ক্ষেপণাস্ত্র রেয়াত করেনি এই প্যালেস্তাইনি খুদেকেও। গাজায়। ছবি: এএফপি।
গাজায় অব্যাহত মৃত্যুমিছিল। ইজরায়েলের লাগাতার আক্রমণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১৩। আজও উত্তর ও মধ্য গাজার বিস্তীর্ণ এলাকায় হামলা চালিয়েছে ইজরায়েলি সেনা। এ দিকে, গাজার উত্তপ্ত পরিস্থিতির আঁচ পড়ল রাজ্যসভাতেও। প্যালেস্তাইনি জঙ্গিগোষ্ঠী নিধনে গাজায় লাগাতার ইজরায়েলি হানা নিয়ে বিরোধীদের বিতর্কের প্রস্তাব নাকচ করে দেয় সরকারপক্ষ। বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ সাফ জানিয়ে দেন, গাজা পরিস্থিতি নিয়ে বিতর্কে কোনও বিরূপ মন্তব্য উঠে এলে প্যালেস্তাইন এবং ইজরায়েলের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সু-সম্পর্কে প্রভাব পড়তে পারে।
বিরোধীদের অভিযোগ, আজকের অধিবেশনে গাজা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার বিষয়টি আগে থেকেই ঠিক করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও কী ভাবে সেই প্রস্তাব খারিজ করা হল? এমনকী, নথিভুক্ত করা প্রস্তাব এ ভাবে ফিরিয়ে দেওয়া আদৌ আইনসঙ্গত কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। সুষমা অবশ্য জানিয়েছেন, গাজা প্রসঙ্গে আলোচনার কথা আজকের আলোচ্যসূচিতে থাকার কথা তিনি জানতেন না। বিদেশমন্ত্রী আরও জানান, এই আলোচনার বিষয়টি বাদ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে চেয়ারম্যান হামিদ আনসারির কাছে চিঠি পাঠান তিনি। সে চিঠির জবাব না মেলা পর্যন্ত সভায় গাজা-আলোচনা হবে না।
গাজা-বিতর্ক নিয়ে ক্ষুব্ধ বিরোধীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করায় বেশ কয়েকবার সভা পণ্ড হয়ে যায়। রেল বাজেট নিয়ে পরবর্তী আলোচনা শুরু করার প্রস্তাব দেন সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু, রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান পি জে কুরিয়েন। যদিও গাজা পরিস্থিতি নিয়ে বিতর্ক না হওয়া পর্যন্ত পরবর্তী বিতর্কে সামিল হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় বিরোধীরা। শেষ পর্যন্ত শাসক-বিরোধী তরজায় দুপুর ৩টে নাগাদ মুলতুবি হয়ে যায় অধিবেশন।
গাজা-বিতর্ক নিয়ে সরকারের সমালোচনায় সুর মেলালেন এ রাজ্যের শাসক-বিরোধী সাংসদেরা। রাজ্যসভায় আলোচনা স্থগিত করা ‘অসঙ্গত’ বলে মন্তব্য করেছেন সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি। তৃণমূলের সুখেন্দুশেখর রায় জানান, চেয়ারম্যানকে চিঠি লেখার বিষয়টি তৃণমূল জানত না। তবে তাঁর মতে, বিতর্ক প্রস্তাব নাকচ করার জন্য আরও জোরদার যুক্তির প্রয়োজন ছিল।
অন্য দিকে, ইজরায়েল প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, একান্ত বাধ্য হয়েই গাজায় ফের সক্রিয় হয়েছে ইজরায়েলি সেনা। আজ আক্রমণের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে গাজার উপকূলবর্তী এলাকায়। এলাকা খালি করতে বলা হয়েছে লক্ষাধিক মানুষকে। সূত্রের খবর, বিমান হামলার পাশাপাশি এ বার ইজরায়েলি স্থলসেনাও আক্রমণে নামতে পারে। আজ, ইজরায়েলের হামলায় অন্তত চারজন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এদিনই গাজায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাতা-এল সিসির সঙ্গে দেখা করতে কায়রো গিয়েছেন প্যালেস্তাইনের প্রেসিডেন্ট মেহমুদ আব্বাস। মিশরের শান্তি-প্রস্তাব
উড়িয়ে দেওয়ার পরে এবার গাজায় শান্তি ফেরাতে জঙ্গিগোষ্ঠী হামাস আরও বড়সড় দাবি জানাতে পারে বলেও আশঙ্কা করছে প্যালেস্তাইন প্রশাসন।