বেঙ্গালুরু ধর্ষণ

বদলে গেল অভিযুক্ত, গ্রেফতার আরও দু’জন

ধর্ষণ নয়, আরও ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা হয়েছিল বেঙ্গালুরুর বছর ছয়েকের মেয়েটির। পুলিশের দাবি, স্কুলে গণধর্ষণ করা হয়েছিল তাকে। এত দিন পরে বদলে গেল অভিযুক্ত। স্কেটিং প্রশিক্ষক নয়, দুই জিমনাস্টিক প্রশিক্ষকই অপকীর্তির মূলে বলে এ দিন জানিয়েছেন বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার এম এন রেড্ডি। গত কাল রাতে পুলিশের জালে ধরা পড়েছে দু’জনই।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৪ ০২:৩৩
Share:

ধর্ষণ নয়, আরও ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা হয়েছিল বেঙ্গালুরুর বছর ছয়েকের মেয়েটির। পুলিশের দাবি, স্কুলে গণধর্ষণ করা হয়েছিল তাকে। এত দিন পরে বদলে গেল অভিযুক্ত। স্কেটিং প্রশিক্ষক নয়, দুই জিমনাস্টিক প্রশিক্ষকই অপকীর্তির মূলে বলে এ দিন জানিয়েছেন বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার এম এন রেড্ডি। গত কাল রাতে পুলিশের জালে ধরা পড়েছে দু’জনই।

Advertisement

ধর্ষণের কথা প্রকাশ্যে আসতেই সময় পেরিয়ে গিয়েছিল বিস্তর। ১৭ জুলাই যখন শেষ পর্যন্ত জানাজানি হল, শহরের অন্যতম নামজাদা স্কুলের ভেতরে ছ’বছরের ছোট্ট শরীরটার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল স্কুলেরই এক কর্মী আতঙ্ক আর ঘেন্নায় কেঁপে উঠেছিল সকলে। এর প্রতিবাদে বেঙ্গালুরুর মতো শহরে মিছিলে পা মেলান কাতারে কাতারে মানুষ। হঠাৎই বদলে গেল গোটা ঘটনার মোড়।

বেঙ্গালুরুর নতুন পুলিশ কমিশনার এম এন রেড্ডি মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, ধর্ষণের অভিযোগে কাল রাতে ধরা পড়েছে ওই স্কুলের দুই জিমনাস্টিক প্রশিক্ষক লাল গিরি ও ওয়াসিম পাশা। তারা নাকি অপরাধের কথা পুলিশের কাছে স্বীকারও করে নিয়েছে। গিরির জন্ম ও বেড়ে ওঠা নেপালে। অন্য দিকে পাশা কর্নাটকেরই বাসিন্দা। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ডি ও পস্কো (চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস অ্যাক্ট) আইনের ৪ ও ৬ ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

Advertisement

ছাত্রীকে ধর্ষণে ওই স্কুলের স্কেটিং প্রশিক্ষক মুস্তাফা ওরফে মুন্নাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল আগেই। তা হলে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই কেন মুস্তাফাকে ধরা হল, এই প্রশ্ন আজ করা হয়েছিল সিপিকে। জবাবে তিনি বলেন, পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যপ্রমাণ তখন মুস্তাফার বিরুদ্ধেই ছিল। তার ব্যবহারেও সন্দেহ আরও গাঢ় হয়। মুস্তাফার ল্যাপটপ ঘেঁটে শিশুদের উপর যৌন নির্যাতনের একাধিক ছবি ও ভিডিও-ও হাতে পান তদন্তকারীরা। এরই মাঝে খবর আসে, আগের স্কুলে ছাত্রীদের নানা ভাবে উত্যক্ত করত সে। এই স্বভাবেরই জন্য তাকে খোয়াতে হয় সেই চাকরি। পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, ছ’বছরের শিশুকে গণধর্ষণে তার পরোক্ষ কোনও যোগ আছে কি না আর পুরনো অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখতেই মুস্তাফার বিরুদ্ধে তদন্ত চলবে।

গত ২ জুলাই শাস্তি দেওয়ার অছিলায় ছ’বছরের ওই শিশুটিকে ক্লাস থেকে বের করে দেয় অভিযুক্তরা। তার পরে তাকে স্টোর রুমে আটকে রেখে চলে অত্যাচার। স্কুলে যে এমন কিছু হয়েছে, অভিভাবকেরা অবশ্য তখনই তা জানতে পারেননি। চোখের সামনে মেয়েকে ক্রমশ অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখে তার মা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই সামনে আসে ধর্ষণের কথা। স্কুলের মধ্যেই এই বীভৎসতার ঘটনায় তখন শিউরে ওঠে দেশ। অপরাধীকে ধরার দাবিতে স্কুলের সামনে যেমন প্রতিবাদ হয়েছিল, সমালোচনার ঝড় উঠেছিল দেশের অন্য প্রান্তেও। ঠিক দশ দিন আগে, নির্ভয়ার স্মৃতি উস্কে দিয়ে মৌন মিছিলে হাঁটেন লাখো মানুষ।

বেশ কিছু দিন বন্ধ থাকার পর গত কাল খুলেছে বেঙ্গালুরুর সেই স্কুল। অধ্যক্ষের দাবি, ঢেলে সাজা হয়েছে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সব ক্লাসরুমে বসেছে সিসিটিভি। স্কুল খুললেও বেঙ্গালুরুর বাসিন্দারা স্বস্তিতে নেই। পুলিশের তত্ত্ব বদল, রাতারাতি অভিযুক্ত বদলে যাওয়ায় তাঁদের উদ্বেগ আরও বেড়েছে। মহিলাদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে তাই আগামী পরশু শহরে বারো ঘণ্টার বন্ধ ডাকা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন