বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
সাজগোজের বিষয়ে অনুরাগী নন। জামাকাপড়, গয়নাগাটির বহরও নেই। পেশার কারণে যতটুকু না হলেই হয়, ততটুকু সাজেই দেখা যায় বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়কে। আর তাই ত্বকচর্চা, কেশচর্চা, রূপচর্চার প্রতিও বিশেষ আগ্রহ নেই। নতুন ট্রেন্ডে বিশ্বাসী বিবৃতি। ইংরেজিতে একটি বাক্যটি মাঝেমধ্যেই সমাজমাধ্যমে চোখে পড়ে, ‘লেস ইজ় মোর’, অর্থাৎ অল্পে প্রাচুর্য। সেই ধারায় পা মিলিয়েছেন নায়িকা।
জন্মসূত্রে পাওয়া রূপের অবহেলা করতে চান না বিবৃতি। তার উপর নতুন ছবি ‘দেবী চৌধুরানী’র প্রচারের কারণে নানা জায়গায় ঘুরে বেড়িয়ে রোদে পোড়ার ছাপ ত্বকে। তাই অল্পবিস্তর রূপচর্চা শুরু করেছেন অভিনেত্রী। চর্মরোগ চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে কয়েকটি উপাদান প্রয়োগ করা শুরু করেছেন তিনি— গ্লাইকলিক অ্যাসিড, ট্রেটিনয়েন এবং কোজিক অ্যাসিড। নায়াসিনামাইড এবং হায়ালুরনিক অ্যাসিড আগে থেকেই ব্যবহার করতেন বিবৃতি।
ত্বকের মৃত কোষ সরানোর জন্য গ্লাইকলিক অ্যাসিডে উপকার মিলছে বিবৃতির। কখনও কখনও গ্লাইকলিক অ্যাসিড তিনি চুলেও ব্যবহার করেন। বাহুমূল এবং কনুইয়ের মতো জায়গাতেও প্রয়োগ করার পরামর্শ দিচ্ছেন অভিনেত্রী। তবে এর পরে সানস্ক্রিন আর ময়েশ্চারাইজ়ার মাখতে হবে। ট্রেটিনয়েনের প্রয়োগে ত্বকে ব্রণের সমস্যার উপশম লক্ষ করতে পারছেন বিবৃতি। অন্য দিকে কোজিক অ্যাসিড মেখে ত্বকের কালো ছোপ ও দাগ দূর করতে সুবিধা হচ্ছে তাঁর। তা ছাড়া হায়ালুরনিক অ্যাসিড এবং নায়াসিনামাইডের প্রয়োগের ফলে ত্বকের জলশূন্যতার সমস্যা কমে।
এই ৫টি প্রসাধনীর বাইরে রোজের রুটিন প্রায় কিছুই নেই বললে চলে। তবে সময় পেলে মাঝেমধ্যে নিজের স্নানের জলে গ্লিসারিন, সুদল আর গোলাপজল মিশিয়ে নেন। এর ফলে ত্বক ময়েশ্চারাইজ়ড থাকে সারা দিন। তা ছাড়া কফিগুঁড়ো আর চিনি দিয়ে সারা গা স্ক্রাব করে নিতে পছন্দ করেন বিবৃতি।
স্বযত্নের রুটিনে মা-দিদিমা-ঠাকুরমার ঘরোয়া টোটকায় ভরসা রয়েছে বিবৃতির। কিন্তু ব্যস্ত জীবনে নিয়মিত তা পালন করে চলা প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে। ফাঁকা থাকলে কখনও সখনও টকদইয়ে অল্প দুধের সর, বেসন, কফির গুঁড়ো, হলুদ মিশিয়ে ত্বকে মাখেন। কিন্তু বেসন থাকে বলে ত্বক চট করে শুষ্ক হয়ে যায়। তাই খানিক ক্ষণ মেখে রাখার পর জল দিয়ে ধুয়ে নিয়েই ময়েশ্চারাইজ়ার ব্যবহার করতে হয় বিবৃতিকে। তবে ঘরোয়া টোটকার মধ্যে কেবল একটি নিয়ম তিনি প্রতি দিন মেনে চলেন। তা হল, পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান। নায়িকার কথায়, ‘‘এই মুহূর্তে যেমন আবহাওয়ার খেলা চলছে, কখনও বৃষ্টি, কখনও চড়া রোদ, তাতে অনেকেরই ব্রণের সমস্যা বাড়ে। আর এই সময়ে আমাদের বহু জায়গায় যেতে হয়, তা সে ছবির প্রচার হোক বা পুজো পরিক্রমা। ত্বক ভাল রাখতে তাই এই সময়ে প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়া দরকার। আর সেটা আমি একেবারে বাধ্য মেয়ের মতো করি। তা ছাড়া এমনিতেও সকালে উঠে অনেকখানি জল খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে আমার। শরীরের পাশাপাশি ত্বকও হাইড্রেটেড থাকে এতে।’’
পুজো শুরুর আগে থেকেই নিজের ত্বকচর্চার রুটিনে নয়া ধাপ সংযোজন করেছেন, এবং নিয়ম করে তা মেনে চলার চেষ্টা করছেন বিবৃতি। তাতে রোজের মেকআপ, ধুলোবালি ত্বকের বড়সড় ক্ষতি করতে সক্ষম হচ্ছে না। তাই অভিনেত্রীর সিদ্ধান্ত, পুজো শেষ হওয়ার পরও তিনি নিয়মভঙ্গ করবেন না।