নিরস্ত করা গেল না লালমুনি চৌবেকে। নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ১০ মিনিট কথা বলার পরেও প্রবীণ বিজেপি নেতার সিদ্ধান্তে কোনও বদল ঘটল না। নির্বাচনের টিকিট না পেয়ে যশোবন্ত সিংহের পথে হেঁটেই তিনি বক্সার থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানিয়ে দিলেন। চার বারের সাংসদ লালমুনি বিজেপি থেকে পদত্যাগেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পাশাপাশি, আর এক বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী চন্দ্রমোহন রাই আজ দলের রাজ্য নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন।
লালমুনির ঘটনাকে লোকসভা ভোটের মনোনয়ন ঘিরে বিজেপিতে নবীন বনাম প্রবীণ টানাপড়েনেরই নয়া অধ্যায় বলে মনে করা হচ্ছে। বিহার বিজেপির অন্যতম সংগঠক লালমুনি চৌবে। জনসঙ্ঘের সময় থেকেই তিনি দলে আছেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু তিনি। গত লোকসভা ভোটে বক্সার থেকে হারের পর এ বার আর টিকিট পাননি লালমুনি। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তিনি। রাজনাথ সিংহ থেকে শুরু করে নরেন্দ্র মোদী সকলেই দফায় দফায় তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু কোনও স্তোকবাক্যই লালমুনিকে শান্ত করতে পারেনি। এরই মধ্যে চন্দ্রমোহন রাইয়ের পদত্যাগের সিদ্ধান্তে নির্বাচনের আগে বিহার বিজেপিতে জল আরও ঘোলা হয়ে উঠল। দলের সভাপতি রাজনাথ সিংহকে চিঠি লিখে চন্দ্রমোহন তাঁর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “নরেন্দ্র মোদীর প্রতি আমার কোনও অভিমান নেই। কিন্তু রাজ্যের কয়েক জন নেতা দলকে কুক্ষিগত করে রেখেছেন। আমার প্রতিবাদ তাঁদের বিরুদ্ধে।” অনেকেই মনে করছেন, চন্দ্রমোহনের আক্রমণের লক্ষ্য বিহার বিজেপির নেতা তথা প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদী।
চন্দ্রমোহন রাই পশ্চিম চম্পারণের চনপটিয়া কেন্দ্রের বিধায়ক। নীতীশের নেতৃত্বে রাজ্যের প্রথম এনডিএ সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন। ২০০৮ সালে সরকারি কাজে যখন তিনি রাজস্থানে ছিলেন, সেই সময় তাঁকে না জানিয়েই মন্ত্রিসভা থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ২০১০ সালে দ্বিতীয় মন্ত্রিসভায় তাঁকে জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী করা হলেও কোনও সহযোগিতা তিনি পাননি বলেই চন্দ্রমোহনের অভিযোগ। স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকাকালীন চন্দ্রমোহন যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছিলেন। কিন্তু তৎকালীন উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদী তাঁর বিরুদ্ধে কলকাঠি নাড়তেন বলে চন্দ্রমোহনের ঘনিষ্ঠ মহলের তরফে সেই সময়ে অভিযোগ তোলা হয়েছিল। তাঁর পদত্যাগের সিদ্ধান্তে চম্পারণে বিজেপির লড়াই কঠিন হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে দলে।