পুজোর পেটপুজোয় ভরসা অ্যাপ

বাড়ি বসে রেস্তোরাঁর হিট মেনুর হদিস মেলার মতো আকাশের চাঁদ আপাতত বিভিন্ন অ্যাপের সৌজন্যে হাতের মুঠোয়। তবে পুজোর দিনে মসৃণ ভাবে প্রিয় খাদ্যটিকে ঘরে ডেকে আনতে কয়েকটি পরামর্শ দিচ্ছে অ্যাপ সংস্থাগুলি।

Advertisement

ঋজু বসু

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৫৮
Share:

মাসখানেক আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় চটে লাল কসবার ভদ্রলোক। অ্যাপ মারফত বাড়ির কাছের ধাবায় অর্ডার করে তখন তাঁর চুল ছেঁড়ার দশা!

Advertisement

নেট ব্যাঙ্কিংয়ে টাকা মেটানোর পরেও সাধের বাটার চিকেনের ‘দেখা নাই’! অভিযোগ, সে যাত্রা ‘ডেলিভারি বয়’ নাকি খাবার নিয়েই ভাগলবা।

আর এক প্রবীণ মহিলার অভিজ্ঞতাও সুখের নয়। সল্টলেকে অ্যাপ মারফত অর্ডার করার ক’দিন পরে অজয়নগরে ফের খাবার আদেশ করেছেন তিনি। কিন্তু ভুল করে নয়া অর্ডার চলে গিয়েছিল সল্টলেকের ঠিকানাতেই।

Advertisement

দু’টি ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট অ্যাপ কর্তৃপক্ষ ক্ষমাটমা চেয়ে ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু খিদের মুখে গরমাগরম খাবারের চাহিদা না-মিটলে ঠিক সান্ত্বনা মেলে না। এ সব মাথায় রেখেই পুজোর দিনগুলো নিখুঁত পরিষেবার লক্ষ্যে তৈরি হচ্ছেন বিভিন্ন অ্যাপ কর্তৃপক্ষ।

যানজট, মেট্রোর ভিড় ঠেলে সব থেকে পছন্দের খানাটির হদিস পাওয়া আর সব থেকে আকর্ষক মণ্ডপের কাছাকাছি পৌঁছনো— কোনওটাই কম চ্যালেঞ্জের নয়! বাড়ি বসে রেস্তোরাঁর হিট মেনুর হদিস মেলার মতো আকাশের চাঁদ আপাতত বিভিন্ন অ্যাপের সৌজন্যে হাতের মুঠোয়। তবে পুজোর দিনে মসৃণ ভাবে প্রিয় খাদ্যটিকে ঘরে ডেকে আনতে কয়েকটি পরামর্শ দিচ্ছে অ্যাপ সংস্থাগুলি। যেমন, ১) একটু আগেভাগে অর্ডার দিন। কারণ, গত পুজোয় যানজটে সন্ধের পরে কিছু অসুবিধে হয়েছিল। তাই সান্ধ্য পার্টির চাহিদাটা দুপুর দুপুর জানিয়ে দেওয়া ভাল। ২) বিভিন্ন অ্যাপের মেনু মিলিয়ে বাড়ির কাছাকাছি রেস্তোরাঁ বুঝে কী খাবেন, ঠিক করাটাই ভাল।

এমনই একটি অ্যাপ সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট (মার্কেটিং) টি এস শ্রীবৎস বলছেন, ‘‘কলকাতার যানজটের হালটা বুঝে নিয়ে, বিভিন্ন রেস্তোরাঁর সঙ্গে কথা বলে অনেক আগে থেকে আমরা দল সাজিয়েছি।’’ আর এক সংস্থার এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘পুজোর সময়ে রেস্তোরাঁগুলিতে এমনিতেই ভিড় থাকে বলে অনেকে অর্ডার করা খাবার নিয়ে তত মাথা ঘামাতে চান না। তাই সন্ধে সাতটার মধ্যে অর্ডার করাই ভাল।’’ এ বার হাওড়ার পরিষেবাতেও তাঁরা জোর দিচ্ছেন। তবে, বেশির ভাগ অ্যাপ-ই রাতে অন্তত সাড়ে ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত পরিষেবা চালু রাখার বিষয়ে আশ্বস্ত করছে। সাধারণত, ৩৫ থেকে ৪৫ মিনিটে খাবার পৌঁছনোর আশ্বাস যারা দেয়, তারাও বলে রাখছে, পুজোয় বাড়তি সময় লাগতে পারে।

আজকের কলকাতায় বছরভর বাড়ি থেকে খাবার অর্ডার করার তাগিদটা যে বেড়েছে, তা বলছিলেন প্রথম সারির এক বিরিয়ানি চেন-এর কর্ণধার ইশতিয়াক আহমেদও। তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের ব্যবসার ৬০ শতাংশই হোম ডেলিভারি থেকে হয়। তবে রেস্তোরাঁয় বাড়তি ভিড়ও সামাল দিতে হবে!’’ বছর ছয়-সাত আগে থেকেই বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছনোর পরিকাঠামো গড়ে তুলেছিল দক্ষিণ কলকাতার চিনে খানার একটি চেন রেস্তোরাঁ। এখন তাঁরা গোটা শহরে ছড়িয়ে গিয়েছেন। তাঁদের কর্ণধার দেবাদিত্য চৌধুরীর কথায়, ‘‘পুজোর কথা ভেবেই আমাদের বাইক-বাহিনীর কলেবর বেড়েছে। আরও অন্তত ৩০ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে।’’

ঠিক এক বছর আগের পুজোয় শিকাগোয় বসে কর্নফিল্ড রোডে মা-বাবাকে চাইনিজ ডিনারে চমকে দিয়েছিলেন পুষ্পিতা দাশগুপ্ত। এ বারও তেমন কিছু ‘সারপ্রাইজ’-এর মতলব ভাঁজছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন