ভারতের মাটি ছুঁল সৌরবিমান

বিশ্ব ভ্রমণে বেরিয়ে মঙ্গলবার গভীর রাতে ভারতের মাটি ছুঁল ‘সোলার ইম্পাল্স ২’। ওমানের মাসকট থেকে রওনা হয়ে এ দিনই আমদাবাদে এসে পৌঁছয় বিশ্বের একমাত্র সৌরবিদ্যুৎ চালিত বিমানটি। এর পরের গন্তব্য বারাণসী। বাণিজ্যিক ভাবে অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়েই তৈরি হয়েছে এই সোলার ইম্পাল্স বিমান। প্রকল্পটির পরিকল্পনা বার্টার্ন্ড পিকার্ড এবং আন্দ্রে বোর্শবার্গের।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

আমদাবাদ শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৫ ০৩:২২
Share:

মাসকটের আকাশে সৌরবিমান সোলার ইম্পাল্স ২। ছবি: এএফপি।

বিশ্ব ভ্রমণে বেরিয়ে মঙ্গলবার গভীর রাতে ভারতের মাটি ছুঁল ‘সোলার ইম্পাল্স ২’। ওমানের মাসকট থেকে রওনা হয়ে এ দিনই আমদাবাদে এসে পৌঁছয় বিশ্বের একমাত্র সৌরবিদ্যুৎ চালিত বিমানটি। এর পরের গন্তব্য বারাণসী।

Advertisement

বাণিজ্যিক ভাবে অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়েই তৈরি হয়েছে এই সোলার ইম্পাল্স বিমান। প্রকল্পটির পরিকল্পনা বার্টার্ন্ড পিকার্ড এবং আন্দ্রে বোর্শবার্গের। পালা করে পাইলট হিসেবে এটি চালানোর দায়িত্বেও রয়েছেন এই দুই জন। বিমানটিতে প্রযুক্তি সহায়তা দেওয়ার জন্য এসেছেন ইঞ্জিনিয়ারদের আলাদা প্রতিনিধি দল। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন দু’জন সাইক্লিস্টও। এঁদের কাজ বিমানটি নামার সময় দু’পাশ ধরে সাইকেল চালানো, যাতে কোনও ভাবে সেটি এক দিকে হেলে গিয়ে বিপত্তি না-হয়।

কার্বন ফাইবার দিয়ে তৈরি বিমানটির ওজন মাত্র ২.৩ টন। ৭২ মিটার লম্বা ডানায় লাগানো রয়েছে ১৭,২৪৮টি সৌর বিদ্যুতের প্যানেল। সূর্যের আলো থেকেই প্রয়োজনীয় শক্তি সংগ্রহ করে বিদ্যুতে রূপান্তরিত করার কাজ করে সেগুলি। যা দিয়ে চলে তার ৪টি ইঞ্জিন। প্রায় ১০ হাজার মিটার উচ্চতায় বিমানটি উড়তে পারে ঘণ্টায় ১৩০ থেকে ১৪০ কিমি গতিতে। বিমানের সঙ্গেই এসেছে নিজস্ব হ্যাঙ্গারও। দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় বিমানটি এর মধ্যে থাকলেও সূর্যের আলো থেকে শক্তি সংগ্রহ করতে অসুবিধা হয় না সৌরবিদ্যুৎ প্যানেলগুলির। অথচ সরাসরি আলোয় না-পড়ায় ক্ষতি হয় না কার্বন ফাইবারেরও। আমদাবাদে অবশ্য বিমানটিকে রাখার জন্য গত তিন দিন ধরে বিশেষ ভাবে একটি হ্যাঙ্গার তৈরি করা হয়েছে।

Advertisement

এই পুরো প্রকল্পটির প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে এবিবি গোষ্ঠী। এ দিন ভারতে সংস্থার মুখপাত্র পিটার স্টিয়ারর্লি জানান, তাঁদের সংস্থা ইতিমধ্যেই সূর্যের আলো এবং হাওয়া থেকে বিদ্যুৎ উপাদনের কাজ করছে। পাশাপাশি, বিভিন্ন ক্ষেত্রে অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার আরও বাড়াতে আগ্রহী এবিবি গোষ্ঠী। সেই কারণেই এই উদ্যোগের সঙ্গে সামিল হয়েছেন তাঁরা।

প্রথম পর্যায়ে সোলার ইম্পাল্স ওড়া শুরু করেছে আবুধাবি থেকে। ভারত হয়ে যা যাবে মায়ানমারে। সেখান থেকে চিনের দু’টি শহর ঘুরে সেটি রওনা দেবে হাওয়াই-এর উদ্দেশে। এই সময় ৫ দিন ৫ রাত প্রশান্ত মহাসাগরের উপর দিয়ে টানা উড়বে এই বিমান। হাওয়াই থেকে আমেরিকার বিভিন্ন শহর হয়ে থামবে নিউ ইয়র্কে। শেষ পর্যায়ে আতলান্তিক মহাসাগর পেরিয়ে চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে ফের আবুধাবিতে ফিরবে বিমানটি। সব মিলিয়ে এই পুরো সময়ে ৪০ হাজার কিমিরও বেশি রাস্তা পাড়ি দেওয়ার কথা রয়েছে তার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন