শশীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে কেরল যাচ্ছে পুলিশ

কংগ্রেস সাংসদ এবং প্রাক্তন মন্ত্রী শশী তারুরের স্ত্রী সুনন্দার মৃত্যুতে গত কাল দিল্লি পুলিশ খুনের মামলা দায়ের করায় যথেষ্ট অবাক হয়েছিলেন খোদ শশী। মামলা দায়ের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দিল্লি পুলিশ আজ তাঁকে আইনি নোটিস পাঠাল যত শীঘ্র সম্ভব তদন্তে সহযোগিতা করার জন্য।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৫৭
Share:

রাতে থানায় যাওয়ার সময় নিজের গাড়িতে শশী তারুর। ছবি: পিটিআই।

কংগ্রেস সাংসদ এবং প্রাক্তন মন্ত্রী শশী তারুরের স্ত্রী সুনন্দার মৃত্যুতে গত কাল দিল্লি পুলিশ খুনের মামলা দায়ের করায় যথেষ্ট অবাক হয়েছিলেন খোদ শশী। মামলা দায়ের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দিল্লি পুলিশ আজ তাঁকে আইনি নোটিস পাঠাল যত শীঘ্র সম্ভব তদন্তে সহযোগিতা করার জন্য।

Advertisement

শশী এই মুহূর্তে কেরলের ত্রিশুরে এক রিসর্টে বাতের চিকিৎসা করাচ্ছেন। নাগাল পাচ্ছে না সংবাদমাধ্যমও। এই অবস্থায় দিল্লি পুলিশের তিন সদস্যের দল কেরল যাচ্ছে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে। তবে এইমসের যে চূড়ান্ত ময়নাতদন্ত রিপোর্টের উপরে ভিত্তি করে সুনন্দার মৃত্যুতে খুনের মামলা দায়ের করেছে পুলিশ, সেই রিপোর্ট প্রসঙ্গে এইমসের মেডিক্যাল বোর্ডের তৎকালীন প্রধান সুধীরকুমার গুপ্ত কিন্তু একটি বিষয় স্পষ্ট করেছেন।

তাঁর কথায়, “আমাদের রিপোর্টে কোথাও বলা হয়নি খুন করা হয়েছে। আমরা বলেছি বিষক্রিয়াই মৃত্যুর কারণ। এ বার পুলিশ তদন্ত করে যা বলার বলবে।”

Advertisement

আজ আবার একটি সূত্রে প্রকাশ্যে এসেছে গত বছর নভেম্বরে দিল্লি পুলিশ কমিশনারকে লেখা শশীর একটি ই মেল। যাতে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, দিল্লি পুলিশ তাঁর পরিচারকের উপরে নির্যাতন চালাচ্ছে। জোর করে তাঁকে দিয়ে বলানোর চেষ্টা হচ্ছে, শশী এবং ওই পরিচালক মিলেই সুনন্দাকে খুন করেছেন! তবে আজ দিল্লি পুলিশ কমিশনার বি এস বাসি জানিয়েছেন, শশীর ওই দাবি ঠিক নয়। পাশাপাশি সুনন্দার মৃত্যুর তদন্তে তৈরি করা হয়েছে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)।

প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ওই ইমেলে আঙুল তোলা হয়েছিল, দিল্লি পুলিশের বিশেষ এক জন অফিসারের বিরুদ্ধে। তারুরের অভিযোগ অনুযায়ী, তাঁর পরিচারক নারায়ণ সিংহের উপরে বারবার শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। যা বেআইনি এবং কোনও অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না।

শশীর দাবি, তিনি এবং নারায়ণ পুলিশের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন। গত বছর ৭ নভেম্বর দিল্লি পুলিশের চার অফিসার টানা ১৬ ঘণ্টা জেরা চালান। তার পরের দিনও টানা ১৪ ঘণ্টা জেরা চলে। কিন্তু শশীর বয়ান অনুয়ায়ী, এই সময়ের মধ্যে অফিসারদের এক জন নারায়ণের উপরে অকথ্য অত্যাচার করেন। তাঁকে জোর করে বলিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়, শশী এবং নারায়ণই সুনন্দাকে খুন করছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি সেই সময়ে ফোনে বাসির সঙ্গে কথাও বলেছিলেন।

তার তিন দিন পরে পুলিশ কমিশনারকে মেল করেন শশী। প্রশ্ন তোলেন, কোনও নিরপরাধ ব্যক্তিকে কেন জোর করে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে পুলিশ? সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদনও জানান কমিশনারকে।

তবে একটি সূত্রে দাবি, দিল্লি পুলিশের গত কালের ঘোষণায় তীব্র বিরক্ত এবং বিধ্বস্ত শশী। আপাতত কোচির একটি আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাকেন্দ্রে আর্থারাইটিসের চিকিৎসা চলছে তাঁর। ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধবদের কাছে তিনি নাকি জানিয়েছেন, দিল্লি পুলিশের এই আকস্মিক অবস্থান বদলের কারণ কী, তা জানতে চান তিনি। দিল্লি পুলিশের তরফে তিন অফিসার অবশ্য ইতিমধ্যেই রওনা দিয়েছেন কোচি। তাঁরা সেখানেই শশীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান বলে খবর। কালই ইঙ্গিত ছিল, নতুন করে তদন্ত শুরু হলে ফের জেরার মুখে পড়তে পারেন শশী। আজ জানানো হয়েছে, সিট তারুর-সহ তাঁর আত্মীয়, ব্যক্তিগত কর্মীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করবে। প্রশ্ন করা হবে সেই পাঁচতারা হোটেলের কর্মীদেরও যেখানে গত বছর ১৭ জানুয়ারি সুনন্দার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। হোটেলটির যে ফ্লোরে শশী-সুনন্দা ছিলেন, সেই ফ্লোরের সিসিটিভি ফুটেজ আগেই চেয়েছিল পুলিশ। হোটেল কর্তৃপক্ষ আজ জানান, তা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

তা ছাড়া, যে পাকিস্তানি সাংবাদিকের সঙ্গে শশী তারুরের ‘সম্পর্ক’ নিয়ে বিচলিত ছিলেন সুনন্দা, সেই মেহর তরারও এ দিন মুখ খুলেছেন। একটি টিভি চ্যানেলে তিনি বলেন, “ওরা যদি আমায় কিছু জিজ্ঞেস করতে চান, আমি জবাব দেব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন