হাতের জন্য ময়েশ্চারাইজ়ার যথেষ্ট? ছবি:ফ্রিপিক।
রূপচর্চার জগৎ ধীরে ধীরে বদলাচ্ছে। শুধু মুখ নয়, হাত-পায়ের যত্নও যে সমান ভাবে জরুরি, ভাবতে এবং বুঝতে শিখেছেন অনেকেই। আর ঠিক সে কারণেই বদল এসেছে প্রসাধনীর জগতে। ময়েশ্চাইরাইজ়ার, ডে ক্রিম, নাইট ক্রিম, বডি লোশনের পাশাপাশি পা এবং হাতের জন্যও এখন পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন সংস্থার রকমারি ক্রিম।
শুধু শীত নয়, অনেকেরই হাতের জন্য ক্রিমের প্রয়োজন হয় বছরভরই। কোভিড -১৯ এর পর থেকেই হাত ধোয়া নিয়ে সচেতনতা তৈরি হয়েছে। বার বার সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ফলে ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। দরকার পড়ে ক্রিমের। আবার কাউকে পেশাগত ক্ষেত্রে নানা রকম রাসায়নিক নিয়ে কাজ করতে হয়। বার বার হাত ধোয়ার ফলে তাঁদের হাতও রুক্ষ হয়ে পড়ে। বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকলেও এই সমস্যা হয়। দীর্ঘ সময় এসি-ঘরে বা থাকার দরুন দ্রুত হাত শুষ্ক হয়ে যায়। দিনে দিনে বাজারে হাতের জন্য তৈরি ক্রিমের জনপ্রিয়তা ক্রমশ বাড়ছে। তা থেকেই প্রশ্ন উঠতে পারে, হাতের জন্য সত্যি কি বিশেষ ক্রিমের দরকার, না কি ময়েশ্চারাইজ়ারই এ জন্য যথেষ্ট?
তবে তার আগে জানা প্রয়োজন, ময়েশ্চারাইজ়ার এবং হাতের জন্য তৈরি ক্রিমের তফাত কোথায়? ময়েশ্চারাইজ়ার হোক বা হাতের ক্রিম, প্রাথমিক লক্ষ্য একই। শুষ্ক ভাব কমিয়ে ত্বককে আর্দ্রতা জোগানো। ত্বকের চিকিৎসক গরিমা ত্যাগী বলছেন, দু’টি কিন্তু এক নয়। তাঁর কথায়, ‘‘যে কোনও ভাল ক্রিমই এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে, কারও যদি বার বার হাত সাবান দিয়ে ধোয়ার অভ্যাস থাকে, হাত বেশি শুষ্ক হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে হাতের জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি ক্রিম বেছে নেওয়া ভাল। কারণ এর ফর্মুলা পৃথক হয়।’’
দু’টিতে তফাত কোথায় ?
হাতের ক্রিম তৈরি হয়, হাতের চামড়ার কথা ভেবে। মুখের চেয়ে হাতের ত্বক তুলনামূলক পুরু এবং খসখসে। হাতের জন্য তৈরি ক্রিম এমন ত্বকের উপযোগী করেই তৈরি করা হয়। এই ধরনের ক্রিমে অনেক সময়েই বেশি পরিমাণে শিয়া বাটার, গ্লিসারিন, সেরামাইডস, পেট্রোলিয়ামের মতো উপাদান ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের ক্রিমের উদ্দেশ্যই হয় হাতের ত্বককে দীর্ঘ সময় ধরে আর্দ্র রাখা। সাধারণ বডি লোশন বা ময়েশ্চারাইজ়ারের চেয়ে এই ক্রিম অনেকটাই আলাদা।
হাতের ক্রিম কি সত্যি জরুরি?
দিনে দিনে যে আলাদা করে হাতের ক্রিম ব্যবহারের চল বাড়ছে, তা কি সত্যি প্রয়োজনীয়? কখন তা মাখতে হবে? ত্বকের চিকিৎসকের মত, বার বার হাত ধোয়া বা রাসায়নিক নিয়ে ঘাঁটাঘাটির ফলে ত্বক বিশেষ ভাবে শুষ্ক হয়ে পড়লে তখনই আলাদা করে হাতের ক্রিমের দরকার। যদি তেমন কোনও কারণ না থাকে, তা হলে দৈনন্দিন ব্যবহারের যে কোনও ভাল ক্রিমই যথেষ্ট।
তা হলে কি ময়েশ্চারাইজ়ারের কাজ হতে পারে?
ময়েশ্চারাইজ়ারেও সেরামাইডস, পেট্রোলিয়াম, শিয়া বাটারের মতো উপাদান থাকে, যা ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে বিশেষ ভাবে কার্যকর। কারও হাত যদি অতিরিক্ত খসখসে, শুষ্ক না হয়, সে ক্ষেত্রে যে কোনও ভাল ময়েশ্চারাইজ়ারই হাতের যত্ন নিতে পারে বলছেন চিকিৎসক।
ত্বকের আর এক চিকিৎসক রাবালি ইয়ালমান চিলির পরামর্শ, মুখে ক্রিম বা ময়েশ্চারাইজ়ার, সেরামাইড যুক্ত সিরাম মাখার পর যেটা অতিরিক্ত হয় সেটাই যদি হাতের তালু, আঙুলে ভাল করে মেখে নেওয়া যায় তা হলেই হাত খসখসে হবে না। হাত নরম থাকবে। একই সঙ্গে হাত নরম রাখতে মৃদু সাবান ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।