সাত দিনও কাটেনি। রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান কলকাতায় এসেছিলেন। তিন রেলের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। আলোচনার অধিকাংশ জুড়ে ছিল রেলে পরিষেবার মান উন্নত করা। এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা দেওয়া। কিন্তু তার পরেও প্রায় নিত্যদিনই ভুগতে হচ্ছে যাত্রীদের। দুর্ভোগের সেই তালিকায় শেষতম সংযোজন ডাউন করমণ্ডল এক্সপ্রেস। যন্ত্র-বিভ্রাটে মঙ্গলবার সেটি পথে এক ঘণ্টারও বেশি আটকে ছিল। আর ওই এক ঘণ্টা মাঝরাস্তায় রোদের মধ্যে আটকে থাকা যাত্রীদের নাভিশ্বাস ওঠে তীব্র গরমে।
রবিবার রাতে শিয়ালদহমুখী পদাতিক এক্সপ্রেসের একটি কামরার বাতানুকূল যন্ত্র খারাপ হয়ে যাওয়ায় সারা রাত কষ্ট পেয়েছে কলকাতার প্রায় ৪৫ জন চিকিৎসকের একটি দল। ওই চিকিৎসকেরা আড়াই লক্ষ টাকা দিয়ে কামরাটি সংরক্ষণ করেছিলেন। মঙ্গলবার ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়ায় মাঝপথে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আটকে থাকে চেন্নাই থেকে আসা হাওড়ামুখী করমণ্ডল এক্সপ্রেস। জ্যৈষ্ঠের এই হাঁসফাঁস গরমে মাঝরাস্তায় আটকে যাওয়ায় যাত্রীদের চূড়ান্ত দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। যদিও রেলের কর্তারা বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দিতে চাননি। তাঁদের বক্তব্য, যান্ত্রিক ত্রুটি হতেই পারে। মাটির উপরের রেলে যখন ভোগান্তি চলছে, পিছিয়ে থাকছে না পাতালরেলও। এ দিন শ্যামবাজার ও শোভাবাজার স্টেশনের মাঝখানে লাইন ভেঙে মেট্রো চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে যায়।
ঠিক কী হয়েছিল করমণ্ডলে?
এ দিন সকালে বাখরাবাদ ও নারায়ণগড় স্টেশনের মাঝামাঝি হঠাৎই ওই ট্রেনের ইঞ্জিন বিগড়ে যায়। সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা আটকে থাকে ট্রেনটি। যাত্রীরা বিক্ষোভ দেখান। পরে খড়্গপুর থেকে অন্য ইঞ্জিন পাঠানো হয়। তার পরে রওনা দেয় ট্রেনটি।
রেল ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ আচমকাই দাঁড়িয়ে পড়েছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। পরে যাত্রীরা জানতে পারেন, ট্রেনের ইঞ্জিন বেঁকে বসেছে। মেরামতি শেষ হয়ে ফের কখন চলবে ট্রেন, শুরু হয় প্রতীক্ষা। কিন্তু আধ ঘণ্টাতেও ট্রেন না-ছাড়ায় শুরু হয় বিক্ষোভ। খবর পৌঁছয় খড়্গপুর রেল ডিভিশনে। সেখান থেকে অন্য একটি ইঞ্জিন পাঠানো হয়। বেলা ১১টা ২০ মিনিটে ট্রেনটি খড়্গপুরে পৌঁছয়। যদিও নির্দিষ্ট সময় ছিল সকাল ৯টা ৩৮ মিনিট। খড়্গপুরের ডিআরএম গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দীর্ঘ যাত্রাপথে গরমে ইঞ্জিন বিকল হতেই পারে। এ ক্ষেত্রে তা-ই হয়েছে বলে অনুমান।”