টিম নিয়ে বিরোধ মা ও ছেলের, গুঞ্জন কংগ্রেসে

রাহুল গাঁধী কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে তুলে নিতে চাইবেন, তাতে আপত্তি করবেন কে? তাঁর কাজের ধরন নিয়ে দলের একাংশে অসন্তোষ থাকলেও, তাঁর বিকল্প যে কেউ নেই তাও বাস্তব। কিন্তু কংগ্রেস সূত্রের খবর, দলের রাশ পুরোপুরি নিতে চেয়ে রাহুল যে টিম বানাতে চাইছেন, বর্ষীয়ান নেতাদের সঙ্গে বিরোধ রয়েছে তা নিয়েও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৪১
Share:

রাহুল গাঁধী কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে তুলে নিতে চাইবেন, তাতে আপত্তি করবেন কে? তাঁর কাজের ধরন নিয়ে দলের একাংশে অসন্তোষ থাকলেও, তাঁর বিকল্প যে কেউ নেই তাও বাস্তব। কিন্তু কংগ্রেস সূত্রের খবর, দলের রাশ পুরোপুরি নিতে চেয়ে রাহুল যে টিম বানাতে চাইছেন, বর্ষীয়ান নেতাদের সঙ্গে বিরোধ রয়েছে তা নিয়েও। এমনকী সনিয়ার ঘনিষ্ঠ কিছু বর্ষীয়ান নেতার দাবি, এ নিয়ে বিরোধ তৈরি হয়েছে মা-ছেলেতেও। সংসদ চলাকালীন রাহুলের ‘ছুটি’ নেওয়ার সেটাও নাকি একটা কারণ!

Advertisement

রাহুলের ঘনিষ্ঠদের অবশ্য পাল্টা দাবি, তাঁর অসন্তোষ গুটি কয়েক ওই কংগ্রেস নেতাকে নিয়েই। সনিয়া গাঁধীকে তিনি পরিষ্কার জানিয়েছেন, সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে এই নেতাদের সরিয়ে তিনি যদি নিজের পরিচ্ছন্ন টিম তৈরি করতে না পারেন, তা হলে বাড়তি দায়িত্ব আদৌ নেবেন কিনা ভেবে দেখবেন। দল যে ভাবে চলছে চলুক।

প্রশ্ন হল, কী ধরনের টিম বানাতে চাইছেন রাহুল? এবং বিরোধ কাদের নিয়ে?

Advertisement

কংগ্রেস সূত্রে খবর, দলের মিডিয়া বিভাগের প্রধান অজয় মাকেনকে তাঁর তথা পরবর্তী কংগ্রেস সভাপতির রাজনৈতিক সচিব করতে চাইছেন রাহুল। যার অর্থ ওই পদে গত এক দশক ধরে জাঁকিয়ে বসে থাকা আহমেদ পটেলের চাকরি যাবে। সেই সঙ্গে দিগ্বিজয় সিংহ, জনার্দন দ্বিবেদীর মতো নেতাদের সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে সরাতে চাইছেন রাহুল।

কিন্তু আহমেদ পটেল-জনার্দনরা সনিয়া গাঁধীকে বোঝাচ্ছেন, এ হল চূড়ান্ত অপরিণামদর্শিতা। কংগ্রেসে সনিয়া জমানার আগে দলীয় সভাপতির রাজনৈতিক সচিব পদটাই ছিল না। আহমেদ পটেলের আগে সেই দায়িত্ব সামলেছেন উত্তরপ্রদেশের পোড়খাওয়া ব্রাহ্মণ নেতা জিতেন্দ্র প্রসাদ। বর্ষীয়ানদের মতে, তুলনায় মাকেন রাজনৈতিক ওজনে হালকা। এমনকী ঘরোয়া আলোচনায় তাঁরা এও দাবি করছেন, রাহুলের এই ইচ্ছায় সায় দিচ্ছেন না সনিয়াও।

যদিও রাহুলের ঘনিষ্ঠদের মত, দল ও সংবাদমাধ্যমে ভুল ছবি তুলে ধরতে চাইছেন আহমেদ পটেল। রাহুলের প্রধান রাগ তাঁর উপর। লোকসভা ভোটের আগেই রাহুল মহারাষ্ট্র, অসম ও হরিয়ানায় মুখ্যমন্ত্রী বদল করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ান আহমেদ পটেল। এমনকী কিছু রাজ্যে প্রদেশ সভাপতি বদলেও বাধা দিয়েছেন তিনি। রাহুলের অনুগামীদের মতে, সনিয়া গাঁধীকে বিভ্রান্ত করে দল চালিয়েছেন আহমেদ পটেল। রাহুল যে রাজ্যেই গিয়েছেন আহমেদ পটেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ শুনেছেন। তা ছাড়া দিগ্বিজয় সিংহ, জনার্দন দ্বিবেদীদের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ রয়েছে রাজ্যস্তর থেকে। বিশেষ করে মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা বার বার রাহুলকে জানিয়েছেন, দিগ্বিজয়ের কারণেই ওই রাজ্যে কংগ্রেসের দুর্দশা।

কংগ্রেসের এক তরুণ প্রজন্মের নেতা ও সাংসদ আজ জানান, সনিয়া গাঁধীও হয়তো বুঝতে পারছেন রাহুলের কথায় যুক্তি রয়েছে। কিন্তু সনিয়া এও বুঝতে পারছেন, যে সব নেতাকে নিয়ে রাহুল টিম সাজাতে চাইছেন তাঁদের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। কারণ, মধুসূদন মিস্ত্রি, সি পি জোশী বা মোহনপ্রকাশদের মতো রাহুলের লোকেদেরও ব্যর্থতার তালিকা দীর্ঘ।

আপাতত এপ্রিল মাসে কংগ্রেসের অধিবেশন ডাকার কথা ভাবা হয়েছে। কিন্তু টিম রাহুল গঠন নিয়ে জটিলতা দ্রুত না কাটলে তা পিছিয়ে জুলাই বা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গড়াতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন