বামী। আর তাতে ইন্ধন জুগিয়েছেন শ্বশুর এবং শাশুড়ি। ওই মহিলা তাঁর অভিযোগে জানান, শ্বশুরবাড়ির হোটেল ব্যবসা আছে। কিন্তু সেই ব্যবসা ভাল চলছিল না। হোটেল বিক্রি করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেই অবস্থা থেকে বাঁচতে তাঁর উপর অত্যাচার শুরু হয়। স্বামী এবং শ্বশুর-শাশুড়ি প্রথমে তাঁর নগ্ন ছবি এবং ভিডিয়ো বিভিন্ন পর্ন সাইটে আপলোড করে টাকা রোজগার শুরু করেন। পরে সেই ‘অত্যাচার’ আরও বৃদ্ধি পায়।

মহিলার অভিযোগ, স্বামী তাঁর সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিয়ো রেকর্ড করতেন। আর সেই কাজে তাঁকে ‘উৎসাহ’ জোগাতেন শ্বশুর-শাশুড়ি। বার বার আপত্তি করেছেন তিনি। কেঁদেছেন। কিন্তু রেহাই মেলেনি। অভিযোগপত্রে নির্যাতিতার দাবি, স্বামী তাঁর সঙ্গে ‘অস্বাভাবিক আচরণ’ করতেন। শ্বশুরবাড়ির অর্থ উপার্জনের জন্য দিনের পর দিন তাঁকে ধর্ষিতা হতে হয়েছে। ওই মামলা চলাকালীন হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিযোগকারিণীর শাশুড়ি। তিনি মামলা খারিজের আবেদন জানান। কিন্তু হাই কোর্ট তা নাকচ করে দিয়েছে। বিচারপতি দিব্যেশ জোশি উল্লেখ করেন, সমাজে যৌন হিংসা বিভিন্ন মাত্রায় বিভিন্ন ভাবে রয়েছে। হয়ত শারীরিক ভাবে নির্যাতন হয়নি। কিন্তু ধর্ষণ হয়েছে— এমনটাও হয়।

Advertisement

সংশ্লিষ্ট মামলায় হাই কোর্টের মন্তব্য, ‘‘এ বার যৌন হিংসার বিষয়ে নীরবতা ভঙ্গ করা প্রয়োজন।’’ আদালত আরও বলে, ‘‘মহিলার উপর হিংসার বিষয়ে সমাজে একটা অদৃশ্য এবং নীরবতার সংস্কৃতি রয়েছে। মহিলার প্রতি হিংসার কারণ বা কারণগুলির মধ্যে রয়েছে পুরুষ এবং মহিলাদের মধ্যে থাকা অসম ক্ষমতার সমীকরণ। সেটাই এমন হিংসাকে উৎসাহিত করে। সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক নিয়ম, অর্থনৈতিক অবস্থা, দারিদ্র, নেশাবস্তুর সেবন ইত্যাদি সূচকে এই হিংসা নির্ভর করে।’’ ওই মহিলার আবেদন খারিজ করে বিচারপতি জোশি বলেন, ‘‘এই রকমের জঘন্য এবং লজ্জাজনক কাজ করার পিছনে কারণ যাই হোক না কেন, এর কঠোর সমালোচনা করা উচিত। আর ভবিষ্যতে এমন অপরাধ যাতে না ঘটে তার জন্য অভিযুক্তদের অবশ্যই শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন