জয়া-বাম সম্পর্কে চিড়, বিপাকে তৃতীয় ফ্রন্ট

লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার দিনই ফের প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল বামেদের তৃতীয় ফ্রন্ট। প্রকাশ কারাটদের বিকল্প জোটের গুরুত্বপূর্ণ শরিক জয়ললিতার সঙ্গেই ধাক্কা খেল বামেদের আসন সমঝোতা। এক মাস আগে সিপিএমের প্রকাশ কারাট, সিপিআইয়ের এ বি বর্ধন-সুধাকর রেড্ডিরা চেন্নাইয়ে গিয়ে এডিএমকে নেত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে ঘোষণা করেছিলেন, তামিলনাড়ুতে এডিএমকে-র সঙ্গে বামেদের নির্বাচনী সমঝোতা হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৪ ০৮:৪৭
Share:

লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার দিনই ফের প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল বামেদের তৃতীয় ফ্রন্ট।

Advertisement

প্রকাশ কারাটদের বিকল্প জোটের গুরুত্বপূর্ণ শরিক জয়ললিতার সঙ্গেই ধাক্কা খেল বামেদের আসন সমঝোতা। এক মাস আগে সিপিএমের প্রকাশ কারাট, সিপিআইয়ের এ বি বর্ধন-সুধাকর রেড্ডিরা চেন্নাইয়ে গিয়ে এডিএমকে নেত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে ঘোষণা করেছিলেন, তামিলনাড়ুতে এডিএমকে-র সঙ্গে বামেদের নির্বাচনী সমঝোতা হবে। ঘোষণা হয়ে গেলেও সমঝোতা আর হয়নি। বাম নেতাদের অভিযোগ, জয়ললিতা তাঁর ‘ব্যক্তিগত বন্ধু’ নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে জোট বাঁধার রাস্তা খুলে রাখতেই সিপিএম, সিপিআইকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না।

সমস্যাটা ঠিক কোথায়?

Advertisement

তামিলনাড়ুর ৩৯টি আসনের মধ্যে সিপিএম ও সিপিআইয়ের হাতে একটি করে আসন রয়েছে। কিন্তু এ বার দুই বাম দল তিনটি করে, মোট ছয়টি আসন চেয়েছে জয়ললিতার কাছে। জয়ললিতা দুই বাম দলের জন্য দু’টির বেশি আসন বেশি ছাড়তে রাজি নন। ১৫ দিন ধরে এখানেই আটকে রয়েছে আলোচনা। এ দিকে জয়ললিতা আগেই ৩৯টি আসনের সব ক’টিতে নিজের দলের প্রার্থী দিয়ে দিয়েছেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতা হলে, সেই আসনগুলি থেকে তিনি প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেবেন। কিন্তু এখন বামেরা দেখছে, তাদের হাতে থাকা আসনগুলি-সহ সর্বত্রই জয়ললিতার দল হইহই করে প্রচারে নেমে পড়েছে।

পরিস্থিতি বুঝে বৈঠকে বসেছে তামিলনাড়ুর সিপিএম ও সিপিআইয়ের রাজ্য কমিটি। তার পর দুই দল বৈঠক করবেন বলে ঠিক হয়েছে। কিন্তু আসন সমঝোতা যে থমকে গিয়েছে, তা দু’দলই মানছে। সিপিএমের তামিলনাড়ুর রাজ্য সম্পাদক জি রামকৃষ্ণন বলেন, “১৫ দিন ধরে আলোচনার পরেও বিষয়টি এক চুল এগোয়নি। আমরা সিপিআই নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করব। তার পরেই ঠিক হবে, সমঝোতা টিঁকবে কি না।”

বাম নেতারা অবশ্য মনে করছেন, শুধুই আসন নিয়ে সমস্যা নয়। জয়ললিতা এখন নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপির দিকেও ঝুঁকছেন। আর সেই রাস্তা খোলা রাখতেই বামেদের গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এডিএমকে সূত্র বলছে, গত সপ্তাহে দিল্লিতে তৃতীয় ফ্রন্টের বৈঠকে জয়ললিতা তাঁর দলের নেতা থাম্বিদুরাইকে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু তৃতীয় ফ্রন্ট শেষ পর্যন্ত কী চেহারা নেবে, তা নিয়ে নেত্রী এখনও সংশয়ে। তাই ভোটের পরে এনডিএ-র সঙ্গে হাত মেলানোর রাস্তাও খোলা রাখতে চাইছেন তিনি। বাম নেতারা বলছেন, যে বামেরা তাঁর রাজ্যে নরেন্দ্র মোদীর কড়া সমালোচনা করুন, জয়ললিতা সেটা চাইছেন না।

সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক ডি পান্ডিয়ানের সঙ্গে জয়ললিতার সম্পর্ক ভাল। জট কাটানোর চেষ্টা করছেন তিনি। কিন্তু বাম নেতারা মনে করছেন, একমাত্র প্রকাশ কারাট বা এ বি বর্ধন ফের চেন্নাইয়ে গিয়ে জয়ললিতার সঙ্গে কথা বললে তবেই কোনও সমাধান বার হতে পারে। প্রকাশ কারাট এখন দক্ষিণেই রয়েছেন। কেরল রাজ্য কমিটির বৈঠকে থাকছেন তিনি। তৃতীয় ফ্রন্ট রক্ষা করতে তিরুঅনন্তপুরম থেকে কারাট এখন চেন্নাইয়ের বিমান ধরেন কি না, সেটাই এখন দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন