ইকো থেকে মেডিক্যাল-পর্যটক টানতে এখন নানা পরিকল্পনা, নানা ছাড়ের সুযোগ রয়েছে বাজারে। নির্বাচনের বাজারে ভিড় টানতে এ বার নতুন প্রকল্প বাজারে আনল আম আদমি পার্টি (আপ)।
আগামী ২৫ মার্চ বারাণসীতে সভা করতে চলেছেন আপ নেতা অরবিন্দ কেজরীবাল। সেই সভা ভরাতে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের জন্য বিশেষ প্যাকেজ আনার পরিকল্পনা নিল দল। অনেকেই যাকে বলছেন ‘ভোট পর্যটন’। প্যাকেজ ট্যুরের মাধ্যমে দলীয় কর্মীদের সভায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন আপ নেতৃত্ব। প্রথমে দিল্লির হনুমান রোডের সদর দফতরে খুল্লমখুল্লা ওই প্যাকেজের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি ছিল। আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের ভয়ে অবশ্য সেই পোস্টার খুলে ফেলেছে দল। তবে গোপনে প্রস্তুতি চলছে।
ইতিমধ্যেই বারাণসী থেকে নির্বাচন লড়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী। তাঁকে টক্কর দিতে পাঞ্জা কষা শুরু করে দিয়েছেন আপ নেতা অরবিন্দ কেজরীবালও। যদিও তিনি বারাণসী থেকেই লড়বেন কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। দল জানিয়েছে, আগামী মঙ্গলবার বারাণসীর জনসভাতেই গণভোটের মাধ্যমে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ফলে রাজনৈতিক দিক থেকেই ওই সভার বিপুল গুরুত্ব রয়েছে আপ নেতৃত্বের কাছে। তাই সেখানে দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকা থেকে দলীয় কর্মীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষ প্যাকেজ আনতে উৎসাহী হয়েছে দল।
কী রয়েছে এই প্যাকেজে?
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ওই প্যাকেজের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে এগারোশো টাকা। কর্মী-সমর্থকেরা একবার ওই টাকা দিলেই নিশ্চিন্ত। আপ সূত্রের খবর, কোনও কর্মী ওই টাকা দিলে তাঁকে ট্রেনে করে বারাণসী নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব দলের। শুধু তাই নয়, সেখানে থাকা ও তিন বেলা
খাবারের দায়িত্ব নেবে দল। একই সঙ্গে রয়েছে ‘ডিসকাউন্ট প্যাকেজ’ও। আর্থিক ভাবে দুর্বল সমর্থকদের জন্য রয়েছে পাঁচশো টাকা ছাড়ের ব্যবস্থাও। তাঁদের জন্য থাকা-খাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও পার্থক্য থাকছে না। কেবল ট্রেনের বদলে বাসে করে বারাণসী নিয়ে যাওয়া হবে সেই সমর্থকদের। আজ সদর দফতরে আপ কর্মী বিশাল বৈভবের দাবি, “এখনও পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ বারাণসী যাওয়ার জন্য আগ্রহ দেখিয়েছেন। অন্তত দশ হাজার লোক যাবেন বলেই আমাদের আশা।”
অত লোক নিয়ে যেতে পারা যাবে কি না তা নিয়ে সংশয় থাকলেও ভোট প্যাকেজে রথ দেখার সঙ্গে কলা বেচা অর্থাৎ তীর্থদর্শনের ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে। মুখে অবশ্য তা স্বীকার করতে চাইছেন না দলীয় নেতৃত্ব। উপস্থিত এক কর্মকর্তার কথায়, “যারা যাবেন তাদের তো আমরা বেঁধে রাখব না। সভার আগে বা পরে যদি কেউ বিশ্বনাথ মন্দির বা দশাশ্বমেধ ঘাট ঘুরে আসতে চান তা হলে তো আটকাতে পারব না।” রাজনারায়ণ পার্কে কেজরীবালের সভা হবে। সেখান থেকে বারাণসীর উল্লেখযোগ্য স্থানগুলি ঘুরে দেখার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা রাখার কথাও ভাবছে দল।
প্রথমে ভগৎ সিংহের মৃত্যুদিন ২৩ মার্চ মোদীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার ডাক দেওয়ার পরিকল্পনা নেন অরবিন্দ। উত্তরপ্রদেশে বিধান পরিষদের নির্বাচন থাকায় তা বাতিল করে দিতে হয়। নতুন দিন হিসেবে বেছে নেওয়া হয় ২৫ মার্চকে। ইতিমধ্যেই ওই সভা সফল করার জন্য বারাণসীতে ঘাঁটি গেড়েছেন কেজরীবাল ঘনিষ্ঠ সঞ্জয় সিংহ। আপের সদস্য সংগ্রহ অভিযানে দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। তাই বারাণসী সংলগ্ন ইলাহাবাদ, জৌনপুর, মউ, আজমগড়ের মতো প্রত্যেক জেলা থেকে অন্তত পাঁচ হাজার করে কর্মীকে সভায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে দল।