দ্বিতীয় পর্যায়ের ভোটে মণিপুর-ইনার লোকসভা আসনে ভোট পড়ল ৭৫ শতাংশ।
আজ সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৪টা অবধি ১২৫৬টি বুথে ভোট গ্রহণ চলে। মণিপুরে মাওবাদীরা ভোট বয়কট করেছিল। কাল রাজ্যে বনধও ডাকে তারা। নাশকতার সঙ্গে ঘর করা মণিপুরে ভোটপর্ব নির্বিঘ্নে চালাবার জন্য ১৩৬ কোম্পানি সশস্ত্র বাহিনী নিয়োগ করা হয়। ১২৫৬টির মধ্যে ৮৩২টি বুথ সংবেদনশীল ও ৭৮টি অতি সংবেদনশীল বলে চিহ্নিত করা হয়। তবে ভোটপর্ব ছিল শান্তিপূর্ণ।
ইনার কেন্দ্রে মোট প্রার্থী ছিলেন আট জন। তবে লড়াইয়ে ছিলেন বর্তমান কংগ্রেস সাংসদ টি মেইনা, বিরোধী জোট সমর্থিত সিপিআই প্রার্থী এম নর, আম আদমি পার্টির প্রার্থী কে ইবোমচা, তৃণমূল প্রার্থী সারাংথেম মানাওবি এবং বিজেপি প্রার্থী আর কে রঞ্জন। অবশ্য ভোটের আগেই মণিপুরের তৃণমূল কংগ্রেস ও আপে ভাঙন ধরেছে। একমাত্র মহিলা প্রার্থী ওইনাম ইন্দিরা মহিলা ভোটারদের শুভবুদ্ধির উপরে নির্ভর করে আছেন। ইনার কেন্দ্রে মোট ভোটার ৮ লক্ষ ৫৩ হাজার ৬৯ জন। এর মধ্যে মহিলা ভোটারই বেশি, ৪ লক্ষ ৩৭ হাজার ৭৫৫ জন। এ দিকে, সংঘর্ষবিরতিতে থাকা ৭টি জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের ভোটদানের ব্যাপারে প্রথমে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন আপত্তি জানিয়েছিল। পরে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার নবকিশোর সিংহ জানান, ইনার কেন্দ্রে সরকার স্বীকৃত শিবিরে থাকা ৫৮৪ জন জঙ্গির জন্য ভোটের ব্যবস্থা হবে। কিন্তু আজ ওই জঙ্গি শিবিরের কোনওটিতে ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়নি। নির্বাচন কমিশনের ঘোষণার পরেও ভোট দিতে না-পারায় জঙ্গিরা বিক্ষোভ দেখান। তারা বলেন, ‘মূল স্রোতে ফেরার পরে, নির্বাচন কমিশন যেখানে এমন প্রতারণা করল, সেখানে ভারত সরকারের কাছে আর কী আশা করা যায়? এ বিষয়ে নবকিশোর বলেন, “জঙ্গিদের ভোটাধিকার প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন থেকে চূড়ান্ত লিখিত সিদ্ধান্ত হাতে না-পাওয়াতেই জঙ্গি শিবিরে বুথ খোলা যায়নি।”
আফস্পার বিরুদ্ধে ২০০০ থেকে লড়াই চালানো মানবাধিকার নেত্রী ইরম শর্মিলা চানুকেও ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। তিনি ভোট দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও, যে হেতু তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করার অপরাধে বন্দি, তাই নির্বাচন কমিশন তাঁকে ভোট দেওয়ার অনুমতি দেয়নি। মণিপুরে সাধারণত দিনে ৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। ভোটের দিনেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে নির্বাচন কমিশন সব বুথে দু’টি করে ব্যাটারি চালিত বাতি বরাদ্দ করে। তাতেই কাজ চালানো হয়। সন্ধ্যা ৬টা অবধি পাওয়া খবর অনুযায়ী, সব চেয়ে বেশি ভোট পড়ে বিষ্ণুপুর জেলার নামবল (৮৪.৭১%) ও থৌবাল জেলার থৌবাল কেন্দ্রে (৮৫.৬২%)। সব চেয়ে কম ভোট পড়েছে বিষ্ণুপুরের মইরাং (৪৭.৩১%) ও পশ্চিম ইম্ফলের লামসাং (৩৪.৫১%) কেন্দ্রে। মোট ভোটদানের হার প্রায় ৭০ থেকে ৭৫%। আউটার কেন্দ্রে এই হার ছিল ৭৮%।