‘নিষিদ্ধ’ নির্ভয়াকে কাছে টেনে নিল মার্কিন মুলুক

দেশের সীমা টপকে নির্ভয়া এ বার আমেরিকারও মেয়ে। তাঁকে নিয়ে তৈরি ব্রিটিশ তথ্যচিত্র ঘিরে নিষেধাজ্ঞা বহাল ভারতে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে ইউটিউব-সহ ইন্টারনেট দুনিয়ার বড় অংশ থেকে লোপাট ‘ইন্ডিয়াজ ডটার’। ধষর্কের সাক্ষাৎকার আদৌ সম্প্রচারিত হওয়া উচিত কিনা, তা নিয়ে দ্বিধায় দেশবাসীও। তবু এরই মধ্যে গত কাল নিউ ইয়র্কে প্রিমিয়ার শো হয়ে গেল ব্রিটিশ পরিচালক লেসলি উডউইনের বির্তকিত এই তথ্যচিত্রটির।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নিউ ইয়র্ক শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৫ ০৩:২৬
Share:

‘ইন্ডিয়াজ ডটার’-এর প্রদর্শনীতে মেরিল স্ট্রিপ। নিউ ইয়র্কে। ছবি: এপি।

দেশের সীমা টপকে নির্ভয়া এ বার আমেরিকারও মেয়ে। তাঁকে নিয়ে তৈরি ব্রিটিশ তথ্যচিত্র ঘিরে নিষেধাজ্ঞা বহাল ভারতে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে ইউটিউব-সহ ইন্টারনেট দুনিয়ার বড় অংশ থেকে লোপাট ‘ইন্ডিয়াজ ডটার’। ধষর্কের সাক্ষাৎকার আদৌ সম্প্রচারিত হওয়া উচিত কিনা, তা নিয়ে দ্বিধায় দেশবাসীও। তবু এরই মধ্যে গত কাল নিউ ইয়র্কে প্রিমিয়ার শো হয়ে গেল ব্রিটিশ পরিচালক লেসলি উডউইনের বির্তকিত এই তথ্যচিত্রটির। অনুষ্ঠানের মঞ্চেই মার্কিন অভিনেত্রী মেরিল স্ট্রিপ বলেন, “আসল নাম জানতে পারিনি বহুদিন। শুধু জেনেছিলাম ও ভারতের মেয়ে। তবে আজ থেকে নির্ভয়া শুধু ভারতের নয়, আমাদেরও মেয়ে।”

Advertisement

বারুচ কলেজ অব সিটি ইউনিভার্সিটির প্রেক্ষাগৃহে এই প্রদর্শনী উপলক্ষে অস্কারজয়ী অভিনেত্রী মেরিল স্ট্রিপ ও ফ্রিডা পিন্টোর সঙ্গে ছিলেন ফারহান আখতারও। মেরিল স্ট্রিপ পরোক্ষে নয়াদিল্লিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “নারীর উপর অত্যাচার নিঃসন্দেহে মেনে নেওয়া যায় না। কিন্তু তার চেয়েও খারাপ হল এই অন্যায় সহ্য করে নির্বিকার থাকা।”

ধর্ষকের আত্মপক্ষ সমর্থন ভবিষ্যতে ধর্ষণের ঘটনায় উৎসাহ জোগাতে পারে তথ্যচিত্র নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে নয়াদিল্লির এই যুক্তি ভুল প্রমাণ করতেই যেন সোমবার তিলধারণের জায়গা ছিল না নিউ ইয়র্কের প্রেক্ষাগৃহে। নির্ভয়ার যন্ত্রণা ভাগ করে নিতে আলোর সরণি গড়েন মঞ্চে উপস্থিত সকলেই। ভারত সরকার নিষেধাজ্ঞা চাপালেও মার্কিন মুলুক এ দিন ছবির প্রদর্শনী শেষে অভিনন্দন জানায় পরিচালক উডউইনকে। জবাবী বক্তৃতায় তিনিও বলেন, “খুব ভাল করে জানি, ভারতে এমন বহু মানুষ আছেন, যাঁরা নির্ভয়ার জন্য সুবিচার চান। পরিবর্তন চান সমাজব্যবস্থার।” তাঁর আশা, এ বার ভারত থেকেও দ্রুত উঠবে নিষেধাজ্ঞা। মেরিলের মতো পরোক্ষে তিনিও একহাত নেন নয়াদিল্লিকে। বলেন, “এমন নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বেশি দিন নয়। দেশের সব আদালতই তো আর সরকারের হাতের পুতুল নয়!” ভারতীয় গণতন্ত্রের স্বার্থেই এই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়া উচিত বলে দাবি করেন উডউইন।

Advertisement

সেই রাতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত নির্ভয়ার প্রেমিক অবনীন্দ্র পাণ্ডে অবশ্য ‘ইন্ডিয়াজ ডটার’ ছবিটিকে সম্পূর্ণ ‘বানানো’ বলে দাবি করছেন। দেশের একটি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “কোনও ভারসাম্যই নেই এই তথ্যচিত্রে। ছবি জুড়ে শুধু ধর্ষকের বক্তব্য, নির্যাতিতার বয়ান কোথায়?” তাঁর দাবি, সে দিন ঠিক কী ঘটেছিল, তা একমাত্র তিনি আর নির্ভয়াই জানেন। ছবিটিতে কিছু অবাস্তব চরিত্র আনা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন