ব্যক্তিগত মহিমার প্রচার নিয়ে দিন কয়েক আগেই কটাক্ষ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। আজ পূর্ব দিল্লিতে জনসভা করতে গিয়ে খোঁচা দিলেন মোদীর নামাঙ্কিত স্যুট নিয়েও। বললেন, নিজে দশ লাখি কোট পরে, জনতার হাতে ঝাড়ু ধরাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী! দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনের আগে ক্রমশ আরও ঝাঁঝালো চেহারায় দেখা দিচ্ছেন রাহুল গাঁধী।
পূর্ব দিল্লির সীলমপুরে আজ জনসভা ছিল রাহুলের। সেখানে কালো টাকা উদ্ধারে বিজেপির প্রতিশ্রুতির প্রসঙ্গ টেনে রাহুল বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন কালো টাকা উদ্ধার করে সবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে পাঠিয়ে দেবেন। ১৫ লক্ষ কেন, ১৫ আনাও উদ্ধার হয়নি। তবে হ্যাঁ, মোদীজি এখন দশ লাখ টাকার কোট পরছেন বটে!”
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে একটি বিশেষ স্যুট পরেছিলেন মোদী। সেই স্যুটের স্ট্রাইপে লেখা ছিল ‘নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী’র নাম। প্রধানমন্ত্রীর এ হেন পোশাক নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়াতে। এক কথায়, জনমত কোন দিকে, তা খানিকটা আঁচ করেই আজ কোটের খোঁচা দিয়েছেন রাহুল। তাঁর কথায়, “গরিবের ভাল করার সদিচ্ছা মোদী সরকারের নেই। ভোটে ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, আর এখন হাতে ঝাড়ু ধরিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী কখনও অস্ট্রেলিয়া চলে যাচ্ছেন, কখনও আমেরিকা!”
এই রাজনৈতিক আক্রমণে মূলত দু’টি বিষয় উঠে এল। এক, দলের অস্তিত্ব সংকট কাটিয়ে উঠতে এ বার বিজেপির কাণ্ডারীকে নিশানা করে কড়া সুরে কথা বলতে শুরু করলেন রাহুল। যা কংগ্রেসের নেতা কর্মীদের মনোবল বাড়াতে অনেকটাই সাহায্য করবে। পরশু দক্ষিণ দিল্লির কালকাজিতে রাহুলের রোড শোয়ে উচ্ছ্বাস এবং উৎসাহ দু’টোই ছিল চোখে পড়ার মতো। তার পর আজ সীলমপুরের সভায় রাহুলের ভাষণ যে সাড়া পেয়েছে তা দিল্লির গত ভোটে চোখে পড়েনি বলেই মত কংগ্রেস নেতাদের।
সীলমপুরের সভায় উপস্থিত এক কংগ্রেস বিধায়ক স্বীকার করলেন, রাহুলের সুর চড়লেও কংগ্রেস যে বিজেপি বা আপের প্রচারের ধারেকাছে পৌঁছতে পারেনি সেটা অনস্বীকার্য। তবে আগে কংগ্রেসকে প্রচারে দেখা না গেলেও এ বার অন্তত দলকে প্রচার করতে দেখা যাচ্ছে! রাহুল ঘনিষ্ঠদের দাবি, দিল্লির ভোটের আগে সভায় এমন সাড়া পাওয়ার পর আরও কয়েকটি জনসভা বা রোড শো করার ব্যাপারে ভাবনা-চিন্তা করছেন কংগ্রেস সহ সভাপতি। তবে কংগ্রেস নেতারা ভালই জানেন, রাহুল আরও সক্রিয় আদতে খুশিই হবে বিজেপি। কংগ্রেস ও বিজেপি, দু’দলেরই হিসেব বলছে, কংগ্রেসের ভোট বাড়লে কোপ পড়বে আম আদমি পার্টির খাতায়। সে ক্ষেত্রে লাভবানই হবে বিজেপি।
সেই পথে চলতেও এখন রাজি কংগ্রেস। তাদের যুক্তি, বিজেপিকে ঠেকানোর জন্য কংগ্রেস পিছু হটলে জায়গা করে নেবে কেজরীবালের দল। বরং কংগ্রেসের উচিত আগের ভোটের তুলনায় আসন ও ভোট শতাংশ বাড়ানো। কেজরীবালের প্রাসঙ্গিকতা কমলে তবেই দিল্লিতে গুরুত্ব বাড়বে কংগ্রেসের।