ডিজিটাল-যোগে গতি আনতে উদ্যোগী মোদী

গ্রাম পঞ্চায়েতের দফতরে গেলেই আধার কার্ড কিংবা প্যান কার্ড। চাকরির আশায় এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে নাম লেখানো কিংবা জমির রেজিস্ট্রেশনও পঞ্চায়েতের দফতরে বসেই। গ্রামের মানুষের দোরগোড়ায় যাবতীয় সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দিতেই ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ প্রকল্প ঘোষণা করেছিল মোদী সরকার। যার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল দেশের প্রায় আড়াই লক্ষ গ্রাম পঞ্চায়েতকে অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে জুড়ে দেওয়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৫ ০৩:২৬
Share:

গ্রাম পঞ্চায়েতের দফতরে গেলেই আধার কার্ড কিংবা প্যান কার্ড। চাকরির আশায় এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে নাম লেখানো কিংবা জমির রেজিস্ট্রেশনও পঞ্চায়েতের দফতরে বসেই।

Advertisement

গ্রামের মানুষের দোরগোড়ায় যাবতীয় সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দিতেই ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ প্রকল্প ঘোষণা করেছিল মোদী সরকার। যার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল দেশের প্রায় আড়াই লক্ষ গ্রাম পঞ্চায়েতকে অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে জুড়ে দেওয়া। তা হলে সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া যাবে। কিন্তু গত কয়েক মাসে যে ভাবে এই প্রকল্পের কাজ এগিয়েছে, তাতে মোটেই খুশি নন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পশ্চিমবঙ্গও ব্যতিক্রম নয়। রাজ্যেও অপটিক্যাল ফাইবার পাতার কাজ ধীর গতিতে এগোচ্ছে।

ক্যাবিনেট সচিব অজিত শেঠের নেতৃত্বে একটি শীর্ষ স্তরের কমিটি এই প্রকল্পের অগ্রগতি দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে। সম্প্রতি ওই কমিটির পর্যালোচনায় দেখা গিয়েছে, শ্লথ গতিতে অপটিক্যাল ফাইবার পাতার কাজ এগোচ্ছে। ক্যাবিনেট সচিবের রিপোর্ট পেয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেন, ২০১৬-র ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব গ্রাম অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে জুড়ে দেওয়ার কাজ শেষ করতে হবে। কাজের অগ্রগতি দেখতে আগামী সপ্তাহে ফের বৈঠকে বসবেন মোদী।

Advertisement

কতখানি পিছিয়ে ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’-র কাজ? যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের বক্তব্য, গোটা দেশে ২ লক্ষ ৪৪ হাজার ৭২৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। এর মধ্যে ৯৭ হাজার ৪৮০টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে প্রথম দফায় অপটিক্যাল ফাইবার জালে জুড়ে দেওয়ার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। পুরো প্রকল্পের খরচ ১.১৩ লক্ষ কোটি টাকা। যার মধ্যে সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতে অপটিক্যাল ফাইবারের জাল ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ব্যয় হবে ৩০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাত্র ১,২৭৫টি গ্রামে কাজ শুরু হয়েছে। গোটা দেশের মতো পশ্চিমবঙ্গেও একই হাল। রাজ্যের ৩,৩৫৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে প্রথম দফায় ২,৬৪২টি গ্রাম পঞ্চায়েতে কাজ হওয়ার কথা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মাত্র ৩৮টি গ্রামে কাজ শুরু হয়েছে।

এই অপটিক্যাল ফাইবার পাতা হলে যাতে ‘রাইট অব ওয়ে’ কর আদায় করা না হয়, সে জন্য কেন্দ্র এর মধ্যেই রাজ্যগুলিকে বুঝিয়ে বলেছে, গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে ব্রডব্যান্ড পৌঁছলে রাজ্যের যাবতীয় পরিষেবাও গ্রামের মানুষের হাতের মুঠোয় চলে আসবে। সে জন্য অধিকাংশ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই ওই কর তুলে দিতে সম্মত হয়েছেন। ফলে বাড়তি অর্থের বোঝা চাপেনি প্রকল্পের ঘাড়ে। তবু কাজ না এগোনোর কারণ মূলত লাল ফিতের ফাঁস।

গতি বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। ঠিক হয়েছে, আগামী বছরের ৩১ মার্চের মধ্যে দেড় লক্ষ গ্রাম পঞ্চায়েতে ইন্টারনেট পরিষেবা পৌঁছে দিতে হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে বাকি এক লক্ষ গ্রাম পঞ্চায়েতে কাজ সেরে ফেলতে হবে।

যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, “আমরাই গ্রাম পঞ্চায়েত পর্যন্ত অপটিক্যাল ফাইবার পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছি।” রবিশঙ্করের কথায়, “জাতীয় অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক তৈরি করে তা চালানো ও দেখাশোনার জন্য ভারত ব্রডব্যান্ড নিগম নামের একটি পৃথক সংস্থা তৈরি হয়েছে। তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিএসএনএল, রেলটেল ও পাওয়ার গ্রিড নিগমও কাজ করছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন