মোদীর সৌজন্যে তিনি মুগ্ধ, ফের দাবি তারুরের

আগেও নিজের লেখায় নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করায় দলের মধ্যে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল কংগ্রেস সাংসদ এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শশী তারুরকে। আজ কলকাতায় ফের সেই বিতর্ক উস্কে দিলেন তিনি। এখানে ‘কলকাতা লিটারারি ফেস্টিভ্যালে’র আসরে নিজের বই প্রকাশ উপলক্ষে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আজ শশী বললেন, লোকসভা ভোটে জয়লাভের পরে নরেন্দ্র মোদী তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৫৫
Share:

ছেলে কণিষ্কের সঙ্গে শশী তারুর। কলকাতায় একটি বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানে। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য।

আগেও নিজের লেখায় নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করায় দলের মধ্যে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল কংগ্রেস সাংসদ এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শশী তারুরকে। আজ কলকাতায় ফের সেই বিতর্ক উস্কে দিলেন তিনি।

Advertisement

এখানে ‘কলকাতা লিটারারি ফেস্টিভ্যালে’র আসরে নিজের বই প্রকাশ উপলক্ষে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আজ শশী বললেন, লোকসভা ভোটে জয়লাভের পরে নরেন্দ্র মোদী তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। মোদীর এই সৌজন্য তাঁর ভাল লেগেছিল। কারণ সুনন্দাকে নিয়ে তাঁর সঙ্গে মোদীর যে বাদানুবাদ চলেছিল, সেই প্রসঙ্গ ভুলে গিয়ে মোদী যে তাঁকে সৌজন্য দেখাতে কসুর করেননি, তাতেই খুশি শশী। তাঁর মন্তব্য, “আমি কখনও ভাবিনি উনি এমন করতে পারেন। এর আগে কোনও বিরোধীর ক্ষেত্রে সৌজন্যের এমন নজির উনি (মোদী) দেখিয়েছেন বলে মনে পড়ে না, তাই কিছুটা অবাক আমি।” এই প্রসঙ্গেই টুইটারের বাদানুবাদের কথা মনে করান শশী, “সুনন্দা মারা যাওয়ার বেশ কিছু দিন আগে প্রকাশ্যেই মোদীর সঙ্গে আমার তর্ক হয়। কারণ উনি আমার স্ত্রীকে নিয়ে কিছু মন্তব্য করেছিলেন।”

বিতর্কের শুরু শিমলায় লোকসভা ভোটের নির্বাচনী প্রচারে। সেখানে মোদীর আক্রমণের লক্ষ্য ছিলেন তারুর-পত্নী। মোদী বলেছিলেন, “ওয়াহ্ কেয়া গার্লফ্রেন্ড হ্যায়! আপনে কভি দেখা হ্যায় ৫০ ক্রোড় কি গার্লফ্রেন্ড?” (কী গার্লফ্রেন্ড! ৫০ কোটির এমন গার্লফ্রেন্ড কেউ দেখেছেন?)। টুইটারে যার জবাব দেন শশী। মোদীর উদ্দেশে তিনি লেখেন, “আপনার কল্পিত ৫০ কোটির চেয়ে আমার স্ত্রী অনেক বেশি মূল্যবান। ও আমার কাছে অমূল্য।” এই ধরনের বাক্য বিনিময়ের পরেও এনডিএ সরকারের ‘স্বচ্ছ ভারত’ প্রকল্পে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছ থেকে আমন্ত্রণ পেয়ে যথেষ্ট বিস্মিত হন শশী। প্রকল্পে যোগ দিতে আপত্তিও করেননি তিনি। তাঁর যুক্তি ছিল, “এই কাজে আমার বিশ্বাস ছিল, তাই রাজি হয়েছি।”

Advertisement

কিন্তু তাঁর মুখে আজ এই প্রথম মোদীর প্রশংসা শোনা গেল, এমন নয়। কেন্দ্রে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে তারুর তাঁর লেখায় মোদীর প্রশংসা করেছিলেন। সুনন্দা-তদন্ত তার পিছনে কোনও ভূমিকা নিচ্ছিল কি না, এই প্রশ্নও তখন উঠেছিল বিজেপি এবং কংগ্রেস দু’দলের অন্দরেই। তবে আজ সুনন্দা-তদন্ত প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি শশী।

নয়াদিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ আজ আবার জানিয়ে দিয়েছেন, সুনন্দার মৃত্যুর তদন্তে কোনও রাজনৈতিক চাপ দেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেছেন, দিল্লি পুলিশ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করছে। তাঁর কথায়, “রাজনৈতিক চাপ বলে কিছু নেই। তদন্ত নিরপেক্ষই হচ্ছে। আমাদের তরফ থেকে কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি।” যদিও তারুরের অভিযোগ, স্ত্রীর মৃত্যুর তদন্ত যে পথে এগোচ্ছে, তাতে তিনি সন্তুষ্ট নন। এ সপ্তাহের শুরুতে কংগ্রেসও বলেছে অনুমান এবং ভুল তথ্যের ভিত্তিতে এগোনো হচ্ছে। দলের তরফে এ-ও জানানো হয়, শশী এই হত্যার সঙ্গে জড়িত নন।

গত বছর এয়ার ইন্ডিয়ার যে বিমানে শশী-সুনন্দা প্রকাশ্যে বাদানুবাদে জড়িতে পড়েন, সেই বিমানের কর্মীদেরও আজ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দিল্লি পুলিশ। সুনন্দা খুন হওয়ার আগে শশী তারুরের গতিবিধি সংক্রান্ত সব তথ্য ফের খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এই সপ্তাহে হয়তো শশীকে জেরা করা হতে পারে বলে পুলিশের একটি সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে। দিল্লির যে পাঁচতারা হোটেলে শশীর সঙ্গে ছিলেন সুনন্দা, সেই হোটেলের ম্যানেজারকেও প্রশ্ন করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন