—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ঋতুচক্রের উপর প্রভাব বাড়ছে লা নিনার। যার প্রভাব পড়তে চলেছে উত্তর ভারতের শীতকালীন আবহাওয়ায়। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও)-র সাম্প্রতিক রিপোর্ট জানাচ্ছে, এ বার লা নিনার প্রভাবে উত্তর ভারতের বেশ কিছু এলাকায় শীত দীর্ঘস্থায়ী হবে। দেখা যেতে পারে শৈত্যপ্রবাহের আধিক্য।
আবহবিদেরা বলছেন, প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম হল, দক্ষিণ আমেরিকার উপকূল থেকে উষ্ণ সমুদ্রের জল পশ্চিমে সরে গিয়ে কেন্দ্রীভূত হয় এশিয়া-অস্ট্রেলিয়া উপকূলের কাছে। এর উল্টো প্রক্রিয়াটাই ‘এল নিনো’। এর ফলে প্রশান্ত মহাসাগরের যে-অংশের অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা থাকার কথা, সেটি উষ্ণ হতে শুরু করে। সমুদ্রের সেই অতিরিক্ত তাপ নির্গত হয় সমুদ্রপৃষ্ঠের বাতাসে। তার জেরে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। অর্থাৎ এল নিনো হলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ে। আর তার বিপরীত প্রক্রিয়া অর্থাৎ লা নিনার কারণে উষ্ণায়নের প্রভাব কমে। বেড়ে যায় শীত।
বস্তুত, এর তিনটি পর্যায় রয়েছে—উষ্ণ (এল নিনো), শীতল (লা নিনা) এবং নিরপেক্ষ (এনসো)। প্রতি ২ থেকে ৭ বছরে একবার এই তিনটির মধ্যে পর্যায়ক্রমে পরিস্থিতি দেখা দেয়। যদিও কখনও কখনও এল নিনো-এনসো-লা নিনা’র এই হিসেব ওলটপালট হয়ে যায়। প্রসঙ্গত, এল নিনো সাদার্ন অসিলেশন (এনসো) হল সমুদ্র-বায়ুমণ্ডলের একটি ঘটনা যা নিরক্ষীয় প্রশান্ত মহাসাগরের উপর উদ্ভূত হয় এবং বিশ্বব্যাপী আবহাওয়াকে প্রভাবিত করতে পারে। ডব্লিউএমও-র চলতি সপ্তাহের রিপোর্ট বলছে, এ বছর কিছুটা দুর্বল লা নিনার প্রভাবে চিন, কোরিয়ার মতো দেশে শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে। ওই অঞ্চল থেকে ঠান্ডা বাতাস ঢুকে উত্তর ভারত-সহ দক্ষিণ এশিয়ার কিছু অংশের তাপমাত্রা কমিয়ে দিতে পারে। লা নিনার এই প্রভাব থাকতে পারে পরবর্তী তিন মাস।