রফাতেও থামবে না ধর্ষণ-খুন মামলা: সর্বোচ্চ আদালত

ধর্ষণ বা খুনের মতো গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে অভিযোগকারী ও অভিযুক্তের মধ্যে সমঝোতা হয়ে গেলেও মামলা খারিজ হবে না বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। এই ধরনের অপরাধে আদালতের বাইরে অর্থের বিনিময়ে সমঝোতা কিংবা অভিযুক্তের তরফে প্রভাব খাটিয়ে আপসে রাজি করানো ইত্যাদি সমাজের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে বলে মনে করে বিচারপতি রঞ্জনা প্রকাশ দেশাই ও এন ভি রমানার বেঞ্চ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৪ ০২:৩২
Share:

ধর্ষণ বা খুনের মতো গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে অভিযোগকারী ও অভিযুক্তের মধ্যে সমঝোতা হয়ে গেলেও মামলা খারিজ হবে না বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। এই ধরনের অপরাধে আদালতের বাইরে অর্থের বিনিময়ে সমঝোতা কিংবা অভিযুক্তের তরফে প্রভাব খাটিয়ে আপসে রাজি করানো ইত্যাদি সমাজের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে বলে মনে করে বিচারপতি রঞ্জনা প্রকাশ দেশাই ও এন ভি রমানার বেঞ্চ। তবে সরাসরি সমাজের উপর প্রভাব ফেলবে না এই ধরনের মামলার ক্ষেত্রে দু’পক্ষের আপসে কোনও আপত্তি নেই শীর্ষ আদালতের।

Advertisement

সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ বলেন, “এমনটাই তো হওয়ার কথা। নাগরিকের জীবন এবং সম্মান বাঁচানো রাষ্ট্রের কর্তব্য। তাই খুন অথবা ধর্ষণ আদতে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধেই অপরাধ। ব্যক্তিস্বার্থ নয়, এই ধরনের গুরুতর অপরাধে রাষ্ট্রের স্বার্থ জড়িত। তাই পারস্পরিক মিটমাটের কোনও প্রশ্নই ওঠে না।” তাঁর মতে, “সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ, কিংবা সামান্য কিল-চড় মারার ক্ষেত্রে দু’পক্ষের মধ্যে সন্তোষজনক সমাধান হতেই পারে। কিন্তু খুন ও ধর্ষণের ক্ষেত্রে কখনই নয়।”

ধর্ষণ ও খুনের মতো অপরাধে দু’পক্ষের পারস্পরিক মিটমাট সমাজের কাছে ভুল বার্তা দেবে বলে মত সুপ্রিম কোর্টেরও। খুন ও ধর্ষণের বেশ কিছু মামলার আসামিরা সম্প্রতি মামলা তুলে নিতে সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানিয়েছিল। ওই আসামিরা আর্জিতে জানায়, মামলার অন্য পক্ষের সঙ্গে সন্তোষজনক মীমাংসা করতে পেরেছে। সেই আর্জিগুলির শুনানির পরেই এই রায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

Advertisement

সুপ্রিম কোর্টের মতে, অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারীর পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে কোনও মামলা খারিজ করা হবে কি না, তা অবশ্যই খতিয়ে দেখতে পারে হাইকোর্ট। কিন্তু খুন কিংবা ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধে যেহেতু সমাজের নৈতিক দিক জড়িয়ে, তাই এ সব মামলা দু’পক্ষের পারস্পরিক সমঝোতায় মিটিয়ে ফেলা যায় না। এই ধরনের অপরাধ শুধু দু’পক্ষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। এর ক্ষতিকারক প্রভাব সমাজের সব স্তরের মানুষের উপরই পড়ে। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, কোনও অপরাধ নেহাতই ব্যক্তিগত পর্যায়ের এবং এতে সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা নেই, তা হলে তা পারস্পরিক সমঝোতায় মিটিয়ে ফেলার নির্দেশ দিতে পারে হাইকোর্ট। ওই মামলাগুলি চললে বরং সমঝোতা প্রক্রিয়া ফের ভেস্তে যেতে পারে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement