বর্মা কমিটির রিপোর্টে জটিল ইউপিএসসি জট

জট কাটাতে সাত দিন সময় নিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু সেই সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও জট তো কাটলোই না, উল্টে বর্মা কমিটির রিপোর্টে ইউপিএসসি জট আরও জটিল হওয়ার মুখে। গত কাল কেন্দ্রের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন তিন সদস্যের কমিটির প্রধান কেন্দ্রীয় কর্মিবর্গ মন্ত্রকের সচিব অরবিন্দ বর্মা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৪ ০৩:২৩
Share:

জট কাটাতে সাত দিন সময় নিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু সেই সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও জট তো কাটলোই না, উল্টে বর্মা কমিটির রিপোর্টে ইউপিএসসি জট আরও জটিল হওয়ার মুখে।

Advertisement

গত কাল কেন্দ্রের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন তিন সদস্যের কমিটির প্রধান কেন্দ্রীয় কর্মিবর্গ মন্ত্রকের সচিব অরবিন্দ বর্মা। পরীক্ষার্থীদের একাংশের দাবি ছিল, ইউপিএসসি-র সিভিল সার্ভিসেস অ্যাপটিচ্যুড টেস্ট (সিস্যাট) পরীক্ষায় যে ধরনের প্রশ্ন আসে তাতে ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়ারা বাড়তি সুবিধে পাচ্ছেন। আবার ইংরেজি প্রশ্নপত্র হিন্দিতে ঠিক মতো অনুবাদ না হওয়ায় বিপাকে পড়ছেন হিন্দিভাষীরা। ফলে অসাম্য তৈরি হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক ফলে।

চাপের মুখে পড়ে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার ভার দেওয়া হয় বর্মা কমিটির উপর। কিন্তু সূত্রের খবর, ওই কমিটি বর্তমান পরীক্ষাপদ্ধতি জারি রাখার পক্ষে সওয়াল করেছে। নরেন্দ্র মোদী সরকার রিপোর্টে কী রয়েছে তা খতিয়ে দেখার জন্য কিছু দিন সময় চেয়েছে। তবে বিরোধী শিবির জানিয়েছে, পড়ুয়াদের স্বার্থ বিঘ্নিত হবে এমন কোনও রিপোর্ট তারা মানবে না। বিষয়টি নিয়ে সরকারের বক্তব্য জানতে চেয়ে আজ সংসদের উভয় কক্ষে সরব হন জেডিইউ, সপা সাংসদেরা। লোকসভায় প্রথমে ওয়েলে নেমে ও পরে স্পিকারের দিকে কাগজ ছুড়ে বিক্ষোভ দেখান আরজেডি সাংসদ পাপ্পু যাদব। পরে অবশ্য কৃতকর্মের জন্য স্পিকার সুমিত্রা মহাজনের কাছে ক্ষমা চান বিহারের ওই বাহুবলী নেতা। সংসদের দু’কক্ষেই বিরোধিতার মুখে পড়ে রাজ্যসভায় মুখ খোলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। তিনি সবাইকে আশ্বাস দিয়ে বলেন, “সরকার গোটা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বিচার করছে। মাত্র এক দিন আগে ওই রিপোর্টটি জমা পড়েছে। সেটি খতিয়ে দেখার কাজ চলছে। সরকার দ্রুত বিষয়টির সমাধানে আগ্রহী।”

Advertisement

রাজনাথ ওই কথা বললেও কর্মিবর্গ মন্ত্রকের সূত্র বলছে, বর্মা কমিটি স্থিতাবস্থা বজায় রাখার পক্ষে সওয়াল করেছে। বর্মা কমিটির রিপোর্ট মেনে নিলে বিরোধী দলগুলি ছাড়াও হিন্দি বলয়ের প্রায় সাত লক্ষ পরীক্ষার্থীর বিরোধিতার মুখে পড়তে হবে মোদী সরকারকে। ক্ষমতায় আসার পরেই এই ধরনের বিরোধিতা দলের পক্ষে ভাল নয় বলেই মনে করছেন বিজেপি নেতাদের একাংশ। আবার সরকার যদি সিস্যাট বাতিল করে তা হলে ইউপিএসসি-র মতো সাংবিধানিক সংস্থার সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কর্তব্য স্থির করতে আজ সন্ধ্যায় বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। বিজেপি সূত্রের খবর, সরকার এ বিষয়ে আগামী সপ্তাহেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে।

গত শুক্রবার রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় কর্মিবর্গ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ আশ্বাস দিয়েছিলেন, ঠিক এক সপ্তাহের মধ্যে ওই সমস্যার সমাধান করে ফেলবে সরকার। কিন্তু সাত দিনের মধ্যে ওই সমস্যার সমাধান না হওয়ায় আজ জিতেন্দ্রর বিরুদ্ধে অধিকার ভঙ্গের নোটিস দেন জেডিইউ সাংসদ শরদ যাদব। নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে জিতেন্দ্র দাবি করেন,“মাঝে ছুটি পড়ে গিয়েছিল। ফলে কাজের জন্য মাত্র ৪-৫ দিন সময় পাওয়া যায়। তাই রিপোর্ট হাতে পেতে কিছুটা সময় লেগেছে।” তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন অবিলম্বে ওই সমস্যা সমাধান করার দাবি জানান। দিল্লি, লখনউ, পটনা-সহ নানা শহরে সিস্যাট পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান পরীক্ষার্থীরা। চলে ভাঙচুর। বেশ কিছু ছাত্র নেতাকে আটক করে পরে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন