যশবন্তকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা, বিতর্কে বসুন্ধরা

শুভেচ্ছা দেখে খোদ দিল্লির বিজেপি নেতাদেরই চোখ ছানাবড়া। কারণ, যশবন্ত সিন্‌হাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে রাজস্থান বিজেপির পক্ষ থেকে। তাতে নাম রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়ার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৮ ০২:২৮
Share:

সরাসরি নাম না নিন, নরেন্দ্র মোদীকে তিনি ‘দুর্যোধন’ বলেছেন। আর তাঁর সেনাপতি অমিত শাহকে ‘দুঃশাসন’। গত এপ্রিলেই ঘোষণা করেছেন, বিজেপির সঙ্গে আর সম্পর্ক নেই। তবু সেই বিজেপি থেকেই জন্মদিনের শুভেচ্ছা পেলেন অটলবিহারী বাজপেয়ী জমানার মন্ত্রী যশবন্ত সিন্‌হা।

Advertisement

শুভেচ্ছা দেখে খোদ দিল্লির বিজেপি নেতাদেরই চোখ ছানাবড়া। কারণ, যশবন্ত সিন্‌হাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে রাজস্থান বিজেপির পক্ষ থেকে। তাতে নাম রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়ার। বার্তায় যশবন্তকে সম্বোধন করা হয়েছে ‘বিজেপির প্রবীণ নেতা’ হিসেবে! গত কালই বিরাশিতে পা দিলেন যশবন্ত। নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পরে লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলী মনোহর জোশী, যশবন্তের মতো প্রবীণ নেতারা কার্যত ব্রাত্য। গত কয়েক বছর ধরেই যশবন্ত দলে ‘বিদ্রোহী’ নেতা বলে পরিচিত। আর এখন তো তিনি বিজেপিরও সদস্য নন। রোজ অরুণ শৌরিদের সঙ্গে রাফাল নিয়ে সরব হচ্ছেন। সিবিআই, আদালতেও গিয়েছেন মোদীর বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি নিয়ে।

এমন এক নেতাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় গতকাল রাজস্থান বিজেপির পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলা হয়, ‘‘বিজেপির প্রবীণ নেতা, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিন্‌হার জন্মদিনে অনেক শুভকামনা। ঈশ্বর আপনাকে দীর্ঘায়ু দিন।’’ এর নীচে বসুন্ধরা আর রাজ্য বিজেপি সভাপতি মদনলাল সাইনির হাসিমুখের ছবি। দলীয় সূত্রের খবর, মদনলাল সাইনি অমিত শাহের পছন্দের তালিকায় ছিলেন না। কিন্তু দু’মাস ধরে অমিতকে চাপ দিয়ে মদনলালকে নিয়োগ করতে বাধ্য করেন বসুন্ধরা।

Advertisement

আর ঠিক এক মাস পরে রাজস্থানে ভোট। প্রশ্ন উঠেছে, তার আগে কি ‘মহারানি’ বসুন্ধরা ফের মোদী-শাহকে খোঁচাতে চাইলেন? দলের এক নেতার বক্তব্য, ‘‘এমনিতেই দিল্লির সঙ্গে মহারানির বনিবনা নেই। বরাবরই অবাধ্য তিনি। রাজস্থানে জেতাও কঠিন। প্রধানমন্ত্রীও বেশি সভা করতে চাইছেন না। এমন এক পরিস্থিতিতে বসুন্ধরা কী বার্তা দিতে চাইছেন?’’

যশবন্তের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। কিন্তু ফোনে পাওয়া গেল রাজস্থান বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়ার দায়িত্বে থাকা নেতাকে। নাম হিরেন্দ্র কৌশিক। তাঁকে প্রশ্ন করা হল, ‘‘যশবন্ত যখন নিজেই বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করে রাজনৈতিক সন্ন্যাসের কথা ঘোষণা করেছেন, তখন কীসের ভিত্তিতে এমন শুভেচ্ছা বার্তা?’’

দিল্লির অনেক বিজেপি নেতা ভেবেছিলেন, ২৪ ঘণ্টা ধরে বিতর্কের পরে ওই শুভেচ্ছা-বার্তা মুছে দেবে রাজস্থান বিজেপি। কিন্তু তাঁদের আশায় জল ঢেলে হিরেন্দ্র বললেন, ‘‘জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে দোষ কোথায়? আমরা তো কংগ্রেসের সচিন পাইলটকেও জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছি।’’

কিন্তু যশবন্ত তো নিজেকে আর বিজেপির নেতা বলেন না? বসুন্ধরার সৈনিকের জবাব, ‘‘সেটি খতিয়ে দেখা যেতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন