ত্রিপুরায় তৃণমূলের সঙ্গে জোট ভাঙল গ্রামীণ কংগ্রেস

লোকসভা ভোটের দিন ঘোষণার পরই ত্রিপুরায় ‘অবাম মহাজোট’ বড় ধাক্কা খেল। শাসক বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে ‘নিঃশর্ত’ সমর্থনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করল ত্রিপুরা প্রগতিশীল গ্রামীণ কংগ্রেস।

Advertisement

আশিস বসু

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৪ ০৯:৫২
Share:

লোকসভা ভোটের দিন ঘোষণার পরই ত্রিপুরায় ‘অবাম মহাজোট’ বড় ধাক্কা খেল।

Advertisement

শাসক বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে ‘নিঃশর্ত’ সমর্থনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করল ত্রিপুরা প্রগতিশীল গ্রামীণ কংগ্রেস। আজ দলের সভাপতি সুবল ভৌমিক এ কথা জানিয়ে বলেন, ‘‘তৃণমূল-নেত্রীর অগণতান্ত্রিক মনোভাবের প্রতিবাদেই আমরা এ পথে এগিয়েছি। লোকসভা ভোটে দলীয় প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।’’ আপাতত ‘একলা চলো’ নীতিতেই এগোবে গ্রামীণ কংগ্রেস।

সুবলবাবুর বক্তব্য, কখনও বিজেপি, কখনও কংগ্রেস বা মুসলিম সংগঠন জমিয়তে উলেমায়ে হিন্দ নেতা সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর সঙ্গে আঁতাঁত গড়েছেন মমতা। প্রয়োজন মিটলেই তিনি সেই জোটের বিরুদ্ধে গিয়েছেন। গ্রামীণ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘আমাদের সঙ্গে ভবিষ্যতে তা-ই করতে চেয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ভোটের আগেই তা বোঝা গিয়েছে। সে কারণেই জোট ভাঙতে বাধ্য হলাম।’’

Advertisement

ত্রিপুরার জন্য তৃণমূল প্রার্থীর নাম ঘোষণার আগে, রাজ্যের জোট শরিককে তা না-জানানোয় ক্ষুব্ধ গ্রামীণ কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, এ ভাবে জোট-রাজনীতি হতে পারে না। সুবলবাবু জানান, তৃণমূলের এই স্বৈরাচারী সিদ্ধান্তে গ্রামীণ কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকদের ‘আত্মমর্যাদা’য় আঘাত লেগেছে। তাঁর কথায়, ‘‘কলকাতার তৃণমূল নেতৃত্ব বা নয়াদিল্লির কংগ্রেস নেতারা ত্রিপুরায় সিপিএমের স্বৈরাচারী শাসন দূর করতে পারবেন না। রাজ্যের মানুষ বুঝতে পেরেছেন, এখানে প্রকৃত অবাম রাজনৈতিক শক্তি কে বা কারা।’’ গ্রামীণ কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়েছে, পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থী হবেন সভাপতি সুবল ভৌমিক। রাজ্য কমিটির বৈঠকে আজই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ত্রিপুরা পূর্ব (সংরক্ষিত) লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম আগামী সপ্তাহে ঘোষণা হবে।

গ্রামীণ কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনায় সরব ত্রিপুরা প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান রতন চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, ‘‘বাম-বিরোধী রাজনীতি করি বললেই কি তা করা যায়? নীতিগত অবস্থান ঠিক না-থাকলে যে কেউ, যখন তখন যে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। গ্রামীণ কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত আদতে অবাম শক্তিকে দুর্বল করতে পারে।’’ রতনবাবু বলেন, ‘‘আজ তৃণমূলকে কেন উনি কাঠগড়ায় তুলছেন বোঝা যাচ্ছে না। জোট রাজনীতির নিয়ম মেনেই দলনেত্রী ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।” তিনি জানান, ২৫ ফেব্রুয়ারি আগরতলার জনসভায় রাজ্যে অবাম জোটের শক্তি বৃদ্ধির পক্ষে সওয়াল করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সভামঞ্চে গ্রামীণ কংগ্রেস ছাড়াও জেডিইউ এবং বহুজন সমাজ দলের নেতারাও ছিলেন। অন্য দু’টি দল এখনও তৃণমূল কংগ্রেসকে নিঃশর্ত সমর্থনের সিদ্ধান্তই বজায় রেখেছে।

আগরতলায় তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রীর জনসভায় গ্রামীণ কংগ্রেস নেতৃত্বকে উপযুক্ত ‘সম্মান ও মর্যাদা’ দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ তুলেছেন সুবলবাবু। তিনি জানান, রাজ্যে সিপিএম বিরোধী শক্তিকে জোটবদ্ধ করতেই তৃণমূল কংগ্রেসকে তাঁরা ‘নিঃশর্ত’ সমর্থন দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে তাঁরা নিজেদের ‘ভুল’ বুঝতে পেরেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement