Bangladesh Violence

পুড়ল সংবাদপত্রের অফিস, তাণ্ডব ছায়ানটে, আক্রান্ত ভারতীয় উপদূতাবাস, চলল গুলিও! উত্তাল বাংলাদেশের ছবি প্রকাশ্যে

জুলাই আন্দোলনের নেতা হাদির মৃত্যুর পরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে বাংলাদেশে। বৃহস্পতিবার রাতেই ঢাকার শাহবাগে প্রচুর মানুষের জমায়েত হয়। শুরু হয় বিক্ষোভ। অচিরেই সেই বিক্ষোভ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:০০
Share:
০১ ১৭

নতুন করে উত্তাল বাংলাদেশ। ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে ভারতের পড়়শি দেশে। উত্তেজিত জনতার রোষের মুখে পড়তে হয়েছে সাংবাদিকদেরও।

০২ ১৭

জুলাই আন্দোলন (২০২৪ সালের অগস্ট মাসে যার জেরে হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন)-এর অন্যতম নেতা হাদি গত নভেম্বরে নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে জানিয়েছিলেন, দেশি-বিদেশি অন্তত ৩০টি নম্বর থেকে তাঁকে ফোন ও মেসেজ পাঠিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

Advertisement
০৩ ১৭

ওই পোস্টে তিনি এ-ও দাবি করেছিলেন, আওয়ামী লীগের ‘খুনি’ সমর্থকেরা তাঁকে সর্বক্ষণ নজরদারিতে রাখছে। এর পর ইনকিলাব মঞ্চে বার্তা দেওয়া হয়েছিল, জাতীয় সংসদের আসন্ন নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে লড়বেন হাদি।

০৪ ১৭

গত ১২ ডিসেম্বর গুলিবিদ্ধ হন হাদি। ওই দিন দুপুরে ঢাকার পুরনো পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতা হাদি। মাথায় গুলি করা হয়েছিল তাঁর।

০৫ ১৭

ইউনূস সরকারের অভিযোগ, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্র লীগের এক কর্মী হাদিকে গুলি করেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারি উদ্যোগে হাদিকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি তাঁকে। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।

০৬ ১৭

হাদির মৃত্যুর পরেই উত্তেজনা ছড়ায় বাংলাদেশে। বৃহস্পতিবার রাতেই ঢাকার শাহবাগে প্রচুর মানুষের জমায়েত হয়। শুরু হয় বিক্ষোভ। অচিরেই সেই বিক্ষোভ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।

০৭ ১৭

বিক্ষোভকারীদের রোষের মুখে পড়ে সে দেশের সংবাদমাধ্যমও। ঢাকার কারওয়ান বাজারে ‘প্রথম আলো’ এবং ‘দ্য ডেলি স্টার’-এর অফিসে ভাঙচুরের পর আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ভিতরে আটকে পড়েন কর্মীরা।

০৮ ১৭

‘দ্য ডেলি স্টার’-এর মহিলা সাংবাদিক জ়াইমা ইসলাম বৃহস্পতিবার রাতে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে লেখেন, “আমি ঠিক করে শ্বাস নিতে পারছি না। এখানে খুব বেশি ধোঁয়া। আমি ভিতরে রয়েছি। আপনারা আমায় হত্যা করছেন।”

০৯ ১৭

রাত ২টো নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে সব সাংবাদিককে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে আনা হলেও শুক্রবার দুই সংবাদপত্রের কোনও মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হয়নি। নিরাপত্তাজনিত কারণে কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের ছুটি দেওয়ায় ডিজিটাল সংস্করণেও কাজ প্রায় বন্ধ রয়েছে।

১০ ১৭

‘বিবিসি বাংলা’র প্রতিবেদন অনুসারে, দমকল আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ভিতরে আটকে পড়া কর্মীদের উদ্ধার করা হয়। আটকে পড়া সাংবাদিকদের একাংশ পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন।

