ছবি: গেটি ইমেজেস।
ছোটবেলায় প্রায় সকলেই একটু চঞ্চল হয়। কিন্তু কোনও কোনও শিশুর চঞ্চলতা মাত্রা ছাড়ায়। আর তাতেই উদ্বেগ বাড়ে বাবা-মায়ের।
ঠিক কোন পরিস্থিতিতে বাচ্চাদের চঞ্চলতা উদ্বেগের পর্যায়ে পৌঁছয়?
শিশু মনোবিদ হিরণ্ময় সাহার মতে, শিশুদের চাঞ্চল্য অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু সব সময় অস্থির ভাব, কথা শুনতে না চাওয়া, সামান্য কাজও করতে না পারা, অনর্গল কথা বলার মতো প্রবণতাগুলি দীর্ঘ দিন ধরে চললে বিষয়টি ভাবনার। হতে পারে ওই শিশু ‘অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভ ডিসঅর্ডার’ (এডিএইচডি)-এ শিকার।
১। শিশুদের মধ্যে মূলত তিন ধরনের এডিএইচডি দেখা যায়। প্রতিটি ক্ষেত্রেই মূল সমস্যা হল মনোযোগের অভাব এবং অসম্ভব অস্থিরতা।
২। তিন থেকে ১২ বছর বয়সীদের মধ্যে এডিএইচডি-র প্রবণতা বেশি। সব কাজে অস্থিরতার লক্ষণ ছ’মাসেরও বেশি দেখা গেলে মনোবিদের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
৩। অনেক ক্ষেত্রে এমনও হতে পারে যে শিশু খুব একটা অস্থির নয় কিন্তু মনঃসংযোগে ঘাটতি রয়েছে। সেই সমস্যাও এডিএইচডি হতে পারে।
৪। নজর রাখতে হবে ছোটখাট বিষয়েও সন্তানের মনোযোগে সমস্যা হচ্ছে কিনা। পড়াশোনায় মন বসছে কি না।
৫। জীবনে কোনও বিপর্যয় যেমন, বাবা-মায়ের ডিভোর্স বা প্রিয়জনের মৃত্যুতে শিশুমন আহত। তার জেরে এডিএইচডি দেখা দিতে পারে।
৬। ডিপ্রেশন, শারীরিক অসুস্থতা থেকেও এই রোগ হতে পারে।
৭। বিশেষ পরীক্ষার মাধ্যমে এডিএইচডি নির্ধারণ করা হয়। এই রোগ নিরাময়ে নির্দিষ্ট ওষুধ-থেরাপি রয়েছে। আর এমন নয় যে আপনার শিশুকে এক বার ওষুধ খেলে সারা জীবন খেতে হবে।
৮। আপনার সন্তান চঞ্চল হলে ওকে মারধর করবেন না। ওর পছন্দের জিনিস দিয়ে কোনও কাজে মনোনিবেশ করতে শেখান। এতে মনোসংযোগের ক্ষমতা বাড়ে।
৯। শিশুর চারপাশের পরিবেশ সুস্থ রাখা জরুরি। খোলা হাওয়ায় বেশ খানিকটা সময় কাটালে ভাল। দিনে অন্তত আধ ঘণ্টা সন্তানকে খোলা মাঠে খেলতে দিন।
১০। নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমনোর অভ্যাস জরুরি। সন্তানের ঘুমনোর এক ঘণ্টা আগে টিভি, কম্পিউটার, মোবাইল-সহ বাড়ির বিভিন্ন বৈদ্যুতিন যন্ত্র বন্ধ করে দিন।
১১। সন্তানের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখুন। প্রোটিন, কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট এবং বিভিন্ন খনিজের মাত্রায় যেন ঘাটতি না হয়।
১২। সন্তানকে সামাজিক পরিধিতে বেশি করে মেলামেশা করতে শেখান।চাই বাবা-মা, বন্ধুদের সাহচর্য। প্রয়োজন।