পটনার রাজ ভবনে সদ্য ভারপ্রাপ্ত ক্যাবিনেট মন্ত্রী লেসি সিংহের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। ছবি: পিটিআই।
পর পর দুই মহিলা মন্ত্রীর ইস্তফায় বিব্রত মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার তড়িঘড়ি তাঁর মন্ত্রিসভায় মহিলা মুখ ফিরিয়ে আনলেন।
নীতীশ আজ পূর্ণিয়ার বিধায়ক তথা রাজপুত নেত্রী লেসি সিংহকে তাঁর মন্ত্রিসভায় নিয়ে এলেন। আজ বিকেলে রাজ্যপাল ডি ওয়াই পাটিল তাঁকে শপথ বাক্য পাঠ করান।
এমনিতে বিজেপি-র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর থেকে মন্ত্রিসভায় ১১টি পদ শূন্য রয়েছে। গত মাসে জেডিইউয়ের মন্ত্রী পরভিন আমানুল্লা দল ও মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়ে আম আদমি পার্টিতে যোগ দিয়েছেন।
এর মধ্যেই গত কাল তাঁর পদে ইস্তফা দেন রাজ্যের শিল্প ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী রেণু কুশওয়া। রাজ্যপাল মুম্বইয়ে ছিলেন। মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের জন্য তাঁকে তড়িঘড়ি রাজ্যে ফিরিয়ে আনা হয়।
জল্পনা ছিল, অবশেষে নীতীশ তাঁর মন্ত্রিসভার শূন্য পদগুলি পূরণ করবেন। তবে বিকেলে সেই জল্পনায় জল ঢেলে দিয়ে রাজভবনে নীতীশের উপস্থিতিতে ‘রাজপুত’ লেসিকে শপথবাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল। কয়েক মিনিটেই শেষ হয়ে যায় অনুষ্ঠান। জাতপাতের বিহারে উচ্চবর্ণের রাজপুত নেত্রীকে মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসাও ভোটের আগে নীতীশের রাজনৈতিক চাল বলে মনে করা হচ্ছে। নির্বাচনের মুখে বিহারের রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে এখন একেবারেই কলকাতা ময়দানের দলবদলের মরশুম চলছে। একই সঙ্গে চলছে, একে অন্যকে দায়ী করার রাজনীতিও।
নীতীশের এই অবস্থা দেখে মুচকি হাসছে ন’মাস আগে তাঁর মন্ত্রিসভা থেকে বিতাড়িত বিজেপি। ১১ জন মন্ত্রীর বিদায়ের পরে একটিও নতুন মুখকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভূক্ত করতে পারেননি নীতীশ। কারণ এতে দলের মধ্যে ক্ষোভ বাড়বে। বাড়বে দল ভাঙার সম্ভাবনা। এই আশঙ্কা থেকেই প্রকৃত সম্প্রসারণের পথে হাঁটেননি নীতীশ।
কিন্তু রেণু কুশওয়া কেন মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিলেন, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। তাঁর স্বামী বিজয় সিংহ কুশওয়া জেডিইউয়েই ছিলেন। দলে তিনি নীতীশের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। গত কালই পূর্ণিয়ায় নরেন্দ্র মোদীর সভায় গিয়ে জেডিইউ থেকে বিজেপিতে যোগ দেন পিছড়ে বর্গভুক্ত কুশওয়া সম্প্রদায়ের এই নেতা।
এর পরে, কাল রাতেই নীতীশের মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেন স্ত্রী রেনু কুশওয়া। তাঁর দাবি, নৈতিক কারণেই তাঁর এই সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, “আমার স্বামী বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। সেই কারণেই জেডিইউ সরকারের মন্ত্রী-পদে আমার থাকা ঠিক নয়। মন্ত্রগুপ্তির শপথ নেওয়ায় আমি এই কাজ করতে পারি না।” তবে জেডিইউয়ের প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে এখনও তিনি দলেই আছেন। থাকবেন বলেও জানিয়েছেন। কারণ দল তৈরির সময় থেকেই তিনি নীতীশের সঙ্গে আছেন।