বড় যুদ্ধ কমবে, সামরিক দাপটটা জরুরি: মোদী

প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম বার লে-লাদাখ সফরে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী মন্তব্য করেছিলেন, “আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র যুদ্ধ করার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। তাই তারা ছায়াযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।” স্পষ্টতই ইঙ্গিত ছিল পাকিস্তানের দিকে। আজ তিন সামরিক বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে প্রথম বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বললেন, “পুরো মাত্রার যুদ্ধ ক্রমশ কমে আসবে। স্বল্পমেয়াদি সংঘর্ষই বেশি হবে। দেশের সামরিক শক্তি কাজে আসবে প্রভাব খাটাতে।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:০৪
Share:

প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম বার লে-লাদাখ সফরে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী মন্তব্য করেছিলেন, “আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র যুদ্ধ করার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। তাই তারা ছায়াযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।” স্পষ্টতই ইঙ্গিত ছিল পাকিস্তানের দিকে। আজ তিন সামরিক বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে প্রথম বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বললেন, “পুরো মাত্রার যুদ্ধ ক্রমশ কমে আসবে। স্বল্পমেয়াদি সংঘর্ষই বেশি হবে। দেশের সামরিক শক্তি কাজে আসবে প্রভাব খাটাতে।”

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে বিদায়ের আগে মনমোহন সিংহ তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে সর্বশেষ বৈঠকটি করেছিলেন গত বছর নভেম্বরে। বলেছিলেন আর্থিক সঙ্কটের সময়ে সামরিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে খরচের মধ্যে ভারসাম্য রাখার কথা। তাঁর উত্তরসূরি কিন্তু আজ সামরিক বাহিনীর প্রধানদের জানিয়ে দিলেন, স্বল্পমেয়াদি সংঘর্ষের জন্য শুধু নয়, আরও বৃহত্তর কারণে সামরিক বাহিনীগুলিকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে চায় তাঁর সরকার। আগামী দিনে পুরোদস্তুর যুদ্ধের আশঙ্কা কমে এলেও সামরিক বাহিনীগুলির যুদ্ধ করার ক্ষমতাটাই আসল। কারণ, সেই সামরিক ক্ষমতাই ঠিক করে দেবে প্রতিবেশী দেশগুলি ভারতকে কী চোখে দেখবে।

মোদী বোঝাতে চেয়েছেন, সামরিক শক্তি বেশি থাকলে ভারতও পাল্টা প্রভাব খাটাতে পারবে। এবং সে কারণেও সামরিক বাহিনীগুলিকে বর্তমান ও আগামী দিনের সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। মোদীর কথায়, “সাইবার দুনিয়া ও মহাকাশেও ভারতের উপস্থিতি ও শক্তি বাড়াতে হবে।” মোদীর তাই প্রতিশ্রুতি, বাহিনীর আধুনিকীকরণ, সমরাস্ত্র ও অন্যান্য সরঞ্জাম কেনায় টাকার অভাব হবে না। মোদীর যুক্তি, “মনে রাখতে হবে দিনের শেষে সামরিক বাহিনীর কতখানি ক্ষমতা, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।”

Advertisement

বেশ কিছু দিন ধরেই ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত ও নিয়ন্ত্রণ রেখায় উত্তেজনা চরমে। পাক বাহিনী প্রায় নিয়মিতই সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে যাচ্ছে। জবাব দিচ্ছে ভারতও। আজও পুঞ্চের নিয়ন্ত্রণরেখায় পরপর দু’বার গুলি চালিয়েছে পাক সেনা। হামিরপুর সেক্টরে গত কাল রাতে ও আজ সকালে দু’পক্ষে গুলির লড়াই হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অরুণ জেটলির প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সেনাবাহিনীকে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে, পাকিস্তানকে যোগ্য জবাব দিতে হবে। কারণ, ভারত মনে করছে, পাকিস্তান পরিকল্পিত ভাবেই এ কাজ করছে। আর এক প্রতিবেশী চিন আবার লাদাখে সীমান্ত লঙ্ঘন করছে বারবার। এই পরিস্থিতিতে সামরিক বাহিনীর প্রধানদের উদ্দেশে মোদীর এ দিনের বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ। সামরিক কর্তারা মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য তাঁর সামরিক তথা কূটনৈতিক রণকৌশলেরই প্রতিচ্ছবি। পুরোদস্তুর যুদ্ধ না হলেও তিনি সামরিক বাহিনীকে তৈরি রাখতে চান। সীমান্তে পাকিস্তান বা চিন বেপরোয়া হয়ে উঠলে তার পাল্টা জবাব দেওয়া হবে। আবার সামরিক বাহিনীর শক্তিতে ভর করে নয়াদিল্লি পাল্টা চোখ রাঙাতেও পারবে।

যুদ্ধের থেকে সন্ত্রাসবাদীদের হাতে অনেক বেশি মানুষ মারা যাচ্ছেন। এ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে মোদী আজ সামরিক বাহিনীর কর্তাদের বলেন, পরিস্থিতি এমন যে হামলা হতে পারে সেটা জানা থাকলেও কোথায় কখন তা হবে সেটা অজানা। শত্রুরা এ ক্ষেত্রে অদৃশ্য। মোদীর কথায়, “এমন সময় আসছে যেখানে নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জগুলো অনুমান করা আরও শক্ত হয়ে পড়বে। পরিস্থিতি দ্রুত বদলাবে। প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে পাল্লা দেওয়াটাই কঠিন হয়ে উঠবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন