জঙ্গি দলে যোগ দিতে দেশ ছেড়ে যুবক নিহত ইরাকে

জঙ্গি দলে যোগ দিতে পরিবারের কাউকে না বলে ইরাকে পালিয়েছিল মহারাষ্ট্রের চার যুবক। তাদের মধ্যে এক জন, আরিফ ফয়াজ মাজিদের মৃত্যু হয়েছে বলে ওই যুবকের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। মাস তিনেক আগে, মে মাসের ২৩ তারিখ বাড়ি ছাড়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আরিফ মাজিদ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৪ ০২:৫৫
Share:

জঙ্গি দলে যোগ দিতে পরিবারের কাউকে না বলে ইরাকে পালিয়েছিল মহারাষ্ট্রের চার যুবক। তাদের মধ্যে এক জন, আরিফ ফয়াজ মাজিদের মৃত্যু হয়েছে বলে ওই যুবকের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

মাস তিনেক আগে, মে মাসের ২৩ তারিখ বাড়ি ছাড়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আরিফ মাজিদ। তার সঙ্গেই বাগদাদের বিমানে উঠেছিল ফাহাদ তনভির শেখ, আমন নইম এবং শাহিন ফারুকি টাঙ্কি। এরা প্রত্যেকেই কল্যাণের দুধ-নাকা গোবিন্দওয়াড়ি এলাকার বাসিন্দা। আর এদের স্বপ্নটাও ছিল এক। ইরাকে গিয়ে সুন্নি জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসআইএস (ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া)-এর হয়ে লড়াই করা।

সেই মতো বাড়ির কাউকে না-জানিয়ে এরা চার জনই মুম্বই থেকে ইরাক পাড়ি দেয়। বাগদাদ পৌঁছে বাড়ির লোককে ফোন করেছিল নিহত আরিফ। তখন অবশ্য সে বলেছিল, চাকরির খোঁজে ইরাকে গিয়েছে সে। পরে মাকে লেখা একটি চিঠি পড়ে আরিফের আসল উদ্দেশ্য জানতে পারেন তার বাড়ির লোকজন।

Advertisement

ওই চার যুবকের এক জন ফাহাদ শেখের কাকা ইফতিকার খান আজ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আরিফের মৃত্যুর খবর তাঁরা পেয়েছেন শাহিন ফারুকির পরিবারের কাছ থেকে। গত মঙ্গলবার শাহিন ফোন করেছিল তার পরিবারকে। তখনই সে জানায়, ইরাকে একটি বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে আরিফের। তার পরিবার যেন আরিফের পরিবারকে সেই খবর জানিয়ে দেয়। শাহিন ফোনে বলেছে, “আরিফ নিজের জীবন ত্যাগ করেছে। ও এখন শহিদ।”

তবে ইফতিকার খান জানিয়েছেন যে, শাহিনের বক্তব্যের সত্যতা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। কারণ ইরাক পুলিশের তরফে আরিফের পরিবারকে সরকারি ভাবে এ বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। আর পুরো বিষয়টা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন আরিফের পরিবারের লোকজনও। যদিও আজ বিকেলে আরিফের জন্য বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করেছিল তার পরিবার। তাতে যোগ দিতে প্রায় আড়াইশো লোকও এসেছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরিবারের এক ব্যক্তি শুধু বলেছেন, “আইএসআইএস আরিফকে শহিদ আখ্যা দিয়েছে।”

আরিফ নিখোঁজ হওয়ার পর তাকে ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের দ্বারস্থ হয়েছিল তার পরিবার। সেটা জুলাইয়ের ঘটনা। আরিফের বাবার বক্তব্য ছিল, যে বা যারা আরিফকে জঙ্গি গোষ্ঠীতে যোগ দিতে বাধ্য করেছে, তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করুক পুলিশ।

এর পরই জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) এবং মুম্বই পুলিশের অপরাধ দমন শাখা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে। আরিফ-সহ ওই চার যুবকের বাড়ি গিয়ে কম্পিউটার ও পেন ড্রাইভ ঘেঁটে তারা বেশ কিছু তথ্যও সংগ্রহ করে। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ইন্টারনেটের মাধ্যমে আরিফদের জঙ্গি দলে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। তবে ওই চার যুবক যে আইএস-এর হয়েই লড়ছে সে বিষয়ে এখনই তাঁরা নিশ্চিত নন। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে চাইছেন না তাঁরা। মুম্বই পুলিশের উচ্চ পদস্থ এক অফিসারও জানিয়েছেন, শাহিনের ফোনের ভিত্তিতে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে চাইছেন না তাঁরা। কারণ ওই খবরের সত্যতা স্বীকার করার কোনও উপায় তাঁদের হাতে নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন