সৌজন্য ও আগামী দিনে পাশে থাকার বার্তা দিতে সনিয়া ও রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল সমাজবাদী পার্টি।
যদিও দুর্নীতি-মূল্যবৃদ্ধি-মুদ্রাস্ফীতির প্রশ্নে কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানানো চালু রয়েছে এখনও। কিন্তু তা সত্ত্বেও আজ সপা নেতা তথা উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব জানিয়ে দেন, সনিয়ার রায়বরেলী বা রাহুলের অমেঠি এই দুই কেন্দ্রের একটিতেও প্রার্থী দেবে না দল।
পাল্টা প্রতিদানে সপা নেতা মুলায়ম সিংহের কেন্দ্র মৈনপুরী ও আজমগড় এবং অখিলেশ পত্নী ডিম্পল যাদবের কেন্দ্র কনৌজে প্রার্থী দেওয়া হবে না বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর। দু’পক্ষের এই অলিখিত বোঝাপড়ার মধ্যে নির্বাচন পরবর্তী জোটের ইঙ্গিত রয়েছে বলেই মনেই করা হচ্ছে।
দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের শরিক না হলেও গত পাঁচ বছর বাইরে থেকে আগাগোড়া সনিয়া-মনমোহন সরকারকে সমর্থন করে গিয়েছেন মুলায়মরা। বিশেষ করে ভোটাভুটির সময়ে সপা শিবিরকে বিশ্বস্ত সঙ্গী হিসাবেই বরাবর পাশে পেয়েছে কংগ্রেস। রাজনীতির কারবারিরা মনে করেছেন, গোটা দেশে এখন বিজেপি হাওয়া। সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নে এখন অনেক আঞ্চলিক দল বিজেপির সঙ্গে জোট গড়া এড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ফল প্রকাশের পর সরকার গড়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে সেই সব দলই অবস্থান বদলে গেরুয়া শিবিরের পাশে এসে দাঁড়াবে বলেই মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। মায়াবতী, জয়ললিতা বা নবীন পট্টনায়েকের মতো দলগুলির কাছে সেই রাস্তা খোলা থাকলেও জাতীয় রাজনীতিতে কট্টর বিজেপি-বিরোধী হিসাবে পরিচিত মুলায়মের পক্ষে তা করা কঠিন। সে ক্ষেত্রে কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলানো ছাড়া সপা-র আর কোনও উপায় থাকবে না। আর তা বুঝে এখন থেকেই পরস্পরকে বার্তা দিয়ে রাখতে চাইছে উভয় পক্ষ।
তা ছাড়া, আসন্ন নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের আশিটির মধ্যে যত বেশি সংখ্যক আসন জিতে সরকার গড়ার দৌড়ে প্রবল ভাবে থাকতে চাইছেন মুলায়ম। দলের একাংশ এ বার মুলায়মকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবেও দেখতে চাইছে। খোদ মুলায়মেরও তাই-ই ইচ্ছে। ফল বেরনোর পর বিজেপি ও কংগ্রেস দুই বড় দলের যদি সরকার গড়ার প্রয়োজনীয় সংখ্যা না থাকে, সে ক্ষেত্রে কংগ্রেস নেতৃত্ব জয়ললিতা বা মুলায়মের মতো আঞ্চলিক নেতাকে প্রধানমন্ত্রী পদে বসিয়ে বাইরে থেকে সমর্থনের মতো বিকল্প পরিকল্পনা ভাবতে পারেন। রাজনৈতিক বিশষজ্ঞদের বক্তব্য, ফলাফল সামনে এলে একাধিক সম্ভাবনা সৃষ্টি হতে পারে। সে কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন দল রাজনীতিতে সৌজন্য দেখানোর পথেই হাঁটতে চাইছে। আজ যেমনটা করল সমাজবাদী পার্টি।