মোদীর প্রচারে উড়ছে কালো টাকা, দাবি কংগ্রেসের

ভোটের হাওয়া গরম করে দিয়ে, নরেন্দ্র মোদীর প্রচারে কালো টাকার যথেচ্ছ ব্যবহারের অভিযোগ সামনে নিয়ে এল কংগ্রেস। নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বড় পুঁজিপতিদের আঁতাঁত নিয়ে ক’দিন আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পালানিয়প্পন চিদম্বরম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৪ ০২:৩৬
Share:

ভোটের হাওয়া গরম করে দিয়ে, নরেন্দ্র মোদীর প্রচারে কালো টাকার যথেচ্ছ ব্যবহারের অভিযোগ সামনে নিয়ে এল কংগ্রেস।

Advertisement

নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বড় পুঁজিপতিদের আঁতাঁত নিয়ে ক’দিন আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পালানিয়প্পন চিদম্বরম। আজ কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস মুখপাত্র আনন্দ শর্মা সরাসরি অভিযোগ এনেছেন, ভোট প্রচারে কালো টাকা ব্যবহার করছেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কথায়, “নির্বাচনী প্রচারে ১০ হাজার কোটি টাকা খরচ করছে বিজেপি। এর মধ্যে ৯০ শতাংশই কালো টাকা!”

কীসের ভিত্তিতে এমন অভিযোগ করছেন আনন্দ শর্মা? কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রীর বক্তব্য,“এ ব্যাপারে আমাদের কাছে খবর রয়েছে।” তিনি জানান, “দু-একদিনের মধ্যেই মোদীর কেচ্ছা-কেলেঙ্কারিও ফাঁস করতে চলেছে কংগ্রেস।”

Advertisement

মোদীর প্রচারে কালো টাকার ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ জানাতে কংগ্রেস দফতরে আজ এক সাংবাদিক বৈঠক করেন আনন্দ শর্মা। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, ভোটে বিপুল অঙ্কের কালো টাকার ব্যবহার হলে সরকার কী করছে? তা হলে কি বিজেপি-র কাছে প্রচারে পিছিয়ে গিয়ে এখন থেকেই কান্না জুড়েছে কংগ্রেস?

আনন্দ শর্মা অবশ্য এই প্রশ্ন কৌশলে এড়িয়ে যান। বরং কটাক্ষ করে বলেন, “ভোটে জিতলে কালো টাকা উদ্ধারের অঙ্গীকার করেছেন মোদী। তাঁর যে সেই ক্ষমতা রয়েছে এখন থেকেই নমুনা দেখাচ্ছেন তিনি।” তবে বাণিজ্যমন্ত্রী জবাব এড়ালেও রাজনৈতিক শিবিরের অনেকেই মনে করছেন, নরেন্দ্র মোদীর প্রচার সভার জৌলুস, সংবাদমাধ্যম, টিভি, রেডিও এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর বিজ্ঞাপনের তুলনায় কংগ্রেস অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছে। পেশাদার সংস্থাকে দিয়ে টিম মোদীর প্রচার ও বিজ্ঞাপন শুধু কংগ্রেস কেন সবক’টি রাজনৈতিক দলকে ছাপিয়ে গিয়েছে। তা ছাড়া পুঁজিপতি থেকে শুরু করে ছোট ব্যবসায়ীদের মধ্যে বেশিরভাগই এখন কংগ্রেসের তুলনায় বিজেপি-কে প্রচারের জন্য বেশি চাঁদা দিচ্ছেন। এ হেন পরিস্থিতিতেই বিজেপি-র বিরুদ্ধে কালো টাকা ব্যবহারের অভিযোগ এনেছে কংগ্রেস।

তবে প্রকাশ্যে না বললেও শাকিল আহমেদ, বি কে হরিপ্রসাদের মতো কংগ্রেসেরই একাংশ মনে করেন, এ ব্যাপারে বিজেপি-র সাফল্যের তুলনায় কংগ্রেসের ব্যর্থতা অনেক বেশি। কংগ্রেসের এক সাধারণ সম্পাদকের কথায়, নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে আজ যে রকম আক্রমণ করেছেন আনন্দ শর্মা, তা অনেক আগেই করা উচিত ছিল। কিন্তু সাত-আট মাস ধরে কংগ্রেস শুধু দ্বন্দ্বে ভুগেছে যে সরাসরি মোদীকে আক্রমণ করা ঠিক হবে কি হবে না! আর সেই ফাঁকে পেশাদার সংস্থাকে দিয়ে মোদী তাঁর প্রচার অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছেন। ভোট ফলাফল যাই হোক, তাঁর ও বিজেপি-র অনুকূলে হাওয়া তৈরি করতে পেরেছেন মোদী। আর তাই পুঁজিপতি ও ব্যবসায়ীরা কংগ্রেসের তুলনায় মোদীর ওপরেই বাজি ধরছেন। স্বাভাবিক ভাবেই প্রচারের জন্য বণিকমহলের থেকে অনেক বেশি চাঁদা পাচ্ছে বিজেপি।

তবে কংগ্রেসের অভিযোগ একেবারে খারিজ করে দিয়েছে বিজেপি। দলের মুখপাত্র সুধাংশু ত্রিবেদী বলেন, “বিজেপি-র হিসেবনিকেশ খুবই স্বচ্ছ। যে কেউ চাইলে দেখতে পারেন। উল্টে আমাদের প্রশ্ন হল, করদাতাদের টাকা দিয়ে কংগ্রেস যে এত দিন ধরে ভারত নির্মাণের নামে নিজেদের প্রচার করল ,তার হিসাব কে দেবে?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন