বিধানসভা ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে, বৃহস্পতিবার রাজনৈতিক সংঘর্ষে এক ব্যক্তির মৃত্যু হল ধানবাদ জেলার নিরশায়। এ দিন সকালে মার্কসিস্ট কো-অর্ডিনেশন কমিটি (এমসিসি) এবং বিজেপি-র কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। নিহত মাচন রবিদাসকে (৫২) নিজেদের সমর্থক বলে দাবি করেছে এমসিসি। নিরশা থানায় খুনের অভিযোগ করেছে পরিবার। এলাকায় পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকালে মিছিল করার জন্য এমসিসি কর্মী-সমর্থকেরা স্থানীয় শহিদ ময়দানে জড়ো হচ্ছিলেন। দলের নেতাদের অভিযোগ, ময়দান লাগোয়া মুচিপাড়ার কিছু বিজেপি কর্মী-সমর্থক শুরু থেকে ঝামেলা পাকানোর চেষ্টা করে। মিছিলে আসা এমসিসি-র সমর্থকদের গাড়ি ঢুকতে বাধা দিচ্ছিল তারা। খবর পেয়ে পৌঁছন এমসিসি প্রার্থী তথা নিরশার বিধায়ক অরূপ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, “যাঁরা আমাদের লোকজনের গাড়ি ঢুকতে বাধা দিচ্ছিল, তাদের বিরত করার চেষ্টা করি। কিন্তু তারা শোনেনি। উল্টে, আমার উপরে চড়াও হয়।” এমসিসি নেতাদের অভিযোগ, এই সময় বিধায়ককে বিজেপি সমর্থকেরা ধাক্কা দেয়। বাধা দিয়ে নিগৃহীত হন তাঁর নিরাপত্তারক্ষী। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে দেখে অরূপবাবু দ্রুত মিছিল শুরু করেন।
তাতেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। অরূপবাবু অভিযোগ করেন, হঠাৎই বিজেপির লোকেরা এমসিসি সমর্থকদের উপরে চড়াও হয়। মাচন রবিদাসকে তারা এমসিসি-র ব্যাজ খুলে ফেলতে বললে তিনি তা মানতে চাননি। তখনই সংঘর্ষ বেধে যায়। বেশ কিছুক্ষণ ধুন্ধুমার চলার পরে পুলিশ গিয়ে দু’পক্ষকে সরিয়ে দেয়। আহত পাঁচ এমসিসি সমর্থককে স্থানীয় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়। সেখানেই মাচন রবিদাসকে মৃত ঘোষণা করা হয়। অরূপবাবুর দাবি, “এটা বিজেপি-র পরিকল্পিত খুন। সকাল থেকে ওরা অশান্তি তৈরির চেষ্টা করছিল। ওদের অবস্থা গত বারের থেকেও খারাপ। তাই মতিভ্রম থেকে এই সব করছে।”
বিজেপি নেতা তথা প্রার্থী গণেশ মিশ্রের অবশ্য পাল্টা দাবি, “আমাদের সঙ্গে এমসিসি-র লোকজনের কিছু গণ্ডগোল হয়েছে ঠিকই। তবে তার সঙ্গে এই মৃত্যুর কোনও সম্পর্ক নেই। অসুখের জেরে মৃত্যু হয়েছে। বরাবরের মতো এ বারও এমসিসি তাতে রাজনৈতিক রং চড়িয়ে অশান্তি তৈরি করতে চাইছে।” অশান্তি যাতে না ছড়ায় সে জন্য ঘটনাস্থলে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়। জেলার পুলিশকর্তারা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। পুলিশ ক্যাম্পে কেন্দ্রীয় বাহিনীও মোতায়েন হয়েছে।