১১ ১৭

অন্য দিকে, খুলনায় এক সাংবাদিককে গুলি করে হত্যা করে উত্তেজিত জনতা। ময়মনসিংহে এক যুবককে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে। শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডির বাড়িতেও ফের ভাঙচুর চালানো হয় বৃহস্পতিবার রাতে। স্থানীয় সংবাদপত্রগুলি জানিয়েছে, রাজশাহীতেও মুজিবের অপর একটি বাড়ি এবং আওয়ামী লীগের দফতর ভাঙচুর করা হয়েছে।

১২ ১৭

বাংলাদেশের বহু জায়গাতেই বিক্ষোভকারীদের মুখে ছিল শেখ হাসিনা এবং ভারত-বিরোধী স্লোগান। চট্টগ্রামে ভারতীয় উপদূতাবাস লক্ষ্য করে ঢিল-পাটকেল ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে বিক্ষোভকারীদের একাংশের বিরুদ্ধে। রাত থেকে উপদূতাবাসের সামনে অবস্থানে বসেছেন ছাত্র-যুবদের একাংশ।

১৩ ১৭

বিক্ষোভকারীদের আগ্রাসন থেকে রেহাই পায়নি দেশের প্রখ্যাত সাংস্কৃতিক মঞ্চ ছায়ানটও। রাতভর ছায়ানট ভবনে তাণ্ডব ও লুটপাট চলেছে। আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। আছড়ে ভাঙা হয়েছে হারমোনিয়াম। বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাত ১টা নাগাদ ধানমন্ডিতে ছায়ানটের ভবনে হামলা চালান বিক্ষোভকারীরা। লাঠি দিয়ে ভাঙা হয় চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ, দরজা, জানলা। ছায়ানটের সাততলা ভবনের প্রতিটি ঘরে ঢুকে ভাঙচুর করা হয়েছে বলে খবর। পরে অগ্নিসংযোগ করা হয় একাধিক জায়গায়।

১৪ ১৭

সমাজমাধ্যমে ছায়ানটের বিধ্বস্ত ঘরগুলির ছবি এবং ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত সন্‌জীদা খাতুনের ছবি ছিঁড়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। ছেঁড়া হয়েছে লালনের ছবিও। দল বেঁধে সেখানে হামলা চালানো হয়েছে। আগুন নেবার পর ঘর জুড়ে পড়ে রয়েছে কালো ছাই। এই সমস্ত ছবি ও ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম।

১৫ ১৭

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি নিয়ে চিন্তিত মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। পরিস্থিতি আঁচ করেই গভীর রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন ইউনূস। সেখানে তিনি ‘ধৈর্য ও সংযম’ বজায় রাখার আবেদন জানান। কিন্তু ঘটনাপ্রবাহ বলছে, বিক্ষোভকারীরা দেশের অন্তর্বর্তী প্রধানের আবেদন কার্যত অগ্রাহ্য করেছেন।

১৬ ১৭

বৃহস্পতিবার রাতেই ইউনূস জানিয়েছেন, হাদির মৃত্যুতে আগামী শনিবার বাংলাদেশে শোকদিবস পালন করা হবে। জাতীয় পতাকাও অর্ধনমিত রাখা হবে। শুক্রবার আয়োজন করা হবে বিশেষ প্রার্থনার। সেই সঙ্গে ইউনূস জানান, হাদির স্ত্রী ও সন্তানের দায়িত্ব গ্রহণ করবে সরকার। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে শনিবার ঢাকায় উচ্চপর্যায়ের বৈঠকও ডেকেছেন ইউনূস।

১৭ ১৭

হাদির মৃত্যুর ঘটনায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকেও শোকপ্রকাশ করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, হত্যাকারীর উপযুক্ত শাস্তির দাবি। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে হাদির দেহ বাংলাদেশে ফিরবে। হাদির দেহ ফিরলে পরিস্থিতি নতুন করে উত্তপ্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই।

সব ছবি: রয়টার্স এবং পিটিআই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement