কোন চায়ের এত গুণ? ছবি : এআই।
পুজো এসেই পড়ল প্রায়। আর বাঙালির পুজো মানে যতটা পেটপুজো, ততটাই সাজগোজও। ভাল শাড়ি, ভাল পাঞ্জাবি, ভাল পোশাক। কিন্তু সেই সব পরে দেখতে ভাল লাগার জন্য চেহারাও ভাল রাখতে হবে। পুজোর মাস কয়েক আগে তাই নিজের যত্ন নেওয়ার কথা মাথায় আসে।
কেউ ভাবেন ওজন কমাতে হবে। কেউ বা ত্বকের কথা ভাবেন। মুখের নিষ্প্রাণ ভাব সরিয়ে ফেরাতে চান ঔজ্জ্বল্য। হাতে আর মাত্র দেড়টি মাস। সময় নষ্ট করা যাবে না বিন্দুমাত্র। ফলে পার্লারের দ্বারস্থ হওয়া। কিংবা জিমের সদস্যপদ গ্রহণ। সে সব পদ্ধতি মেনে কাজ হবে না, এমন নয়। তবে একই কাজ করতে পারে আপনার রান্নাঘরে থাকা একটি চেনা মশলাও। যা পেতে হাজার হাজার টাকা ব্যয় করতে হবে না। ওই মশলা দিয়ে তৈরি এক বিশেষ ‘চা’য়েই বাজিমাত করতে পারবেন। তা-ও আবার পুজোর আগেই।
ছবি : এআই।
বিশেষ ওই চায়ের সন্ধান দিয়েছেন সুমন পাহুজা নামের এক পুষ্টিবিদ তথা সুস্বাস্থ্য এবং ভাল থাকার প্রশিক্ষক। গুরুগ্রামের এই পুষ্টিবিদের নিজের স্থূলত্বের সমস্যা ছিল এক সময়। তিনি সেই সমস্যার সঙ্গে লড়াই করে জয়ী হয়েছেন। আর এখন বাকিদের সাহায্য করার কাজে ব্রতী হয়েছেন। বলিউডের তারকারাও সমাজমাধ্যমে সুমনের অনুগামী তালিকায় রয়েছেন। সেই সুমন জানিয়েছেন, ওজন ঝরানো থেকে শুরু করে ত্বকের জেল্লা ফেরানো— সবেতেই সাহায্য করতে পারে জয়িত্রী।
কেন জয়িত্রী উপকারী?
১। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট : পুষ্টিবিদ বলছেন জয়িত্রীর আসল গুণ এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা শরীরকে ফ্রি র্যাডিক্যালসের হাত থেকে বাঁচায়। ফলে ত্বক থাকে ঝকঝকে। দূরে থাকে বহু রোগও।
২। প্রদাহনাশক উপাদান : প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে জয়িত্রী। ফলে ত্বকে যে ব্রণ, ফুস্কুড়ি, লালচে ভাব এবং তা থেকে কালচে ছোপ তৈরি হয়, তা প্রতিরোধ করতে পারে জয়িত্রী।
ছবি : এআই।
৩। রক্ত সঞ্চালনে সহায়ক : জয়িত্রী রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে। ফলে ত্বকের কোষে কোষে পুষ্টি পৌঁছোয় দ্রুত। এতে ত্বকে জমা দূষিত পদার্থও দূর হয়।
৪। অ্যান্টি ব্যাক্টিরিয়াল উপাদান: পুষ্টিবিদ বলছেন, আয়ুর্বেদে জয়িত্রীকে বলা হয় প্রাকৃতিক ক্লিনজ়ার। কারণ এতে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাক্টিরিয়াল উপাদান, যা শরীরকে নানা রকম দূষণ থেকে মুক্ত রাখে। বর্ষাকালে ব্যাক্টিরিয়া এবং অন্যান্য জীবাণু সংক্রমণ থেকে নানা রকমের সমস্যা দেখা দেয় ত্বকে, তা আটকানো সম্ভব জয়িত্রীর সাহায্যে।
৫। ত্বকের রং উজ্জ্বল করার উপাদান: সায়েন্স ডিরেক্ট নামের জার্নালে প্রকাশিত দুই ভারতীয় গবেষক জে রেমা এবং বি কৃষ্ণমূর্তির গবেষণাপত্রে বলা হচ্ছে জয়িত্রীতে থাকা এসেন্সিয়াল অয়েলের সাহায্যে ত্বকের রং কয়েক পরত উজ্জ্বল হতে পারে। এমনকি তা ত্বকের বিভিন্ন রোগ সারাতেও কার্যকরী বলে জানিয়েছেন গবেষকদ্বয়।
৬। ওজন কমায়: পুষ্টিবিদ বলছেন, যেহেতু জয়িত্রীতে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রয়েছে, তা বিপাকের হার ভাল রাখতে সাহায্য করে। আর বিপাকের হার ভাল থাকলে তা ওজন কমাতে সহায়ক হয়।
ছবি : সংগৃহীত।
কী ভাবে খাবেন?
পুষ্টিবিদ জানাচ্ছেন, জয়িত্রী মিক্সিতে গুঁড়িয়ে সেই গুঁড়ো ১/৪ চা চামচ আধ কাপ (১২০ মিলি) উষ্ণ জলে গুলে প্রতি দিন রাতে ঘুমোনোর আগে খেলে তা ত্বকের হারানো ঔজ্জ্বল্য ফেরাতে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করবে। এমনকি, দিন ২০-র মধ্যেই এর ফল চোখে পড়বে বলেও জানাচ্ছেন তিনি।