হাতে স্বরাষ্ট্র, যোগী কঠোর কসাইখানায়

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নিজের হাতে রেখেই রাজ্যের অবৈধ সব কসাইখানা ও গরু পাচার বন্ধের ফরমান জারি করলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। অ্যান্টি-রোমিও স্কোয়াড গড়ে শহরে শহরে শুরু হয়ে গেল ধরপাকড়ও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৭ ০৩:২৭
Share:

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নিজের হাতে রেখেই রাজ্যের অবৈধ সব কসাইখানা ও গরু পাচার বন্ধের ফরমান জারি করলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। অ্যান্টি-রোমিও স্কোয়াড গড়ে শহরে শহরে শুরু হয়ে গেল ধরপাকড়ও।

Advertisement

দফতর বণ্টন করে আজ মন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু কৃষি ঋণ মাফ নিয়ে কোনও ঘোষণা করতে পারলেন না। ভোট-প্রচারের শেষ পর্বে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেছিলেন, উত্তরপ্রদেশে বিজেপির সরকার এলে, প্রথম বৈঠকের পরই কৃষকদের ঋণ মাফের ঘোষণা করিয়ে ছাড়বেন। সেই প্রতিশ্রুতি রাখা হল না যোগীর।

ঋণ মাফের আর্থিক দায় কী ভাবে মেটাবেন, সেই প্রশ্নে ইতিমধ্যেই দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছেন যোগী। সরকারের আর্থিক সাধ্য সীমিত হলেও প্রশাসনে নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আপস করতে রাজি নন আদিত্যনাথ। উপমুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্যের সঙ্গে টানাটানির পর অমিত শাহের হস্তক্ষেপে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নিজের হাতেই রেখেছেন। মৌর্যকে দিয়েছেন পূর্ত দফতর। অন্য উপমুখ্যমন্ত্রী দীনেশ শর্মাকে শিক্ষা। যোগী মন্ত্রিসভার একমাত্র সংখ্যালঘু সদস্য মোহসিন রাজা সংখ্যালঘু উন্নয়ন ছাড়াও পেয়েছেন বিজ্ঞান দফতরের ভার।

Advertisement

আরও পড়ুন: সক্রিয় রাজনীতির সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না প্রশান্ত

রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির হাল ফেরনো ও মেয়েদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার প্রশ্নে রয়েসয়ে এগোতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী যোগী। আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকের আগেই তিনি পুলিশকে নির্দেশ দেন, সব অবৈধ কসাইখানা বন্ধ করতে হবে। থামাতে হবে গরুর চোরাচালান। সরকারের প্রথম দু’দিনেই কিছু কসাইখানা বন্ধ হয়েছে রাজ্যে। নতুন কোনও ফরমান নয়, নিয়মমাফিক ছাড়পত্র না থাকাকেই তার কারণ বলে দাবি করেছেন স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের কর্তারা। আবার যোগী-রাজের আতঙ্কে নিজেরাই কসাইখানা বন্ধ করে দিয়েছেন, এমন দাবিও করা হচ্ছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে। ঘটেছে মাংসের দোকান পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাও। সামগ্রিক ভাবে রাজ্যের মাংস শিল্পে একটা উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

এ নিয়ে আজ মুখ খুলেছেন অমিত শাহ টিমের সদস্য সিদ্ধার্থনাথ সিংহ ও শ্রীকান্ত শর্মা। দু’জনেই যোগী মন্ত্রিসভার সদস্য। তাঁদের আশ্বাস, বৈধ কসাইখানা বন্ধ করা হচ্ছে, এমনটা নয়। তবে বৈধ কসাইখানা নিয়ম ভাঙলে কড়া ব্যবস্থাই নেওয়া হবে। যদিও একটি সূত্রের খবর, বৈধ হলেও যন্ত্রচালিত কসাইখানা বন্ধের জন্যেও অফিসারদের অ্যাকশন-প্ল্যান বানাতে বলেছেন যোগী। সরকারি ভাবে অবশ্য এর সত্যতা স্বীকার করা হয়নি এখনও।

এ সবের পাশাপাশি দুর্নীতি রোধে ফাইল ট্র্যাকিং ব্যবস্থাও চালু হচ্ছে। কোথায় কোন ফাইল আটকে থাকছে, তা বোঝা যাবে এর মাধ্যমে। কিছুটা হলেও চাপে রাজ্যের আমলারা। যোগীর আর একটি নির্দেশও সাড়া ফেলেছে প্রশাসনে। রাজ্য সচিবালয়ের হাল দেখে যোগীর সাফ নির্দেশ, সরকারি দফতরে আর পান-গুটাখা খাওয়া চলবে না। সরকারি দফতর রাখতে হবে ঝকঝকে। প্রধানমন্ত্রী হয়েই মোদী তাঁর স্বচ্ছতা অভিযান শুরু করেছিলেন ঠিক এই ভাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন