আড়িপাতা নিয়ে কমিশনের চেষ্টা ফলের আগেই, তোপ জেটলির

ভোটের শেষ লগ্নে রাহুল গাঁধী থেকে প্রিয়ঙ্কা বঢরা এখন নরেন্দ্র মোদীর নির্দেশে মহিলার টেলিফোনে আড়িপাতা নিয়ে সরব। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দে আজ জানিয়ে দিলেন, কমিশনের প্রধান হিসেবে এক জন বিচারপতির নাম দিতে ইলাহাবাদ হাইকোর্টের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই নাম এসে গেলে ভোটের ফল ঘোষণার আগেই সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করে দেবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৪ ০৩:১১
Share:

ভোটের শেষ লগ্নে রাহুল গাঁধী থেকে প্রিয়ঙ্কা বঢরা এখন নরেন্দ্র মোদীর নির্দেশে মহিলার টেলিফোনে আড়িপাতা নিয়ে সরব। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দে আজ জানিয়ে দিলেন, কমিশনের প্রধান হিসেবে এক জন বিচারপতির নাম দিতে ইলাহাবাদ হাইকোর্টের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই নাম এসে গেলে ভোটের ফল ঘোষণার আগেই সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করে দেবে। ভোটের শেষ বাজারে কংগ্রেসের এই কৌশল আঁচ করেই নরেন্দ্র মোদীর সেনাপতি আজ ময়দানে নামেন এর জবাব দিতে। তাঁর বক্তব্য, “সরকারের শেষ বেলায় তড়িঘড়ি করে বিভিন্ন পদে নিয়োগ করা হয়েছে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে সে সব নিয়োগ খারিজ করা হবে।”

Advertisement

ইউপিএ সরকার মেয়াদ শেষের আগেই যদি এই কমিশন গঠন করে ফেলতে পারে, তা হলে নতুন সরকার এলেও তদন্ত চলতে থাকবে। আর এটাই বিজেপি-র কাছে অস্বস্তির। তবে কমিশন গড়া বা তদন্তে অভিযোগ প্রমাণ হওয়াটা অনেক পরের কথা, কিন্তু দু’দফার ভোট বাকি থাকতেই কংগ্রেস যে ভাবে মোদীর বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছে সেটাই বেশি ভাবাচ্ছে বিজেপি-কে। কংগ্রেসের শীর্ষ সূত্রেও কবুল করা হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত কমিশন গঠন হোক বা না হোক, ভোটের মধ্যে প্রসঙ্গটি জিইয়ে রেখে মোদীর বিরুদ্ধে প্রিয়ঙ্কা-রাহুলের হাত শক্ত করাই আসল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। কারণ, প্রিয়ঙ্কা তো বটেই, কপিল সিব্বল, শিন্দে থেকে কংগ্রেসের অনেক ছোট-বড় নেতাই এই ঘটনাকে অস্ত্র করে প্রচার চালাচ্ছেন মোদীর বিরুদ্ধে। তাঁদের প্রশ্ন, যিনি এক মহিলার ফোনে আড়িপাতার নির্দেশ দিতে পারেন, তিনি ক্ষমতায় এলে কী করে মহিলাদের নিরাপত্তা দেবেন?

রাজনৈতিক ভাবে এই আক্রমণের মোকাবিলা করতে জেটলি অমৃতসর থেকে ফিরে এ দিন সন্ধেয় দলের সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করেন। তিনি দাবি করেন, ভোট যখন শুরু হয়ে গিয়েছে, সেই সময় এই কমিশন গঠনের কোনও অধিকার নেই কংগ্রেসের। ভোটের মধ্যে একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার কমিশন গড়তে পারে কি না, কিংবা এতে নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙা হবে কি না এই প্রশ্নের ব্যাখ্যায় শিন্দে অবশ্য আজ বলেন, “কমিশন গঠনের ঘোষণা হয়েছিল নির্বাচন শুরুর আগেই। এখন ভোট চললেও আদর্শ আচরণবিধির আওতায় তা পড়বে না।”

Advertisement

জেটলি অবশ্য কেন্দ্রীয় সরকারের এক্তিয়ার নিয়েও প্রশ্নও তুলেছেন এ দিন। তাঁর বক্তব্য, গুজরাত সরকার ইতিমধ্যেই এর তদন্ত শুরু করে দিয়েছে। তাই কেন্দ্রের এক্তিয়ারই নেই পৃথক তদন্ত কমিশন গঠন করার। জেটলি এ-ও উল্লেখ করেন, ইউপিএ সরকার এ পর্যন্ত অনেক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে এই কমিশনের ভার নিতে অনুরোধ করেছে। কেউ রাজি না হওয়াতেই এখন কর্মরত বিচারপতিকে দায়িত্ব দিতে চাইছে। তাতেও কেউ খুব একটা উৎসাহ দেখাচ্ছেন না।

রাহুল প্রচারের আলো কাড়তে ব্যর্থ হওয়ার পর এখন প্রিয়ঙ্কা বঢরা সেই পরিসর দখল করেছেন। নিত্যদিন তিনি মোদীকে বিঁধছেন নানা ভাবে। মহিলা হিসেবে মহিলার ফোনে আড়িপাতার অভিযোগ তুলে সেটি রাজনৈতিক ভাবে আরও প্রাসঙ্গিক করে তুলছেন। বিজেপি নেতৃত্ব বুঝতে পারছেন, ফোনে আড়িপাতার ঘটনায় অমিত শাহ নিরন্তর ‘সাহেব’ নামক এক ব্যক্তির থেকে নির্দেশ নেওয়ার কথা বলেছেন। সেই ‘সাহেব’ আসলে মোদী বলেই অভিযোগ কংগ্রেস নেতাদের। জেটলি আজ বলেছেন, “যাঁর ফোনে আড়িপাতা নিয়ে এত অভিযোগ, তাঁর বা তাঁর পরিবারের কোনও আপত্তি নেই। তাঁদের জবানবন্দিও নেওয়া হয়েছে গুজরাতের কমিশনে।” বিজেপি-র সমস্যা হল, জেটলি যতই মোদীর পক্ষে যুক্তি পেশ করুন, ঘুরেফিরে আড়ি পাতার প্রসঙ্গটিই চর্চায় থেকে যাচ্ছে শেষ দু’দফার ভোটের মুখে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন