ধ্বংসের আবহে জীবনের জয়গান।
প্রায় ৩৯ ঘণ্টা ধ্বংসস্তূপের তলায় চাপা পড়ে থাকার পরেও মৃত্যুকে হারিয়ে দিলেন এক মহিলা-সহ দু’জন। শনিবার চেন্নাইয়ের শহরতলি পোরুর এলাকার মউলিভক্কমে ভেঙে পড়া নির্মীয়মাণ ১১তলা বহুতলটির ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে সোমবার সকালে দু’জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া ৩৫ বছরের মহিলা নীনামাল অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা। অন্য জনের পরিচয় জানা যায়নি। উদ্ধারকারী দল তাঁদের হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
সবার ভাগ্যই অবশ্য এমন ভাল নয়। বহুতল ভেঙে পড়ার এই ঘটনায় এ দিন মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২০। তবে এতেই বিপর্যয় থামছে না। এখনও অন্তত ৩৯ জন ইট-কাঠ-পাথরের তলায় চাপা পড়ে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ দিন চোখে-মুখে উদ্বেগ নিয়ে ধ্বংসস্তূপের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা মুর্গেশ। যদি তাঁর শ্রমিক ভাই লোগেশের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়। অবশেষে ভেঙে পড়লেন মুর্গেশ। কণ্ঠ থেকে ছিটকে বেরিয়ে এল আর্তি, “মনে হচ্ছে ভাই আর বেঁচে নেই।” তাঁর চোখে তখন জল। ঘটনাস্থলেও তখন চলছে প্রবল ঝড়-বৃষ্টি। আর এর ফলে উদ্ধারকাজে অসুবিধা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের ডিআইজি এসপি সেলভান।
মুর্গেশের মতোই মাদুরাইয়ের একটি গ্রামে স্বামীর প্রতীক্ষায় পথ চেয়ে রয়েছেন আলাগুরানি। তিনি বলেন, “আমার স্বামী ওই বহুতলে রাজমিস্ত্রির কাজ করছিলেন। এখন শুনছি তিনি মারা গিয়েছেন। সরকারের উচিত আমাদের পরিবারকে সাহায্য করা।” তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার পরে দুর্গতদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডুও। এ দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে তিনি বলেন, “আমি কেন্দ্রের কাছে আরও আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে উদ্ধারকাজে সাহায্য করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি।” জখম ও মৃতদের মধ্যে অনেকেই অন্ধ্রের বাসিন্দা। জখমদের দেখতে নায়ডু এ দিন শ্রী রামচন্দ্র মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও যান। তাঁর রাজ্যের মৃতদের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী।