রাজ ঠাকরের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপির ঘনিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষোভ কমছে না শিবসেনার। লালকৃষ্ণ আডবাণীর আসন-জটকে ছুতো করে আজ বিজেপিকে ফের এক হাত নিয়েছেন উদ্ধব ঠাকরে।
লালকৃষ্ণ আডবাণীর আসন-জট যখন কাটিয়ে গোটা বিতর্ক যখন মিটিয়ে ফেলেছে বিজেপি, তখনই বিষয়টি খুঁচিয়ে তুলেছেন শিবসেনা প্রধান। দলের মুখপত্র ‘সামনা’য় আডবাণীকে অবজ্ঞা করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এমনও বলা হয়েছে, নরেন্দ্র মোদী যুগের সূচনা হলেও আডবাণী যুগ শেষ হয়ে গিয়েছে বলা যায় না। গত কালই শিবসেনা ঘোষণা করেছিল, মহারাষ্ট্রে বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা থাকলেও রাজ্যের বাইরে কোনও বোঝাপড়া নেই। এই অবস্থায় উত্তরপ্রদেশের কুড়িটি আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছে শিবসেনা। পরিস্থিতি সামাল দিতে আজ বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহ ফোন করেন উদ্ধবকে। উদ্ধব অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, জোটে এর কোনও প্রভাব পড়বে না। উত্তরপ্রদেশে দলের কিছু কর্মী উৎসাহিত হওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
উদ্ধব এটিকে লঘু করে দেখালেও বিজেপির সব চেয়ে পুরনো শরিকের গোঁসার কারণ কী?
বিজেপি সূত্রের মতে, দুই ভাইয়ের লড়াইয়ে মহারাষ্ট্রে বেজায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের। গত লোকসভা নির্বাচনে রাজ ও উদ্ধব একে অপরের বিরুদ্ধে লড়ায় বিজেপি-শিবসেনা জোটকে খেসারত দিতে হয়েছে। মুম্বইয়ের একটি আসনও জিততে পারেনি এই জোট। তাই নরেন্দ্র মোদীর পরামর্শে নিতিন গডকড়ী রাজের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে বিজেপি ও শিবসেনার বিরুদ্ধে না লড়ার অনুরোধ করেন। তাতেই ক্ষুব্ধ শিবসেনা।
মোদীর সঙ্গে রাজের সম্পর্ক বরাবরই ভাল। রাজ মোদীর কথা ভেবে কেবল পুণে ছাড়া অন্য আসনে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রার্থী দেননি। কিন্তু শিবসেনার বিরুদ্ধে বেছে বেছে নিজেদের প্রার্থীকে দাঁড় করিয়েছেন। ফলে, আরও ক্ষুব্ধ হন উদ্ধব।
কোনও ভাবেই রাজের সঙ্গে কোনও সমঝোতায় রাজি নন উদ্ধব। তাঁদের মতে, প্রায় তিন দশকের কাছাকাছি শরিক শিবসেনাকে অবহেলা করে রাজের সঙ্গে পরোক্ষ সমঝোতা করছে বিজেপি। তাই এখন বিজেপি ও মোদীকেও পাল্টা বেগ দিতে উঠেপড়ে লেগেছেন তিনি। মহারাষ্ট্রের বাইরে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রার্থী দেওয়া থেকে বিজেপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব উস্কে দেওয়া-সবই করছেন শিবসেনা প্রধান। বিজেপি ও শিবসেনা উভয় দলের নেতৃত্বই বলছেন, জোটে এর কোনও প্রভাব পড়বে না। কিন্তু ভোটের মুখে এমন প্রকাশ্য টানাপড়েন অস্বস্তি তৈরি করেছে দুই শিবিরেই। কারণ, বিজেপির বিরোধী দলগুলিও এখন এর সুযোগ নিয়ে আসরে নেমে পড়েছে।