Anuttama Banerjee

Patriotic society: জোর করে নিয়ম চাপিয়ে দেওয়া থেকে মুক্তি চাই, লোককে কী করে বোঝাব? আলোচনায় মনোবিদ অনুত্তমা

‘কী করে বলব? সঙ্গে অনুত্তমা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের এই সপ্তাহের বিষয় ‘মুক্তি চাই!’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০২২ ২০:৩৯
Share:

মুক্তি চাই! লোককে কী করে বলব? ছবি-প্রতীকী

আজ স্বাধীনতা দিবস। স্বাধীনতা মানে তো মুক্তি। কিন্তু আদতে কি মুক্ত হতে পেরেছি আমরা? মুক্ত বোধ করেন কি আপনি? কেউ বেকারত্ব থেকে মুক্তি চাইছেন, কেউ আবার খারাপ চাকরি থেকে। কেউ একাকিত্ব থেকে মুক্তির পথ খুঁজছেন তো কেউ বলছে আমি এই সম্পর্কের জটিলটা থেকে মুক্তি চাই! প্রতিনিয়ত সকলেই কিছু না কিছু থেকে মুক্তি খুঁজছি। তবে পাচ্ছি কি? জীবনের কোন অবস্থার পরিবর্তন হলে আপনারও মনে হত আপনি সত্যিই স্বাধীন?

Advertisement

মুক্তির অন্বষণের সংলাপ নিয়ে সোমবার আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে আলোচনায় বসলেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘কী করে বলব? সঙ্গে অনুত্তমা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের এই সপ্তাহের বিষয় ছিল ‘মুক্তি চাই!’প্রতি পর্বের আগেই অনুত্তমার কাছে পাঠানো যায় প্রশ্ন। এই পর্বেও ই-মেলে তেমনই কিছু প্রশ্ন পেয়েছিলেন মনোবিদ।

বছর ২২-এর এক ছাত্রী লিখেছেন, ‘আমার পরিবার খুবই প্রগতিশীল। তবে এই মুহূর্তে সমাজের মধ্যে যে অন্তর্নিহীত পুরুষতান্ত্রিকতা আছ‌ে, আমি তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে পারছি না। কলেজে পড়াকালীন সমাজের পুরুষতান্ত্রিকতার নির্মম চিত্র বেশি করে আমার সামনে এসেছে। তুই তো সমাজ বদলাতে পারবি না, ফেমিনিজম নিয়ে বাঁচা যায় না— এ রকম হাজার মন্তব্য শুনে শুনে আমি ক্লান্ত। আন্তর্জাতিক ও জাতীয় স্তরের নানা ঘটনা আমায় চিন্তায় ফেলছে। সমাজের এই পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব থেকে আমি মুক্তি চাই!’

Advertisement

আরেক জন লিখেছেন, ‘আমি একজন ইঞ্জিনিয়ার। আমার বয়স ২৮। আধুনিক মানসিকতা নিয়ে বড় হয়েছি। যাঁর সঙ্গে প্রেম তাঁর সঙ্গেও মানসিকতার মিল ছিল। তবে সমস্যা শুরু হল বিয়ের প্রস্তুতি শুরু হওয়ার পর থেকে। এমন কিছু নিয়মকানুন আমার উপর চাপানো হচ্ছে যার মধ্যে পিতৃতান্ত্রিকতার শিকড় লুকিয়ে আছে। নিয়ম মানতে আমার আপত্তি নেই। তবে চাপিয়ে দেওয়া নিয়ে আপত্তি আছে। আমার নিজস্ব মতামতের আর কোনও জায়গা থাকছে না। আমার সঙ্গীও আমার সঙ্গে সহমত কিন্তু ও নিজের পরিবারকে বোঝাতে পারছে না। যত বিয়ের তারিখ এগিয়ে আসছে আমার মন মুক্তির জন্য ছটপট করছে। বিয়ের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা নারী পরিপন্থী নানা নিয়মকানুন থেকে আমি মুক্তি চাই’।

এই প্রসঙ্গে অনুত্তমা বলেছেন,‘‘পুরুষতান্ত্রিকতা কিন্তু পুরুষবিদ্বেষ নয়। পুরুষতান্ত্রিকতা বা পিতৃতান্ত্রিকতা, নারী পুরুষ দু’জনের ক্ষেত্রেই অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। সম্প্রতি এক শিক্ষিকাকে চাকরি হারাতে হল তার পোশাকের কারণে। তাঁর ছাত্র তাকে স্নান পোশাকে দেখায় শাস্তি ভোগ করতে হল শিক্ষিকাকে। আবারও সেই পুরুষতান্ত্রিকতা ছাপ! এ ক্ষেত্রে বলব, আমরা যখন গোটা সমাজের দর্শন বদলাতে পারছি না, তখন নিজেকেই পথ খুঁজে বার করতে হবে। নিজের ইচ্ছা, অনিচ্ছাকে গুরুত্ব দিতে হবে। এতে পরিবারের আর পাঁচজনের কাছে অপ্রিয় হতে পারেন তবে নিজের ইচ্ছাগুলিকে মরতে দিলে চলবে না। সঙ্গীর মাদ্যমে নয়, নিজেই নিজের কথা স্পষ্ট করে বলুন। সঙ্গীর পরিবারকে বুঝিয়ে বলুন, এই নিয়মগুলির থেকে সম্পর্কের দৃঢ়তা যেন মজবুত থাকে সেটা অনেক বেশি জরুরি। নিয়মের কারণে যদি সংঘাত লাগে তা হলে সমস্যা তো পরিবারেই হবে। নিয়ম তো আর সম্পর্কের উপর হতে পারে না। নিজের ভাবনাচিন্তা আরও উন্মুক্ত করুন। কেউ ক্ষুণ্ণ হলে হবেন, তবে নিজেকে ছোট করার অধিকার কারও হাতে তুলে না দেওয়াই শ্রেয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন