নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে মেরুকরণের রাজনীতিকে হাতিয়ার করতে শেষ লগ্নে মরিয়া হয়ে উঠেছে নানা বিরোধী দল। জম্মু-কাশ্মীরের ফারুক আবদুল্লা থেকে পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই তালিকায় রয়েছেন অনেকেই।
গত কাল শ্রীনগরের একটি সভায় ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক বলেন, “যদি ভারত সাম্প্রদায়িক হয়, তা হলে কাশ্মীর ভারতের সঙ্গে থাকবে না। কাশ্মীরের মানুষ কোনও অবস্থাতেই সাম্প্রদায়িকতাকে বরদাস্ত করবে না। নরেন্দ্র মোদীকে যাঁরা ভোট দেবেন, তাঁদের সাগরে ঝাঁপ দেওয়া উচিত।”
সম্প্রতি গিরিরাজ সিংহ মন্তব্য করেছিলেন, যাঁরা মোদীর বিরোধিতা করবেন, তাঁদের পাকিস্তানে যাওয়া উচিত। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা প্রবীণ তোগাড়িয়াও এই ধরনের সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করেছিলেন। গিরিরাজের মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু মোদীর বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িকতার তাস খেলা অব্যাহত রেখেছে বিরোধী শিবির।
আজ ফারুকের মন্তব্যের জবাব দিয়েছেন মোদী। ফারুক ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধেই পাল্টা অভিযোগ তোলেন তিনি। বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী দাবি করেন, কাশ্মীরের রাজনীতিকে সাম্প্রদায়িক করেছে আবদুল্লা পরিবারই। মোদীর কথায়, “কাউকে সাগরে ঝাঁপ দেওয়ার কথা বললে, আগে তাঁর নিজেরই আয়নার সামনে দাঁড়ানো উচিত। আয়নার সামনে ধরা উচিত তাঁর বাবা শেখ আবদুল্লার মুখটিও।”
মোদীর মতে, কাশ্মীরই দেশের একমাত্র জায়গা, যেখানে পণ্ডিতদের শুধুমাত্র ধর্মের ভিত্তিতে উৎখাত করা হয়েছে। যে দেশের রক্তে ধর্মনিরপেক্ষতার স্রোত বইছে, সে দেশে এই ঘটনাই ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্নে সব থেকে বড় আঘাত। কাশ্মীরে সুফি মতবাদের ঐতিহ্য ছিল। কিন্তু সেই ঐতিহ্যে রাজনৈতিক স্বার্থে সাম্প্রদায়িকতার রং দেওয়া হয়েছে।
নরেন্দ্র মোদীর এই পাল্টা অভিযোগের জবাব দিতে ফারুকের ছেলে ও মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা অবশ্য বলেন, “আমাদের জমানায় কোনও পণ্ডিতকে উৎখাত হতে হয়নি। বিজেপি ও তার সহযোগীদের জমানাতেই এটি হয়েছে।” অর্থাৎ, ওমরের নিশানা পিডিপির মেহবুবা মুফতির দিকে, যিনি কিছু দিন আগেও মোদীর প্রতি নরম মনোভাব পোষণ করেছেন। বিজেপি নেতৃত্বও ভোটের পরে মুফতির সঙ্গে সমঝোতার সম্ভাবনা এখনও উড়িয়ে দেননি।