পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত লালু প্রসাদের সঙ্গে নির্বাচনী আঁতাত নিয়ে কংগ্রেসকে নিশানা করলেন নরেন্দ্র মোদী। একই সঙ্গে বিঁধলেন রাহুল গাঁধীকে।
আজ কোডারমার ঝুমরি তিলাইয়ায় ভোটের প্রচার সভায় বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী বলেন, “শাহজাদে (রাহুল) বলছেন, কোটি কোটি নাগরিককে তিনি দেশের পাহারাদার হিসেবে চান। কিন্তু যাঁর (লালু) সঙ্গে কংগ্রেস হাত মিলিয়েছে, তিনি কি কোনও ভাবে বিশ্বাসযোগ্য? কয়েক দিন আগেই জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।” এ প্রসঙ্গে, আদর্শ কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত কংগ্রেস নেতা অশোক চহ্বানের নামও মোদী উল্লেখ করেন। রাহুলকে খোঁচা দিয়ে বলেন, “এঁদের নিয়েই কি আপনি দেশে নজরদারি চালাবেন?” এর পরই কিছুটা ব্যঙ্গের সুরে মোদীর মন্তব্য, “আমি এমন কোনও বিড়াল দেখিনি, যাকে দুধের বাটির পাহারায় রাখা হয়েছে। কংগ্রেস দেশের জন্য এমন রক্ষককেই খুঁজছে।” গত কালই ঔরঙ্গাবাদের সভায় মোদীকে কটাক্ষ করে রাহুল বলেছিলেন, “দেশে কোনও এক জন চৌকিদার নয়, কোটি কোটি পাহারাদার প্রয়োজন।”
কংগ্রেসের দলীয় প্রতীক নিয়েও মন্তব্য করেন মোদী। প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধীর একটি কথা উদ্বৃত করে তিনি বলেন, “তিনি (রাজীব) বলেছিলেন, এক টাকার মধ্যে মাত্র ১৫ পয়সা শেষে মানুষের হাতে পৌঁছায়। এটাই ‘হাতের’ জাদু!”
লোকসভা ভোটে বিজেপি-র জয়লাভ এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা বলে ঘোষণা করেন মোদী। একই সঙ্গে বলেন, “বিজেপি যাতে ৩০০টির বেশি আসনে জিততে পারে, তা সুনিশ্চিত করুক ভোটাররা। কেন্দ্রে এক দলের শক্তিশালী সরকার থাকলে, শক্ররাও সমীহ করে চলবে।” প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ ঝাড়খণ্ডের অনুন্নয়ন নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেন মোদী। তিনি বলেন, “কেন্দ্রের ক্ষমতা পেলে, এ রাজ্য থেকে দারিদ্র্য দূর করবই।”
এ দিনই বিহারের নওয়াদার সমাবেশে মোদী বলেন, “শাসক নয়, সেবক হিসেবে আমাকে দিল্লিতে পাঠান। ৬০ বছর নয়, ৬০ দিন সময় দিন। কথা দিচ্ছি, দুর্নীতির কালো টাকা বিদেশি ব্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার করে, দেশে গরিবদের উন্নয়নের কাজে লাগাব।” সেখানেও রাহুলকে বিঁধে তিনি বলেন, “উনি এখন বলছেন, তাঁর কাছে দেশের উন্নয়নের পরিকাঠামোর নকশা রয়েছে। ওই নকশা তৈরি করতে কি ৬০ বছর সময় লাগল?” মোদীর সমালোচনার মুখে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও। সরাসরি নাম না-করে তিনি বলেন, “এখন তাঁর লক্ষ্য হল যে কোনও ভাবে গুজরাতকে হারানো।”
মোদীর ওই সভার কয়েক ঘণ্টা আগে নওয়াদা শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে, নীতীশ এক জনসভায় বলেন, “যিনি দেশকে ভাগ করতে চান, তিনি কী ভাবে দেশ শাসন করবেন।” মোদী ও নীতীশ কুমারকে আক্রমণ করেছেন লালুও। তিনি বলেছেন, “ওঁরা দু’জনই খুব ভাল বন্ধু। ইট বা জুতো ছুড়ে নয়, ভোট-বাক্সেই ওঁদের জোরদার ধাক্কা দিন।”