স্বামীর হাতে নির্যাতিতার সমান বিচার

নিজেরই স্বামীর হাতে ধর্ষিত স্ত্রীকে আর পাঁচ জন ধর্ষিত মহিলার মতোই দেখতে হবে। একটি মামলায় অভিযুক্ত স্বামীর জামিন নাকচ করার সময় এমনই রায় দিয়েছে দিল্লির এক আদালত। কিছু দিন আগে দিল্লির কেশব পুরমের বাসিন্দা এক মহিলা আদালতের দ্বারস্থ হন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৪ ০৮:৩৯
Share:

নিজেরই স্বামীর হাতে ধর্ষিত স্ত্রীকে আর পাঁচ জন ধর্ষিত মহিলার মতোই দেখতে হবে। একটি মামলায় অভিযুক্ত স্বামীর জামিন নাকচ করার সময় এমনই রায় দিয়েছে দিল্লির এক আদালত। কিছু দিন আগে দিল্লির কেশব পুরমের বাসিন্দা এক মহিলা আদালতের দ্বারস্থ হন। তাঁর অভিযোগ, অন্তঃসত্ত্বা হওয়া সত্ত্বেও তাঁর স্বামী মদ্যপ অবস্থায় বারবার তাঁকে ধর্ষণ করত। শুধু তাই নয়, কী ভাবে গর্ভবতী স্ত্রীকে সে নিয়মিত ধর্ষণ করত, নিজের ন’বছরের ছেলেকে ফলাও করে সে কথা বলেওছে ওই ব্যক্তি। অনেক টালবাহানার পরে পুলিশ ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। কিন্তু এখন ওই মহিলাই চান, স্বামীকে আদালত জামিন দিক। তাঁর যুক্তি, কিছু দিনের মধ্যেই তিনি সন্তান প্রসব করবেন। আর এই অবস্থায় তাঁর দেখভালের কেউ নেই।

Advertisement

অতিরিক্ত দায়রা বিচারক কামিনী লাউ ওই মহিলার স্বামীর জামিনের আর্জি নাকচ করে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, এই বিকৃতমনস্ক ব্যক্তি কোনও ভাবেই জামিন পাওয়ার যোগ্য নয়। আদালত বলেছে, “ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খুবই গুরুতর। এই মুহূর্তে তাকে মুক্তি দেওয়া উচিত নয়। অভিযোগকারিণী নিজে স্বামীর মুক্তি চাইলেও আদালতও যে সে কথা মানবে তার কোনও মানে নেই।” সেই সঙ্গে ওই মহিলার দেখভালের জন্য দিল্লি সরকারকে বিশেষ নির্দেশও দিয়েছেন বিচারক। অভিযুক্ত ব্যক্তির জামিন নাকচ করে আদালত জানিয়েছে, বিবাহিত মহিলাদের ধর্ষণের ক্ষেত্রে যেখানে অভিযুক্ত ব্যক্তি অভিযোগকারিণীর স্বামী, সেখানে বেশির ভাগ সময়ই নির্যাতিতা মহিলাকে মুখ বুজে সব কিছু সহ্য করতে হয়। অন্য ধর্ষিতাদের ক্ষেত্রে সরকার যে ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়, স্বামী দ্বারা ধর্ষিতা মহিলারা সেই সাহায্যটা একেবারেই পান না। আর এই চিন্তাধারাটাই বদলাতে হবে বলে আদালত মনে করে। আর পাঁচটা ধর্ষিতা মহিলার মতোই নির্যাতিতা স্ত্রীরও একই সামাজিক, মানসিক ও আর্থিক সহায়তা প্রাপ্য বলে মত আদালতের।

গোটা মামলায় পুলিশের ভূমিকারও তীব্র সমালোচনা করেছে আদালত। উত্তর-পশ্চিম দিল্লির ডেপুটি কমিশনারকে ভর্ৎসনা করে আদালত বলেছে, “এই মামলাটি পুলিশের যতটা সহানুভূতির সঙ্গে দেখা উচিত ছিল, তা একেবারেই হয়নি। বলতে দ্বিধা নেই যে, অভিযোগকারিণী নিজের স্বামীর বিরুদ্ধেই ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন বলেই গোটা মামলায় পুলিশ এতটা নিরুত্তাপ ছিল।” দিল্লি পুলিশের যুগ্ম কমিশনারকে (রেঞ্জ) এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলেছে আদালত।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন